পর্যায় সারণিতে নতুন মৌল আবিষ্কৃত
পর্যায় সারণিতে যুক্ত হলো নতুন চারটি মৌল। আর এই চারটি মৌলের মাধ্যমে সারণির অসমাপ্ত থাকা সপ্তম সারি পূর্ণ হলো। আর এর ফলে পৃথিবীর সব রসয়ান বইয়ে পর্যায় সারণিতে পরিবর্তন আনতে হবে। ব্রিটিশ দৈনিক দ্য গার্ডিয়ান জানিয়েছে এই খবর।
জাপান, রাশিয়া ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিজ্ঞানীদের গবেষণার ফসল নতুন চার মৌল। সর্বশেষ ২০১১ সালে পর্যায় সারণিতে মৌল যুক্ত করা হয়। সেই সময় পর্যায় সারণির ১১৪ ও ১১৬ অবস্থানে যুক্ত হয় দুইটি মৌল।
গত বছরের ৩০ ডিসেম্বর যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন অব পিউর অ্যান্ড অ্যাপ্লাইড কেমিস্ট্রি (আইইউপিএসি) যাচাই-বাছাইয়ের মাধ্যমে নতুন চারটি মৌলকে পর্যায় সারণিতে অন্তর্ভুক্ত করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে।
আইইউপিএসির (ইউপ্যাক) পক্ষ থেকে জানানো হয় রুশ ও মার্কিন বিজ্ঞানীদের মিলিত প্রচেষ্টায় ১১৫, ১১৭ এবং ১১৮ পারমাণবিক সংখ্যা বিশিষ্ট মৌল যথেষ্ট পরিমাণে উৎপন্ন করা সম্ভব হয়েছে যার মাধ্যমে মৌলগুলোর অস্তিত্ব প্রমাণ করা সম্ভব। ক্যালিফোর্নিয়ার লরেন্স লিভারমোর ন্যাশনাল ল্যাবরেটরি ও ডাবনার ইনস্টিটিউট অব নিউক্লিয়ার রিসার্চ সেন্টারে এসব মৌল নিয়ে গবেষণা করেন বিজ্ঞানীরা।
অন্যদিকে ১১৩ পারমাণবিক সংখ্যার মৌল আবিষ্কারের কৃতিত্বও যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার গবেষকদের। জাপানের রিকেন ইনস্টিটিউটে সর্বপ্রথম আবিষ্কৃত হয় এই মৌল।
কশুকি মোরিতা এই গবেষণার প্রধান হিসেবে কাজ করেছেন। তাঁদের লক্ষ্যের কথা জানাতে গিয়ে জানিয়েছেন এখন তাঁদের চোখ ১১৯ কিংবা তারচেয়ে বেশি পারমাণবিক সংখ্যার মৌলের দিকে।
মৌল আবিষ্কৃত হলেও এখনো তাদের জন্য নির্দিষ্ট কোনো নাম বরাদ্দ করা হয়নি। এশিয়া মহাদেশ থেকে সর্বপ্রথম আবিষ্কৃত মৌল হিসেবে পর্যায় সারণিতে স্থান পাচ্ছে ১১৩ নম্বর মৌলটি। মৌলের নাম নির্বাচন করা হয়ে থাকে কোনো পৌরাণিক বিষয়, স্থান, দেশ কিংবা বিজ্ঞানীর নাম থেকে।
নতুন মৌল আবিষ্কার নিয়ে বেশ উচ্ছ্বসিত বিজ্ঞানীরা। রিকেন ইনস্টিটিউটের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট এবং রসায়নে নোবেল জয়ী রায়োজি নয়োরির ভাষায়, ‘বিজ্ঞানীদের কাছে এই অর্জন অলিম্পিকে সোনার মেডেল জয়ের চাইতেও বেশি কিছু!’
অন্যদিকে আইইউপিএসিয়ের অজৈব রসায়ন বিভাগের প্রেসিডেন্ট অধ্যাপক জ্যান রিজেক বলেন, ‘বিজ্ঞানী মহল অধীর আগ্রহে পর্যায় সারণির সপ্তম সারি পূর্ণ হওয়া দেখার অপেক্ষায় ছিল।’
নতুন আবিষ্কৃত চারটি মৌলই মানবসৃষ্ট। তেজস্ক্রিয় এই ভারি মৌলগুলো সেকেন্ডের ভগ্নাংশ সময়ের জন্য সুস্থিত অবস্থায় পাওয়া যায়। এরপরই অন্য মৌলে রূপান্তিত হয়ে যায়।

আবরার আদিব