ডেনমার্কে প্রতিরক্ষায় খরচ বাড়াতে ছুটি বাতিল
ডেনমার্কে ‘গ্রেট প্রেয়ার ডে’ এর ছুটি বাতিল করা হয়েছে। প্রতিরক্ষা খরচ বাড়াতে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে দেশটির সরকার। এতে প্রতিবাদ জানিয়েছে ক্ষুব্ধ সাধারণ মানুষ।
২০২৪ সাল থেকে দেশটিতে ‘গ্রেট প্রেয়ার ডে’তে ছুটি না থাকায় সরকারি অফিস, প্রতিষ্ঠান খোলা থাকবে। বাজার-হাটও খোলা থাকবে। রীতিমতো পার্লামেন্টে আইন পাস করে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।
সরকার জানায়, ন্যাটো প্রতিরক্ষাখাতে খরচ করার যে লক্ষ্যমাত্রা বেঁধে দিয়েছে, তারা তা পূরণ করতে চায়। ছুটিরদিন মানে সব বন্ধ। অর্থনীতিও অনেক কম সচল থাকে। কাজের দিন হলে অর্থনীতি সচল থাকবে। সরকারের আয় বাড়বে।
সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়, কর্মীরা ওই দিন সাত ঘণ্টা ৪০ মিনিট কাজ করবেন, আয়ের ওপর কর দেবেন। এতে সরকারের ৪০ কোটিরও বেশি ইউরো আয় হবে।
ন্যাটোর লক্ষ্যমাত্রা হলো—২০৩৩ সালের মধ্যে জিডিপির দুই শতাংশ প্রতিরক্ষায় খরচ করতে হবে। ডেনমার্ক ২০৩০ সালের মধ্যে সেই লক্ষ্যে পৌঁছাতে চায়। ন্যাটোর বক্তব্য, ইউক্রেন যুদ্ধের পর প্রতিরক্ষাখাতে খরচ বাড়ানো জরুরি।
ডেনমার্কের প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রতিরক্ষা, স্বাস্থ্য, গ্রিন এনার্জিতে যাওয়ার ক্ষেত্রে সরকারের খরচ অনেকটাই বেড়েছে। এই অবস্থায় একদিন বেশি কাজ করাটা খুব অসুবিধাজনক বলে তিনি মনে করছেন না।
কিন্তু ইউরোপীয় ইউনিয়নের নেতারা, চার্চ ও দেশটির বিরোধী দলগুলো এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করছেন। অর্থনীতিবিদদের একাংশ মনে করছেন, সরকারের যুক্তি মানা যাচ্ছে না। গত মাসে প্রায় ৫০ হাজার মানুষ পার্লামেন্টের সামনে বিক্ষোভ করেছেন।
‘গ্রেট প্রেয়ার ডে’ হলো খ্রিষ্টানদের একটা অনুষ্ঠান। সপ্তদশ শতক থেকে ডেনমার্কে এই উৎসব পালন করা হয়।
ইস্টারের পর চতুর্থ শুক্রবার এই গ্রেট প্রেয়ার ডে’র ছুটি দেওয়া হয়। আদতে খ্রিষ্টানদের ছোটখাটো বেশ কিছু ছুটির দিন ও উৎসবকে একত্রিত করে এই ছুটি ঘোষণা করা হয়েছিল।
ডেনমার্কের মানুষ আগের দিন বিশেষ রুটি বেকারিগুলো থেকে কিনে রাখেন এবং গ্রেট প্রয়ার ডে-তে খান। সেদিন সব দোকান বন্ধ থাকে।
ডেনমার্কে এতদিন ১০টি জাতীয় ছুটির দিন ছিল। জার্মানিতে কিছু রাজ্যে ৯ দিন এবং কিছু রাজ্যে ১৩ দিন পর্যন্ত সরকারি ছুটির দিন থাকে।