৯৬০তম প্রচেষ্টায় সফল, ড্রাইভিং লাইসেন্স পেলেন নারী
‘একবার না পারিলে দেখ শত বার।’ কবি কালীপ্রসন্ন ঘোষ তাঁর ‘পারিব না’ শিরোনামের কবিতায় বলেছিলেন এ কথা। সে উপদেশই যেন মেনে চলেছিলেন দক্ষিণ কোরিয়ার এক নারী। যদিও এ ক্ষেত্রে তিনি শতবার নয়, চেষ্টা চালিয়েছেন ৯৬০ বার। তারপর সফল হয়েছেন, পেয়েছেন ড্রাইভিং লাইসেন্স। আজ মঙ্গলবার (২৮ মার্চ) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় গণমাধ্যম এনডিটিভি।
দক্ষিণ কোরিয়ার ওই নারীর ঘটনাটি ১৮ বছরের পুরনো হলেও, সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম রেডিটে ভাইরাল হয়েছে। ওই কোরিয় নারীর প্রচেষ্টাকে সাধুবাদ জানাচ্ছেন নেটিজেনরা। তারা এটিকে দৃঢ়তার দৃষ্টান্ত বলে আখ্যা দিচ্ছেন।
মার্কিন গণমাধ্যম নিউইয়র্ক পোস্টের তথ্য মতে, ২০১০ সালে দক্ষিণ কোরিয়ার নারী চা সা-সুন ড্রাইভিং লাইসেন্স পান। ৯৬০তম প্রচেষ্টায় তিনি এই লাইসেন্স পান। বিষয়টি নিয়ে ওই সময় অনেক আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের শিরোনামে এসেছিলেন চা সা-সুন।
দক্ষিণ কোরিয়ার নিয়ম অনুযায়ী, ড্রাইভিং লাইসেন্সের জন্য একটি লিখিত পরীক্ষা দিতে হয়। ২০০৫ সালের এপ্রিলে প্রথমবার ওই কোরিয় নারী লিখিত পরীক্ষায় অংশ নেন। তবে, এতে ব্যর্থ হন তিনি। এরপর থেকে টানা তিন বছর অর্থাৎ সপ্তাহ প্রতি পাঁচ কার্যদিবসে লিখিত পরীক্ষায় অংশ নেন তিনি। এভাবে ৮৬০ বার লিখিত পরীক্ষায় অংশ নিয়ে পাস করেন চা সা-সুন।
লিখিত পরীক্ষায় পাসের পরই প্র্যাকটিকাল পরীক্ষায় অংশ নেন ওই কোরিয় নারী। এবারেরটি ছিল আগের থেকেও কঠিন। অবশেষে দুটো পরীক্ষা মিলিয়ে ২০১০ সালে ৯৬০তম বারে সফল হন ওই সময় ৬৯ বছর বয়সী চা সা-সুন।
এই ড্রাইভিং লাইসেন্সের পরীক্ষা বাবদ ও লাইসেন্স হাতে পাওয়া পর্যন্ত চা সা-সুনকে সরকারি ফি দিতে হয়েছে ১১ হাজা পাউন্ড।
চা সা-সুনের এই দৃঢ় প্রচেষ্টা তাঁকে দক্ষিণ কোরিয়ায় তারকা খ্যাতি এনে দেয়। এমনকি, গাড়ি নির্মাতা প্রতিষ্ঠান হুন্দাই ওই নারীকে একটি গাড়ি উপহার দেয়।
এদিকে, রেডিটে চা সা-সুনের বিষয়টি ভাইরাল হলে এ নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখাচ্ছে নেটিজেনরা। বিতর্কও হচ্ছে। একজন নেটিজেন বলছেন, ‘৯৫৯ বার ব্যর্থ, ৯৬০-এ পাস। গল্পটি আমাকে কষ্ট দিচ্ছে। কেউ কি তাকে পড়ালেখায় সাহায্য করেনি?’ আরেক নেটিজেন বলেন, ‘যাই হোক না কেন, ওই নারীর দৃঢ় প্রচেষ্টাকে আমি সমর্থন জানায়।’