কাবুলে পৃথক বোমা হামলায় নিহত ৫১
আফগানিস্তানের রাজধানীতে শুক্রবার পৃথক বোমা বিস্ফোরণে কমপক্ষে ৫১ জন নিহত হয়েছে এবং আরো কয়েকশ’ লোক আহত হয়েছে। তালেবান নেতা মোল্লা ওমরের মৃত্যুর খবর ঘোষণার পর এটি ছিল কাবুলে প্রথমবারের মতো বড় ধরনের জঙ্গি হামলা।
গত ডিসেম্বরে আফগানিস্তানে ন্যাটোর সন্ত্রাসবিরোধী অভিযান শেষ হওয়ার পর এই প্রথম কাবুলে বড় ধরনের সিরিজ বোমা হামলা ঘটল।
শুক্রবার মধ্যরাতের পরপরই কাবুলের মধ্যাঞ্চলে একটি শক্তিশালী ট্রাকবোমার বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। এতে ১৬ জন নিহত ও ২৪০ জন আহত হয়। এর ২৪ ঘণ্টার কম সময়ের মধ্যে কাবুল পুলিশ একাডেমির প্রবশেমুখে পুলিশের পোশাক পরা এক আত্মঘাতী বোমা হামলাকারী বিস্ফোরণ ঘটায়। এতে কমপক্ষে ২৬ আফগান ক্যাডেট নিহত হয়।
এর পর শুক্রবার দুপুরে বিমানবন্দরের কাছে ন্যাটো বাহিনীর একটি ঘাঁটিতে হামলা হয়। এ সময় বিস্ফোরণ ও গোলাগুলির খবর পাওয়া যায়। এতে নয়জন নিহত হয়, যার মধ্যে দুই জঙ্গি ও এক মার্কিন সৈনিকও আছে বলে জানিয়েছে রয়টার্স।
ধারণা করা হচ্ছে, সবকটি হামলা চালিয়েছে তালেবান, যদিও শুধু পুলিশ একাডেমির আত্মঘাতী হামলার দায় স্বীকার করেছে তালেবান।
বিস্ফোরণের পরপরই কাবুলের মধ্যাঞ্চলের আকাশে সামরিক বিমান চক্কর দিতে দেখা গেছে।
গত সপ্তাহে মোল্লা আখতার মনসুরকে নতুন তালেবানপ্রধান হিসেবে ঘোষণা করার পর শুক্রবার প্রথমবারের মতো বড় ধরনের এ হামলা হলো।
সহিংসতা বৃদ্ধির মাধ্যমে মোল্লা মনসুর তালেবান ক্যাডারদের মধ্যে তাঁর ভাবমূর্তি জোরদার এবং নেতৃত্ব নিয়ে অভ্যন্তরীণ বিভাজন থেকে অন্যদিকে দৃষ্টি ফেরানোর চেষ্টা করছেন বলে বিশেষজ্ঞরা ধারণা করছেন।
নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞ আবদুল হাদি খালেদ বলেন, তালেবানের সক্ষমতা বোঝাতে নতুন এ হামলা একটা কৌশল।
এদিকে আফগানিস্তানের প্রেসিডেন্ট আশরাফ ঘানি বলছেন, তালেবানের ভেতরে তাদের নেতৃত্ব নিয়ে যে দ্বন্দ্ব চলছে, সেদিক থেকে নজর সরানোর জন্যই একের পর এক বোমা হামলা চালাচ্ছে তালেবান জঙ্গিরা।
অন্যদিকে, আফগানিস্তানজুড়ে সেনাবাহিনীর অভিযানে অন্তত ১১৫ গেরিলা নিহত হয়েছে বলে ঘোষণা করেছেন সামরিক মুখপাত্র। টুইটারে পোস্ট করা এক বিবৃতিতে আফগান প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র জেনারেল জহির আজিমি জানান, গত ৪৮ ঘণ্টায় ১১৫ সন্ত্রাসী নিহত, ৪১ জন আহত ও পাঁচজনকে আটক করা হয়েছে। এ ছাড়া এসব অভিযানে প্রচুর অস্ত্র ও গোলাবারুদ উদ্ধার করা হয়। সংঘর্ষে সেনাবাহিনীর ১২ সদস্য নিহত হয়েছে বলেও জানানো হয়েছে।