ভারতে গো-হত্যা নিয়ে বিতর্ক চলার মধ্যেই সেখান থেকে মাংস আমদানি নিষিদ্ধ করেছে রাশিয়া। কিছুদিন আগে ভারত থেকে আমদানি করা মাংসে পা ও মুখের রোগের ভাইরাস শনাক্ত হওয়ায় এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাশিয়া।

ভারতের সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস জানিয়েছে, উত্তরপ্রদেশ ও মহারাষ্ট্রে মাংস প্রক্রিয়াজাতকরণ কারখানা পর্যবেক্ষণ করে এ বছরের শুরুতে ভারত থেকে মহিষের মাংস আমদানি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল রাশিয়া। রপ্তানি শুরুর কয়েক মাসের মাথায় নিষেধাজ্ঞা দিল রাশিয়া।

রাশিয়া মাংস না নেওয়ার সিদ্ধান্তের ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হবে উত্তরপ্রদেশের আলীগড়, বরাবাঁকি ও রামপুর এবং মহারাষ্ট্রের আওরঙ্গবাদ মাংস প্রক্রিয়াজাতকরণ কারখানা। রাশিয়ার পরিদর্শকরা একটি চালানের মাংস পরীক্ষা করতে গিয়ে তাতে ভাইরাস পান। এর পর প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই ভারত থেকে মাংস আমদানি বন্ধের ঘোষণা দেওয়া হয়।

এ ধরনের ভুল আর যেন না হয়, সে বিষয়েও প্রক্রিয়াজাতকারকদের সাবধান করে দেওয়া হয়েছে ভারত সরকারের পক্ষ থেকে।

বিভিন্ন দেশে মাংস সরবরাহের জন্য ভারতের সরকারের পক্ষ থেকে কিছু মান নিয়ন্ত্রণ করে দেওয়া হয়েছে। কসাইখানা ও প্রক্রিয়াজাতকরণ কারখানাগুলোকে এই মান মেনে চলতে হয়। নিয়ম অনুযায়ী, কোনো দেশে মাংস রপ্তানির আগে সেই চালানকে অবশ্যই বাধ্যতামূলকভাবে বিভিন্ন জীবাণু পরীক্ষা করিয়ে নিতে হয়। সে সঙ্গে সরকারের নিযুক্ত পশুচিকিৎসকরাও এই মাংস পরীক্ষা করে দেখে থাকেন।

বিশ্বের সবচেয়ে বড় গো-মাংস রপ্তানিকারক দেশ ভারত। অবশ্য যা রপ্তানি করা হয় তা হলো মহিষের মাংস। বৈদেশিক বাণিজ্যনীতি অনুযায়ী ভারত থেকে গরু, বলদ ও বাছুরের মাংস রপ্তানি করা নিষেধ। ২০১৪-১৫ অর্থবছরে ভারত থেকে ২৯ হাজার ২৮২ কোটি রুপির মহিষের মাংস রপ্তানি করা হয়েছে।

তবে সম্প্রতি ভারতের এগ্রিকালচারাল অ্যান্ড প্রসেসড ফুড প্রোডাক্টস এক্সপোর্ট ডেভেলপমেন্ট অথরিটির (এপিইডিএ) একটি পরিসংখ্যান বলছে, এ বছরের এপ্রিল থেকে আগস্ট মাসের মধ্যে মহিষের মাংস রপ্তানি প্রায় ৮.৮২ শতাংশ কমেছে।

ভারতের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন এপিইডিএ বলছে, ২০১৪-১৫ অর্থবছরে ভারত পাঁচ লাখ ৩৫ হাজার ২৯৯ টন মহিষের মাংস রপ্তানি করে ১০ হাজার ৩৮২ কোটি রুপি উপার্জন করেছিল। তবে ২০১৫-১৬ অর্থবছরে একই সময়ে রপ্তানি করা হয়েছে চার লাখ ৬৮ হাজার ৩৮১ টন মাংস, যা থেকে আয় হয়েছে নয় হাজার ৪৬৬ কোটি রুপি।