পিঁপড়া খেয়ে ছয়দিন!
শিকারে বের হয়েছিলেন ৬২ বছর বয়স্ক রেগ ফগের্ডি। পশ্চিম অস্ট্রেলিয়ার গ্রেট ভিক্টোরিয়া মরুভূমি ছিল গন্তব্য। সঙ্গীসাথী নিয়ে গেলেও এক সময় পথ হারিয়ে ফেলেন ফগের্ডি। ছুরি, আগুন এসব কিছুই ছিল না তাঁর কাছে। আর মরুভূমিতে পানি তো দুষ্করই। এভাবে ছয়দিন কাটাতে হয়েছে তাঁকে। ছয়দিন পর তাঁকে উদ্ধার করে উদ্ধারকর্মীরা। দুর্বল ফগের্ডি উদ্ধারকর্মীদের বললেন, ‘বেঁচে থাকার জন্য পিঁপড়া খেয়েছি। স্বাদে বেশ ভালোই।’
বিষয়টি নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে সংবাদমাধ্যম সিএনএন। প্রতিবেদনে জানানো হয়, ফগের্ডি নামে অস্ট্রেলিয়ান ওই ভদ্রলোককে সম্প্রতি উদ্ধার করা হয় পশ্চিম অস্ট্রেলিয়ার মরু এলাকা থেকে।
ফগের্ডি জানিয়েছেন, কেবল পিঁপড়া খেয়ে বেঁচে থাকার লড়াই করেছেন তিনি। তিনি বলেন, ‘আমি কখনো চিন্তাও করিনি কেউ আমাকে খুঁজে বের করতে পারবে।’
ফগের্ডি একজন ডায়াবেটিক রোগী। হৃদরোগও আছে। মরু এলাকায় খাবার না পেয়ে একপর্যায়ে পিঁপড়াকে খাবার বানাতে শুরু করেন। টেলিভিশনে তিনি ব্রিটিশ অভিযানকারী বিয়ার গ্রিলসের অনুষ্ঠানটি দেখেন এবং সেখান থেকেই তিনি এ ধারণা পান। ফগের্ডি বলেন, ‘এসব পিঁপড়া খেতে ভালোই। প্রথমদিন আমি ১২টি পিঁপড়া খেয়েছিলাম। এর পরের দিন ১৮টি।’
ফগের্ডি বলেন, ‘একপর্যায়ে আমি আশা ছেড়ে দিয়েছিলাম। উদ্ধার অভিযানের হেলিকপ্টারটি আমার ওপর দিয়ে উড়ে যায়। কিন্তু গাছের জন্য আমাকে দেখতে পায়নি।’ তিনি আরো বলেন, ‘ষষ্ঠদিন সবকিছু অন্ধকার হয়ে আসছিল। বিদায় জানাতে চাচ্ছিলাম। চোখ বন্ধ করে ফেলি। এর পর যখন চোখ খুলি তখন আনন্দে ভরে যায় মন।’ কারণ পুলিশ আর উদ্ধারকর্মীরা তাঁকে মাত্রই উদ্ধার করেছে।
পথ আর স্বজনদের হারানোর আগে একটি উট শিকারও করেছিলেন ফগের্ডি। কিন্তু তাঁর কাছে ছুরি ছিল না, আগুনের জন্য ম্যাচ ছিল না। এ কারণে ওই উট ফগের্ডির কোনো কাজেই আসেনি।
ফগের্ডির বিস্ময়ভাব যাচ্ছে না। তিনি বলেন, ‘আমি শুনেছি তিনদিন পানি ছাড়া মানুষ বাঁচে না। আমি কীভাবে ছয়দিন পার করে ফেললাম?’
ফগের্ডিকে কেউ পিঁপড়া মানব ডাকলে তিনি রাগ করবেন না। ওই মরুর ঝোপে তিনি তাঁর অস্ত্রটি হারিয়েছেন। ফগের্ডি বলেন, ‘আমি আমার অস্ত্রটির খোঁজে আবার যাব। অস্ত্রটি কোনো ঝোপেই আছে।’