জাপানে সবচেয়ে বড় মসজিদের দরজা খুলল
খুলে দেওয়া হলো জাপানের সবচেয়ে বড় মসজিদের দরজা। গত ২০ নভেম্বর মধ্য জাপানের শহর নাগোয়ার কাছে নির্মিত নতুন এই মসজিদের উদ্বোধন করা হয়। আর এর মধ্য দিয়ে পূর্ব এশিয়ার এই দেশটির সঙ্গে ইসলাম ধর্মের নতুন অধ্যায়ের সূচনা হলো।
‘বায়েত-উল আহাদ’ নামে এই মসজিদটি তৈরি করা হয়েছে বেশ রাজকীয় নির্মাণশৈলীতে। এর মূল ভবনে একসঙ্গে ৫০০ মানুষ নামাজ আদায় করতে পারবেন।
আলজাজিরার এক প্রতিবেদনে একথা জানানো হয়েছে।
১৯৩৫ সালে জাপানে কোব মুসলিম মসজিদ নামে প্রথম একটি মসজিদ স্থাপিত হয়। এ ছাড়া দেশটির যেসব অঞ্চলে মুসলমানরা বাস করেন, সেখানে ছোট ছোট মসজিদ স্থাপিত হয়েছে যেগুলো বেশির ভাগই মুসলমানদের কমিউনিটি সেন্টার হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
১৯৩৫ সালেই জাপানে আসেন আহমদিয়া মুসলিম সম্প্রদায়ের লোকজন। তবে এবারই প্রথম তাঁরা নিজেদের জন্য নিজেদের অর্থায়নে একটি মসজিদ নির্মাণ করতে সক্ষম হলেন।
জাপানের সবচেয়ে বড় এই মসজিদটির উদ্বোধনী দিনে জাপানের রাজনৈতিক নেতা, বিভিন্ন গণ্যমান্য ব্যক্তি এবং বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে আসা আহমদিয়া সম্প্রদায়ের নেতারা উপস্থিত ছিলেন। আর প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশ্বের দুই কোটি আহমদিয়া মানুষের সর্বোচ্চ নেতা খলিফা মির্জা মাসরুর আহমাদ।
এ বিষয়ে খলিফা আহমাদ আলজাজিরাকে বলেন, ‘এটি আমাদের অগ্রগতির একটি মাইলফলক। যদি এই মসজিদ থেকে ভালোবাসা, সৌহার্দ্য এবং শান্তির বাণী প্রচার করা হয় তাহলে সহজেই মানুষ এর প্রতি আকৃষ্ট হবে।’
অন্য মুসলিম সম্প্রদায়ের সঙ্গে আহমদিয়া সম্প্রদায়ের পার্থক্য হলো, আহমদিয়ারা বিশ্বাস করেন ইসলাম ধর্মে বর্ণিত ইমাম মাহদী হলেন মির্জা গুলাম আহমাদ (১৮৩৮-১৯০৮)। যিনি তাঁর অনুসারীদের প্রকৃত মুসলমান ধর্মের পথে পরিচালিত করতেন।
তবে ইসলামের মূল ধারার মানুষরা আহমদিয়া সম্প্রদায়কে ইসলামের অংশ বলে মনে করেন না।
জাপানে নবনির্মিত এই বায়েত-উল-আহাদ মসজিদটি দেশটিতে আহমদিয়া সম্প্রদায়ের মূল ভিত্তি হিসেবে কাজ করবে বলে মনে করা হচ্ছে। এটিতে এই মুহূর্তে ধারণক্ষমতা ৫০০ জন, যা বর্তমানে জাপানে বসবাসরত আহমদিয়াদের সংখ্যার চেয়ে অনেক বেশি।
এ বিষয়ে টোকিও বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক মাসায়ুকি আকুসু বলেন, এখন জাপানে যে পরিমাণ আহমদিয়া সম্প্রদায়ের মানুষ আছেন, তাঁদের জন্য এর চেয়ে অনেক ছোট মসজিদ নির্মাণ করলেও হতো।
তবে এই মসজিদটি শুধু ধর্মীয় কর্মকাণ্ডের জন্য সীমাবদ্ধ থাকবে না। বরং এটি তাদের সামাজিক কর্মকাণ্ডের কেন্দ্র হিসেবেও ব্যবহার করা হবে বলে মনে করেন তিনি।
গোটা বিশ্বে ইসলাম সম্পর্কে বর্তমানে যে নেতিবাচক ধারণা তৈরি হয়েছে, জাপানে এই মসজিদ তৈরি এবং এর কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে সেই ধারণা ভেঙে যাবে বলে আশা করা হচ্ছে।