৮৯ কৃষকের আত্মহত্যা ছাপিয়ে আইপিএল উৎসব!
গত কয়েক বছর ধরে ভারতের মহারাষ্ট্রে চলছে তীব্র খরা। ফসলি জমিতে শস্য নেই। কৃষকদের বাঁচাতে রাষ্ট্রের উদ্যোগও যথেষ্ট নয়। প্রতিবাদ হিসেবে কৃষকরা আত্মহত্যা করছেন। চলতি বছরের জানুয়ারিতেই আত্মহত্যা করেছেন ৮৯ জন কৃষক।
খরার প্রভাব শুধু কৃষকের আত্মহত্যাতেই সীমিত থাকেনি। এতে গোটা মহারাষ্ট্রজুড়ে সৃষ্টি হয়েছে তীব্র পানি সংকট। রাজ্যজুড়ে শুরু হয়েছে পানির জন্য হাহাকার। অথচ সেই রাজ্যেই কি না লাখ লাখ লিটার পানি খরচ করে প্রস্তুত করা হচ্ছে ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগের (আইপিএল) মাঠ ও পিচ।
মহারাষ্ট্রের তিনটি শহর; মুম্বাই, পুনে ও নাগপুরে অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা আইপিএলের ২০টি ম্যাচ। এই ম্যাচগুলোর জন্য মাঠ ও পিচ প্রস্তুত করার জন্য ব্যবহার করতে হবে বিপুল পানি। মুম্বাইয়ের ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামে সাতটি ম্যাচ আয়োজনের জন্য ৪০ লাখ লিটারেরও বেশি পানি প্রয়োজন বলে জানানো হয়েছে মুম্বাই ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে।
একদিকে রাজ্যের মানুষ ধুঁকছে। অন্যদিকে মাঠ পরিচর্যায় ব্যয় হচ্ছে বিপুল পানি। এ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে সচেতন মহল।
ভারতের সংবাদমাধ্যম বেইং ইন্ডিয়ান ডটকমের এক খবরে বলা হয়, আইপিএলে দৈনিক ৬০ লাখ লিটার পানি ব্যয় হয়। অথচ পানির অভাবে মানুষজন ধুঁকছে। এ নিয়ে মূলধারার গণমাধ্যমগুলোতে বিশেষ প্রতিবেদন নেই। প্রতিবাদ, বিক্ষোভও নেই বললেই চলে।
তবে আশার কথা হলো আইপিএলে পানির অপচয় রোধে মুম্বাইয়ের আদালতে রিট করেছেন স্থানীয় এক আইনজীবী। এ রিট আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে মুম্বাইয়ের এক বিচারক ক্ষুব্ধ হয়ে বলেছেন, ‘কীভাবে এত পানি নষ্ট করা যায়? মানুষের চেয়েও কি আইপিএল বড়? আপনারা কীভাবে এত উদাসীন হতে পারেন?’
আদালত মহারাষ্ট্র থেকে আইপিএলের ম্যাচগুলো অন্য জায়গায় সরিয়ে নিতে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড বিসিসিআইয়ের কাছে সুপারিশ করেছেন। তবে আইপিএলের সভাপতি রাজীব শুক্লা পূর্বনির্ধারিত সূচি অনুযায়ীই ম্যাচগুলো আয়োজনের ব্যাপারে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। এ জন্য মহারাষ্ট্রের কৃষকদের দিকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিতেও প্রস্তুত বলে জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘খরা ও পানির বিষয়ে আমরা মহারাষ্ট্রের কৃষকদের সব ধরনের সহায়তা করতে প্রস্তুত আছি।’