সংঘাত থামেনি সুদানে, তৈরি হয়েছে মানবিক সংকট
কোনোরকম বিরতি না নিয়ে সপ্তম সপ্তাহজুড়ে সুদানে সংঘাত চলছে। ১৫ এপ্রিল সুদানের সেনাবাহিনী ও এর প্রতিপক্ষ আধাসামরিক বাহিনী র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সের (আরএসএফ) দুই জেনারেলের অনুগত সেনাদের মধ্যে যে সংঘর্ষ শুরু হয়, তা এখন সর্বাত্মক যুদ্ধে রূপ নিয়েছে। এই সংঘাতের কারণে দেশটিতে তৈরি হয়েছে মানবিক সংকট।
একটি বেসরকারি তথ্য-উপাত্ত সংস্থার প্রতিবেদন অনুযায়ী সংঘর্ষে এক হাজার ৮০০ লোকের প্রাণহানি হয়েছে আর জাতিসংঘ জানিয়েছে কমপক্ষে ১৬ লাখ লোক বাড়িঘর ছেড়ে পালিয়ে গেছে। যাদের অনেকেই প্রাণ বাঁচাতে আশ্রয় নিয়েছে পার্শ্ববর্তী দেশ মিশর, চাদ ও দক্ষিণ সুদানে।
এদিকে, চলতে থাকা সংঘাতে দুপক্ষই একাধিকবার সৌদি আরব ও যুক্তরাষ্ট্রের উদ্যোগে আলোচনা শেষে অস্ত্রবিরতি মেনে চলার শর্ত লঙ্ঘণ করে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েছে।
অন্যদিকে, গত বৃহস্পতিবার যুক্তরাষ্ট্র উত্তর-পূর্ব আফ্রিকার এই দেশটিতে শান্তি প্রক্রিয়াকে ভেঙে দেওয়ার জন্য পরোক্ষভাবে মদদ দেওয়া কিছু প্রতিষ্ঠানের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। সুদানের আরএসএফ প্রধান হেমেদটি দাগালো এবং জেনারেল আবদেল ফাত্তাহ আল বুরহানের নেতৃত্বাধীন সশস্ত্র বাহিনীর সঙ্গে সম্পর্ক রয়েছে এমন কয়েকটি দেশি-বিদেশি প্রতিষ্ঠানের ওপর এই অবরোধ আরোপ করেছে মার্কিন প্রশাসন। পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্র এটাও জানিয়ে দিয়েছে যে, সহিংসতায় মদদ দেওয়া ব্যক্তিদের ভিসা বিধিনিষেধের আওতায় আনা হবে।
তবে, সুদানে সংঘাত-সংঘর্ষ চলছেই। সৌদি আরব ও যুক্তরাষ্ট্র উদ্যোগ নিয়ে আলোচনার মাধ্যমে দুপক্ষকে অস্ত্রবিরতির যে চুক্তি স্বাক্ষর করিয়েছিল তা ভেস্তে যাওয়ার জন্য সেনাবাহিনী ও আরএসএফ একে অপরকে দোষ দিয়ে আসছে।
গতকাল বৃহস্পতিবারও ভারী অস্ত্রের গোলাবর্ষণের শব্দ পাওয়া গেছে রাজধানী খার্তুমের উত্তরে, খার্তুম প্রদেশের বিভিন্ন শহরে এবং দেশের উত্তরাঞ্চলীয় ওমদুরমান এলাকায়।
জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা জানিয়েছে, সম্প্রতি এক লাখেরও বেশি সুদানি নাগরিক পার্শ্ববর্তী দেশ চাদে পালিয়ে গেছে এবং আগামী তিন মাসে এই সংখ্যা দ্বিগুনেরও বেশি হতে পারে। বিশ্বের অন্যতম দরিদ্র দেশ চাদে আগে থেকেই ছয় লাখ শরণার্থীকে আশ্রয় দিয়ে রেখেছে।