দক্ষ শ্রমিকদের জন্য অভিবাসন নীতিমালা শিথিল করল জার্মানি
ইউরোপের বৃহৎ অর্থনীতির দেশ জার্মানি। দীর্ঘদিন ধরে দেশটির শিল্পখাত শ্রম ঘাটতির সঙ্গে লড়াই করছে। অবশেষে দক্ষ শ্রমিকের জন্য দেশটির সরকার অভিবাসন নীতিমালা শিথিল করেছে। আজ শুক্রবার (২৩ জুন) জার্মানির পার্লামেন্টে এ সংক্রান্ত আইনটি পাস হয়। খবর এএফপির।
প্রতিবেদনে ফরাসি সংবাদ সংস্থাটি জানায়, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে জার্মানিতে দক্ষ শ্রমিকের অভাব দেখা দিয়েছে। মূলত দেশটির বয়স্ক জনসংখ্যা বাড়ায় এমনটি হচ্ছে। এর ফলে সেবা খাত থেকে শুরু করে স্বাস্থ্য ও নির্মাণশিল্প দক্ষ কর্মী পেতে লড়াই করছে। ২০২২ সালের শেষ নাগাদ দেশটিতে ২০ লাখ শ্রমিকের পদ খালি ছিল।
বিদেশি দক্ষ শ্রমিকদের জন্য করা আইনি পরিবর্তনের পক্ষে ভোট দিয়েছেন জার্মানির ক্ষমতাসীন জোটের আইনপ্রণেতারা। এই আইন অনুযায়ী, কানাডার মডেল সামনে রেখে বিদেশি শ্রমিকদের জন্য থাকবে পয়েন্ট সিস্টেম। দক্ষতা, শিক্ষাগত যোগ্যতা ও ভাষার দক্ষতা অনুযায়ী দেওয়া হবে পয়েন্ট। বিদেশি কারিগরি শিক্ষার যোগ্যতাকে ব্যাপকভাবে স্বীকৃতি দেওয়া হবে।
বিধিমালা শিথিলের এই ব্যবস্থাকে স্বাগত জানিয়ে জার্মানির অর্থমন্ত্রী রবার্ট হাবেক বলেন, ‘শ্রম ঘাটতি আমাদের দেশের সমস্যাগুলোর মধ্যে অন্যমত।’ এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, ‘আমরা অভিবাসনের বাধা কমিয়ে দিচ্ছি। ভবিষ্যতে বিদেশি দক্ষ শ্রমিকদের নিয়োগ দিতে কোম্পানিগুলোর কার্যক্রম সহজ হবে।’
তবে, বিধিমালা শিথিলের এই আইনের বিরোধিতা করছে ক্ষমতাসীন সরকারের রাজনৈতিক বিরোধীরা। তারা বলছেন, এই আইন দেশে অভিবাসনপ্রত্যাশীদের বসবাসের অনুমতি দেওয়ার একটি পদক্ষেপ, বিশেষ করে যারা বর্তমানে এখানে আছেন।
রক্ষণশীল ক্রিস্টিয়ান ডেমোক্রেটিক ইউনিয়ন অব জার্মানি (সিডিইউ) পার্টির আইনপ্রণেতা থর্স্টেন ফ্রেই আরএনডি মিডিয়া গ্রুপকে বলেছেন, ‘জোট সরকার বিশ্বের কাছে একটি সংকেত পাঠাচ্ছে। যে কোনোভাবে জার্মানিতে ঢুকে পরা লোক দেশে থাকতে পারবে।’
আট কোটি ৪০ লাখ মানুষের দেশ জার্মানিতে অভিবাসন নীতি শিথিল করার জন্য আগে থেকে আওয়াজ তুলছিলেন নিয়োগকারী সংস্থাগুলো। চলতি বছরের শুরু দিকে জার্মান চেম্বার অব কর্মাস অ্যান্ড ইন্ড্রাস্টি জানিয়েছিল, শ্রম সংকটের বিষয়টি গুরুতর ও এটি অর্থনীতিতে ব্যাপকভাবে প্রভাব ফেলছে। তারা জানিয়েছিল, অর্ধেক কর্মী খুঁজে পেতেও শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলোর সমস্যা হচ্ছে।