পুতিনের সঙ্গে শেখ হাসিনার অস্ত্রচুক্তি অনুষ্ঠানে থাকায় প্রশ্নের মুখে টিউলিপ
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পসহ শতকোটি পাউন্ডের অস্ত্রচুক্তি করতে যাওয়া বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলের সঙ্গে টিউলিপ সিদ্দিকের উপস্থিতির ভিডিও সম্প্রতি প্রকাশিত হয়। এরপর থেকে নতুন করে প্রশ্নের মুখে পড়েছেন যুক্তরাজ্যের এই সিটি মিনিস্টার।
ভিডিও ফুটেজে টিউলিপ সিদ্দিক ও তার খালা শেখ হাসিনাকে মস্কোতে একটি প্রতিনিধি দলের অংশ হিসেবে উপস্থিত থাকতে দেখা যায়। এর আগে টিউলিপ সিদ্দিক দাবি করেছিলেন, এটি একটি পারিবারিক অনুষ্ঠানের ছবি। তবে ভিডিওটি আগের বক্তব্যের সঙ্গে তার স্ববিরোধিতাকেই প্রকাশ করে। খবর ডেইলি মেইলের।
ঘটনার ৯ বছর পর গত রোববার ব্রিটিশ গণমাধ্যম দ্য মেইল অনুসন্ধান করে পায়, ২০১৩ সালে ভ্লাদিমির পুতিন এবং সে সময়কার বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে টিউলিপ সিদ্দিকের ওই ছবিটি তোলা হয়।
ওই সময় লেবার পার্টি জোর দিয়ে বলেছিল, তৎকালীন পার্লামেন্ট সদস্যপ্রার্থী টিউলিপ সরকারি প্রতিনিধি দলের বাইরে থেকে কেবল তার পরিবারের আমন্ত্রণে সেখানে ছিলেন। তবে ভিডিওতে দেখা যায়, এই পারিবারিক অনুষ্ঠানটি ছিল ক্রেমলিনের ভেতরে এবং এটি একটি সরকারি আনুষ্ঠানিকতার অংশ। এতে দেখানো হয়, পুতিন ও শেখ হাসিনা সুসজ্জিত টেবিলে বসে আছেন এবং তাদের পেছনে শোভা পাচ্ছিল রাশিয়া ও বাংলাদেশের পতাকা। সেখানে দেখা যায় ১০০ কোটি পাউন্ডের অস্ত্রচুক্তি স্বাক্ষরের আগে পুতিন ও হাসিনা একে অন্যের দেশের প্রশংসা করছেন।
ওই অনুষ্ঠানে বিতর্কিত রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রকল্পের চুক্তিও স্বাক্ষর হয়। এখান থেকে টিউলিপ সিদ্দিক ও তার পরিবার ৪০০ কোটি পাউন্ড ঘুষ নিয়েছেন, এমন একটি অভিযোগের বিষয়ে বাংলাদেশে অবশ্য তদন্ত চলছে। পুতিনে সঙ্গে পারিবারিক ওই ছবিটি চুক্তি স্বাক্ষরের পর একই কক্ষে তোলা হয়।
এদিকে, দ্বিতীয় আরেকটি ভিডিওতে দেখা যায়, শেখ হাসিনার তিন দিনের মস্কো সফরের সময় তিনি অজ্ঞাত যোদ্ধাদের স্মৃতিসৌধে গার্ড অব অনার গ্রহণ করছেন এবং পুষ্পার্ঘ্য প্রদান করছেন। এই ছবিতে দেখা যায়, ৪১ বছর বয়সী টিউলিপ এবং তার ৩৪ বছর বয়সী বোন আজমিনা বাংলাদেশি প্রতিনিধি দলের পেছনে রয়েছেন।
এ বিষয়ে যুক্তরাজ্যের লেবার পার্টির একজন মুখপাত্র বলেন, ঘটনাটি ১১ বছর আগের, যখন টিউলিপ এমপি নির্বাচিত হননি। টিউলিপ কেবল তার খালার সঙ্গে দেখা করতে এবং তার সঙ্গে সময় কাটাতে রাশিয়া গিয়েছিলেন। পারিবারিক সদস্যের বাইরে এই ঘটনার সঙ্গে তার আর কোনো ধরনের সম্পৃক্ততা ছিল না।
এ বিষয়ে রক্ষণশীল দলের (টোরি পার্টি) মুখপাত্র বলেন, মস্কোতে টিউলিপ সিদ্দিকের এই পারিবারিক ভ্রমণের বিষয়ে অবস্থাদৃষ্টে বেশকিছু গুরুতর প্রশ্নের সৃষ্টি করেছে। অবশেষে এক দশকেরও বেশি সময় পরে টিউলিপ সিদ্দিকের এই সফর এবং ওই ছবির পেছনের সত্য সম্পর্কে পরিষ্কার হওয়ার সময় এসেছে।