গাজায় ইসরায়েলি বিমান হামলায় নিহত ২০০ ছাড়াল

গাজা উপত্যকাজুড়ে দখলদার ইসরায়েলের সাম্প্রতিক বিমান হামলায় নিহত ফিলিস্তিনিদের সংখ্যা ২০০ ছাড়িয়েছে, যাদের মধ্যে বহু নারী ও শিশু রয়েছে।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে আজ মঙ্গলবার (১৮ মার্চ) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরা।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ইসরায়েলের যুদ্ধবিমান গাজার ঘনবসতিপূর্ণ এলাকাগুলোতে হামলা চালিয়েছে, যেখানে মানুষ আশ্রয় নিয়েছিল। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, অস্থায়ী শিবির ও আবাসিক ভবনেও হামলার ঘটনা ঘটেছে।
হামলাগুলো কোনোরকম পূর্ব সতর্কতা ছাড়াই চালানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা। আল-মাওয়াসি এলাকায়ও আঘাত হানা হয়েছে, যা আগে ‘নিরাপদ মানবিক অঞ্চল’ হিসেবে চিহ্নিত ছিল।
ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস বলছে, ইসরায়েল ‘বিশ্বাসঘাতক’ আক্রমণ চালিয়ে নিরস্ত্র বেসামরিক নাগরিকদের হত্যা করেছে, যাতে গাজার যুদ্ধবিরতি চুক্তি ভেস্তে যায়। ইসলামিক জিহাদ ইসরায়েলের বিরুদ্ধে ‘ইচ্ছাকৃতভাবে যুদ্ধবিরতি ধ্বংস করার’ অভিযোগ এনেছে।
ইসরায়েলের জাতিসংঘ দূত ড্যানি ড্যানন বলেন, ‘ইসরায়েল শত্রুদের প্রতি কোনো দয়া দেখাবে না। আমরা যুদ্ধ চালিয়ে যা, যতক্ষণ না আমাদের সব বন্দি মুক্তি পায়।’
এদিকে, ইসরায়েলের সম্প্রচার সংস্থা জানিয়েছে, হামলাগুলো ফিলিস্তিনি সশস্ত্র গোষ্ঠীর সিনিয়র নেতাদের লক্ষ্য করে চালানো হয়েছে। ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী অভিযোগ করেছে, হামাস আবারও নিজেদের বাহিনী গুছিয়ে নতুন হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে।

ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেছেন, তিনি সামরিক বাহিনীকে হামাসের বিরুদ্ধে ‘শক্ত পদক্ষেপ’ নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। তার দাবি, হামাস বন্দিদের মুক্তি দিতে অস্বীকৃতি জানাচ্ছে এবং যুদ্ধবিরতির বিষয়ে ইসরায়েলের প্রস্তাবে রাজি হচ্ছে না।
নেতানিয়াহুর কার্যালয় এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ‘এখন থেকে ইসরায়েল হামাসের বিরুদ্ধে ক্রমবর্ধমান সামরিক শক্তি প্রয়োগ করবে।’
যদিও হামাস বেশ কিছুদিন ধরেই নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে গাজায় যুদ্ধ বন্ধে কোনো আগ্রহ না দেখানোর অভিযোগ করে আসছে।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, ইসরায়েলি হামলায় এখন পর্যন্ত ৪৮ হাজার ৫৭২ ফিলিস্তিনি নিহত এবং এক লাখ ১২ হাজার ৩২ জন আহত হয়েছেন। গাজার সরকারি মিডিয়া অফিস জানিয়েছে, ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়ে থাকা হাজারো মানুষের হিসাব ধরলে প্রকৃত মৃতের সংখ্যা ৬১ হাজার ৭০০ ছাড়িয়ে যেতে পারে।