পাকিস্তানের সঙ্গে সিন্ধু পানি চুক্তি পুনর্বহাল করবে না ভারত

পাকিস্তানের সঙ্গে সিন্ধু পানি চুক্তি আর কখনোই পুনর্বহাল করা হবে না বলে কড়া বার্তা দিয়েছেন ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। তিনি বলেছেন, পাকিস্তানে প্রবাহিত সিন্ধু নদের পানি এবার ভারত নিজেদের অভ্যন্তরীণ কাজে ব্যবহারের জন্য সরিয়ে নেবে।
আজ শনিবার (২১ জুন) ভারতীয় সংবাদমাধ্যম দি টাইমস অব ইন্ডিয়াকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে অমিত শাহ এই মন্তব্য করেন। খবর রয়টার্সের।
নয় বছর ধরে আলোচনা ও সমঝোতার পর বিশ্বব্যাংকের মধ্যস্থতায় ১৯৬০ সালে স্বাক্ষরিত হয়েছিল সিন্ধু পানি চুক্তি। এটি আন্তঃসীমান্ত পানি ব্যবস্থাপনার একটি অনন্য উদাহরণ হিসেবে বিবেচিত হয়, যা সিন্ধু নদ ও এর শাখা নদীগুলোর পানি বণ্টন নিয়ন্ত্রণ করতো এবং পাকিস্তানের কৃষিকাজে সেচের ৮০ শতাংশ পানির জোগান দিত।
কাশ্মীরের পাহেলগামে পর্যটকদের ওপর প্রাণঘাতী সন্ত্রাসী হামলার পর ভারত এই হামলার জন্য ইসলামাবাদকে অভিযুক্ত করে সিন্ধু পানি চুক্তি স্থগিত করার ঘোষণা দেয়। যদিও এই হামলায় জড়িত থাকার কথা অস্বীকার করেছে পাকিস্তান। গত মাসে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে কয়েকদিনের প্রাণঘাতী সংঘাতের পর দুই দেশ অস্ত্রবিরতিতে সম্মত হলেও এই গুরুত্বপূর্ণ পানি চুক্তিটি স্থগিতই থেকে যায়।
এ বিষয়ে এক প্রশ্নে জবাবে অমিত শাহ সরাসরি বলেন, ‘না, এটি আর কখনোই পুনর্বহাল হবে না। একটি খাল নির্মাণ করে পাকিস্তানে প্রবাহিত পানি আমরা রাজস্থানে নিয়ে যাব। পাকিস্তান পানির অভাবে ভুগবে যা তারা অন্যায্যভাবে পাচ্ছিল।’

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির মন্ত্রিসভার অন্যতম প্রভাবশালী মন্ত্রী অমিত শাহর এই মন্তব্যে ভবিষ্যতে চুক্তিটি নিয়ে ইসলামাবাদের সঙ্গে আলোচনার কোনো সম্ভাবনা থাকছে না। গত মাসে রয়টার্স এক প্রতিবেদনে জানিয়েছিল, ভারত প্রতিশোধমূলক পদক্ষেপ হিসেবে পাকিস্তানের কৃষিজমিগুলোতে সেচ সরবরাহ করা একটি গুরুত্বপূর্ণ নদী থেকে পানি প্রত্যাহারের পরিমাণ নাটকীয়ভাবে বৃদ্ধির পরিকল্পনা করেছে।
এদিকে, অমিত শাহর এই মন্তব্যের ব্যাপারে প্রতিক্রিয়া জানাতে রয়টার্সের অনুরোধে তাৎক্ষণিকভাবে সাড়া দেয়নি পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
তবে এর আগে পাকিস্তান জানিয়েছিল, চুক্তিতে কোনো এক পক্ষের একতরফাভাবে সরে যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই। পাকিস্তানে প্রবাহিত নদীর পানি আটকে দেওয়ার প্রচেষ্টাকে ‘যুদ্ধের উসকানি’ হিসেবে বিবেচনা করা হবে।
আন্তর্জাতিক আইনের অধীনে ভারতের এই পদক্ষেপের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে বলেও এর আগে জানিয়েছিল পাকিস্তান।