হামাসের হামলার ২০ মাস পর ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শনে নেতানিয়াহু
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে আকস্মিক হামলা চালায় ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠী হামাস। ইসরায়েলের যেসব এলাকায় হামাস হামলা করেছিল তার মধ্যে অন্যতম ছিল দক্ষিণের কিবুটজ নির ওজ। ওই হামলার ২০ মাস পর প্রথমবারের মতো এলাকাটি পরিদর্শনে যান ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু।
তবে তার এই সফর নির্বিঘ্ন ছিল না; তাকে তীব্র বিক্ষোভের মুখে পড়তে হয়। বিক্ষুব্ধ জনতা রাস্তা অবরোধ করে স্লোগান দিচ্ছিল। আন্দোলনকারীরা ইসরায়েলি বন্দীদের গাজা থেকে ফিরিয়ে আনার জন্য একটি চুক্তির দাবি জানাচ্ছিল।
আজ বৃহস্পতিবার (৩ জুলাই) কাতারভিত্তিক সংবাদ মাধ্যম আলজাজিরা এই খবর জানায়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ইসরায়েলি সংবাদপত্র হারেৎজের খবর অনুযায়ী, প্রায় এক বছর আগে নেতানিয়াহুর কার্যালয় কিবুটজ পরিদর্শনে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলে ঘোষণা দেয়। কিন্তু বাসিন্দাদের বারবার অনুরোধ সত্ত্বেও সেই সফর হয়নি। এমনকি এক বছরেরও বেশি সময় আগে প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু একটি সংবাদ সম্মেলনে গাজা সীমান্ত সংলগ্ন সম্প্রদায়ের মানচিত্র উপস্থাপন করেছিলেন, যেখানে কিবুটজ নির ওজের নাম অনুপস্থিত ছিল। অথচ ৭ অক্টোবরের হামলায় নির ওজের প্রায় এক চতুর্থাংশ বাসিন্দা (১১৭ জন) নিহত বা বন্দি হয়েছিল।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট করা ফুটেজে দেখা যায় নেতানিয়াহুর গাড়িবহর নির ওজে প্রবেশ করছে। ফুটেজের সঙ্গে একটি ক্যাপশনে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করে লেখা ছিল: ‘বজ্জাতটা নির ওজে এমনভাবে হাঁটছে যেন সে লিকুদের (নেতানিয়াহুর দল) কেন্দ্রে প্রকৃতি ভ্রমণে বেরিয়েছে। রক্তে ভেজা মাটিতে সে ভোটের জন্য ছুটে বেড়াচ্ছে। তোমার (নেতানিয়াহু) লজ্জা হওয়া উচিত, ইসরায়েলের ধ্বংসকারী।’
পোস্টের শেষে বলা হয়, গাড়িবহর অবশ্য পেছনের গেট দিয়ে ঢুকেছে। রাতের চোরের মতো।
নির ওজের বাসিন্দাদের মধ্যে নেতানিয়াহুর এই বিলম্বিত সফর নিয়ে মিশ্র অনুভূতি দেখা গেছে। অনেকে তাকে আমন্ত্রণ জানালেও অন্যরা এটিকে প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক ফায়দা লোটার চেষ্টা হিসেবে দেখছেন। একজন বাসিন্দা তার অনুভূতি প্রকাশ করে বলেন, আমি জানি না সফর কীভাবে শেষ হবে বা নেতানিয়াহু কী আশা করছেন। আমি নিজেও নিশ্চিত নই যে আমার কেমন লাগছে।
ওই বাসিন্দা আরও যোগ করেন, যদি নেতানিয়াহু প্রতিশোধ বা যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার কথা বলেন, যদি তিনি না বোঝেন যে প্রধান লক্ষ্য হওয়া উচিত বন্দিদের ফিরিয়ে আনা, তাহলে এটা নির ওজের অসম্মান হবে।
এই সফর ইসরায়েলের অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক অস্থিরতা ও গাজায় বন্দীদের ফিরিয়ে আনার বিষয়ে সরকারের ওপর ক্রমবর্ধমান চাপকে আবারও সামনে নিয়ে এলো।

এনটিভি অনলাইন ডেস্ক