ইরানকে ফের কড়া হুমকি ট্রাম্পের

ইরানকে আবারও কড়া হুমকি দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। স্থানীয় সময় সোমবার (২৮ জুলাই) স্কটল্যান্ডে এক সংবাদ সম্মেলনে ট্রাম্প বলেন, “আমরা আগেও তাদের পারমাণবিক সক্ষমতা গুঁড়িয়ে দিয়েছি। তারা যদি আবার শুরু করে, আমরা সেটা আরও দ্রুত শেষ করব।” খবব আল জাজিরার।
ট্রাম্পের এই বক্তব্য আসলো এমন সময়, যখন ইরান আবারও ঘোষণা দিয়েছে তারা শান্তিপূর্ণ ও চিকিৎসা খাতে ব্যবহারের জন্য পারমাণবিক ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধিকরণ চালিয়ে যাবে। ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাগচি সম্প্রতি যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স এবং জার্মানির সঙ্গে আলোচনায় বসার আগে এই অবস্থান জানান।
ট্রাম্প বলেন, “তারা খুব খারাপ সংকেত দিচ্ছে। তাদের এটা করা উচিত না। যদি করে, আমরা খুশি মনে ও প্রকাশ্যে আবার ধ্বংস করে দেবো।”
ইরানের প্রতিক্রিয়ায় পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরাগচি বলেন, “ইরান কখনো হুমকি বা ভয়ের ভাষায় সাড়া দেবে না।” তিনি আবারও জোর দিয়ে বলেন, শান্তিপূর্ণ কাজে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধিকরণ ইরানের অধিকার এবং আরেকবার আক্রমণ হলে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানানো হবে।
গত সপ্তাহে আল জাজিরাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসউদ পেজেশকিয়ান বলেন, ইরান পারমাণবিক কর্মসূচি বন্ধ করবে না, তবে আলোচনার দরজা খোলা রাখবে। তবে তিনি সম্প্রতি ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে ১২ দিনের যুদ্ধ শেষে হওয়া যুদ্ধবিরতি নিয়ে “খুব বেশি আশাবাদী” নন বলেও জানান।
অন্যদিকে, ইসরায়েল আবারও ইরানে হামলার ইঙ্গিত দিয়েছে। দেশটির প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাটজ রোববার (২৭ জুলাই) বলেন, “তুমি যদি ইসরায়েলকে হুমকি দিতে থাকো, তাহলে আমাদের দীর্ঘ হাত তেহরান পর্যন্ত পৌঁছাবে—এবং এবার তোমার দিকেই, আয়াতুল্লাহ খামেনি।”
গত ২২ জুন ট্রাম্প ঘোষণা দিয়েছিলেন, ফোর্দো, নাতানজ ও ইসফাহানে যুক্তরাষ্ট্রের হামলায় ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি "ধ্বংস" হয়ে গেছে। যদিও পরে গোয়েন্দা রিপোর্টে দেখা গেছে, প্রকৃত ক্ষয়ক্ষতি প্রত্যাশার চেয়ে কম এবং ইরানের কর্মসূচি সাময়িকভাবে ব্যাহত হয়েছে মাত্র।
সপ্তাহান্তে ট্রাম্প ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচিকে “মূর্খতা” বলে আখ্যা দেন।
প্রসঙ্গত, নিজের প্রথম মেয়াদে ট্রাম্প ইরানের সঙ্গে করা বহুপক্ষীয় পরমাণু চুক্তি—জয়েন্ট কমপ্রিহেনসিভ প্ল্যান অব অ্যাকশন (জেসিপিওএ)—থেকে একতরফাভাবে সরে আসেন। সেই চুক্তি অনুযায়ী ইরান তাদের কর্মসূচি সীমিত রাখতো, বিনিময়ে আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা শিথিল করা হয়েছিল।

এদিকে ট্রাম্প অভিযোগ করেছেন, ইরান গাজা যুদ্ধ শেষ করতে কাতারে হওয়া আলোচনায় হস্তক্ষেপ করেছে এবং হামাসকে নির্দেশ দিয়েছে। তবে এই দাবি সম্পর্কে তিনি বিস্তারিত কিছু বলেননি।
ইরান এখনও ট্রাম্পের সর্বশেষ মন্তব্যের আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া জানায়নি।