গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর ক্লাউড সুবিধা বন্ধ করল মাইক্রোসফট

ফিলিস্তিনি বেসামরিক নাগরিকের ফোন কলের ওপর নজরদারির অভিযোগে ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনীর (আইডিএফ) একটি ইউনিটের কিছু পরিষেবা বন্ধ করে দিয়েছে মাইক্রোসফট। ৯৭২+ ম্যাগাজিন ও হিব্রু ভাষার সংবাদপত্র লোকাল কলের যৌথ অনুসন্ধানের প্রতিক্রিয়ায় কোম্পানিটি এই সিদ্ধান্ত নেয়। খবর আলজাজিরার।
স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার (২৫ সেপ্টেম্বর) মাইক্রোসফটের ভাইস-চেয়ারম্যান ও প্রেসিডেন্ট ব্র্যাড স্মিথ কর্মীদের এই সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর গুপ্তচর সংস্থা (ইউনিট ৮২০০) তাদের অ্যাজুরে ক্লাউড প্ল্যাটফর্মে বিপুল নজরদারি তথ্য সংরক্ষণ করে কোম্পানির পরিষেবার শর্তাবলি লঙ্ঘন করেছে। নির্দিষ্ট ক্লাউড স্টোরেজ এবং এআই পরিষেবাসহ ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের কিছু সাবস্ক্রিপশন বাতিল করা হয়েছে।
মাইক্রোসফটের এই পদক্ষেপের ফলে সেনাবাহিনীর তিন বছরের নজরদারি কার্যক্রমের আকস্মিক অবসান ঘটল। সাংবাদিকদের অনুসন্ধানে জানা গেছে, ২০২১ সালে ইউনিট ৮২০০ মাইক্রোসফটের সিইও সত্য নাদেলার সঙ্গে একটি বৈঠকের পর অ্যাজুরে প্ল্যাটফর্মে সংবেদনশীল গোয়েন্দা তথ্য স্থানান্তরের জন্য চুক্তিবদ্ধ হয়েছিল। এই চুক্তি অনুযায়ী, তারা লাখ লাখ ফিলিস্তিনিদের ফোন কল সংগ্রহ এবং বিশ্লেষণের জন্য অ্যাজুরের প্রায় সীমাহীন স্টোরেজ ক্ষমতা ব্যবহার করার অনুমতি পেয়েছিল।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, এই ক্লাউড-ভিত্তিক সিস্টেমটি ইসরায়েলকে গাজায় মারাত্মক বিমান হামলা পরিচালনা করতেও সহায়তা করেছিল। এর আগে, মে মাসে মাইক্রোসফট স্বীকার করেছিল, তারা গাজা যুদ্ধের সময় ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর কাছে উন্নত এআই এবং ক্লাউড কম্পিউটিং পরিষেবা বিক্রি করেছে। তবে তখন তারা দাবি করেছিল, অভ্যন্তরীণ পর্যালোচনায় এমন কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি যে, এই প্রযুক্তি মানুষকে লক্ষ্যবস্তু করতে বা ক্ষতি করতে ব্যবহার করা হচ্ছে।

গাজা যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর এই প্রথম কোনো মার্কিন প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীকে পরিষেবা দেওয়া বন্ধ করল। তবে, এই সিদ্ধান্তটি আইডিএফেরর সঙ্গে মাইক্রোসফটের বৃহত্তর বাণিজ্যিক সম্পর্কে কোনো প্রভাব ফেলেনি। একজন মাইক্রোসফটের কর্মীর মতে, এই পদক্ষেপ একটি ‘অভূতপূর্ব জয়’ হলেও ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর সঙ্গে মাইক্রোসফটের বেশিরভাগ চুক্তি এখনও অক্ষুণ্ন রয়েছে।