ঘোষণা হতে চলছে শান্তিতে নোবেল, যে কারণে আশাবাদী ট্রাম্প

এ বছরের শান্তিতে নোবেল বিজয়ীর নাম ঘোষিত হবে আজ (১০ অক্টোবর)। বাংলাদেশ সময় দুপুর ৩টায় নরওয়েজিয়ান নোবেল কমিটি শান্তিতে নোবেল বিজয়ীর নাম ঘোষণা করবেন। এবার মোট ৩৩৮ জন প্রার্থী মনোনীত হয়েছেন। এর মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পও রয়েছেন।
নোবেল শান্তি পুরস্কারের ঘোষণা ঘনিয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গে এই পুরস্কার জেতার জন্য মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নিরলস প্রচারণাও তুঙ্গে উঠেছে। ক্ষমতা গ্রহণের পর থেকেই ট্রাম্প বলছেন, তিনি এই মর্যাদাপূর্ণ পুরস্কারের যোগ্য। তার প্রধান দাবি হলো— তিনি প্রেসিডেন্ট হিসেবে কমপক্ষে সাতটি যুদ্ধ সমাপ্ত করেছেন।
গত বুধবার (৮ অক্টোবর) ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে ২০ দফা শান্তি পরিকল্পনার প্রথম ধাপ হিসেবে যুদ্ধবিরতি চুক্তি ঘোষণার পর তিনি এই দাবি আরও এক ধাপ এগিয়ে নিয়েছেন। ট্রাম্পের দাবি, এই চুক্তির মধ্যস্থতার মাধ্যমে তিনি ‘অষ্টম যুদ্ধ’ শেষ করার কৃতিত্বের পথে রয়েছেন।
প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প যে সংঘাতগুলোতে মধ্যস্থতা বা বন্ধ করার দাবি করেন, সেগুলোর মধ্যে রয়েছে গাজা যুদ্ধ (ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে যুদ্ধবিরতির প্রথম ধাপ), ভারত ও পাকিস্তান (পারমাণবিক শক্তিধর দুই প্রতিবেশীর মধ্যে মে মাসের সংঘাত), ইসরায়েল ও ইরান, আর্মেনিয়া ও আজারবাইজান (নাগার্নো-কারাবাখ অঞ্চলের সংঘাত), এবং কোসোভো ও সার্বিয়া, কম্বোডিয়া ও থাইল্যান্ড, গণতান্ত্রিক কঙ্গো প্রজাতন্ত্র (ডিআরসি) ও রুয়ান্ডা, এবং মিশর ও ইথিওপিয়ার মধ্যেকার বিরোধ। ট্রাম্প বিশ্বাস করেন, এই কূটনৈতিক অর্জনগুলো তাকে পুরস্কারের জন্য যোগ্য করে তুলেছে।

ট্রাম্পের এই দাবির বিপরীতে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। আর্মেনিয়া, আজারবাইজান, ইসরায়েল ও পাকিস্তানসহ বেশ কিছু দেশ নোবেল শান্তি পুরস্কারের জন্য ট্রাম্পের মনোনয়নকে সমর্থন করেছে। এই দেশগুলোর দাবি, কিছু কিছু সংঘাতে মধ্যস্থতাকারী হিসেবে তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন।
তবে সমালোচকরা বলছেন, ট্রাম্পের দাবি করা কিছু সংঘাতের সমাপ্তিতে তার ভূমিকা প্রশ্নবিদ্ধ। বিশেষত, ভারত দৃঢ়ভাবে দাবি করছে, পাকিস্তানের সঙ্গে সংঘাতের অবসানে কোনো তৃতীয় পক্ষের (ট্রাম্পের) ভূমিকা ছিল না। অন্যদিকে, ইসরায়েল-ইরান সংঘাতের সময় যুক্তরাষ্ট্র নিজেই ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা চালিয়েছিল, যা তার ‘শান্তি স্থাপনকারী’ ভূমিকার সঙ্গে সাংঘর্ষিক।
যদিও নোবেল কমিটি সাধারণত আন্তর্জাতিক সহযোগিতা এবং টেকসই শান্তির জন্য কাজ করা প্রতিষ্ঠানগুলোর স্থায়িত্বকে অগ্রাধিকার দেয়, তবে ট্রাম্পের এই নিরলস প্রচার পুরস্কার ঘোষণার ঠিক আগে বিশ্বজুড়ে তীব্র জল্পনা জিইয়ে রেখেছে।