পরী মণির বিরুদ্ধে সাক্ষ্যগ্রহণের নতুন তারিখ নির্ধারণ
মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে করা মামলায় অভিনেত্রী পরী মণিসহ আরও দুজনের বিরুদ্ধে সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য নতুন তারিখ নির্ধারণ করেছেন আদালত। ঘোষিত তারিখ অনুযায়ী, আগামী ২৮ জুলাই এ মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ হবে।
আজ সোমবার (১ জুলাই) ঢাকার বিশেষ জজ-১০ আদালতের বিচারক মো. নজরুল ইসলাম এই আদেশ দেন। পরী মণির বিরুদ্ধে মাদক নিয়ন্ত্রণ আইনে করা মামলায় সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য দিন ধার্য ছিল আজ। এদিন পরী মণির পক্ষে হাজিরা দেন তার আইনজীবী নীলাঞ্জনা রিফাত সুরভী। এরপর আইনজীবী নীলাঞ্জনা রিফাত সুরভী মামলাটির উচ্চ আদালতের আদেশের কপি না আসায় সাক্ষ্যগ্রহণ পেছানোর জন্য সময়ের আবেদন করেন। এছাড়া অন্য দুই আসামি আদালতে হাজিরা দেন। এরপর আদালত পরবর্তী কার্যক্রমের জন্য ২৮ জুলাই দিন ধার্য করেন।
পরী মণির আইনজীবী নীলাঞ্জনা রিফাত সুরভী এনটিভি অনলাইনকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
মামলার নথি থেকে জানা যায়, গত বছরের ১৫ নভেম্বর ঢাকার মহানগর দায়রা জজ কে এম ইমরুল কায়েশ পরী মণিসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র আমলে নেন এবং মামলাটি ঢাকার বিশেষ জজ-১০-এ বদলির নির্দেশ দেন। এর আগে গত বছরের ৪ অক্টোবর আদালতে এ মামলায় অভিযোগপত্র জমা দেন পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) পরিদর্শক এবং মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা কাজী মোস্তফা কামাল।
গত বছরের ৪ আগস্ট সুনির্দিষ্ট তথ্যের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে পরী মণিকে তার বনানীর বাসা থেকে আটক করে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)। পরের দিন তার বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা করা হয়।
মামলার এজাহারে বলা হয়, ২০২১ সালের ৪ আগস্ট বাদীসহ র্যাব-১-এর সদস্যরা গুলশান-১ গোলচত্বরে অবস্থান করছিলেন। সে সময় বিকেল ৪টা ৫মিনিটে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানতে পারেন, বনানীর একটি বাসায় পরী মণি সহযোগী আশরাফুল ইসলাম দিপুর মাধ্যমে বিদেশি মদ সংগ্রহ করে নিজের বাসায় মজুত রেখেছেন। তখন তারা বাসায় অবস্থান করছেন। পরে বাসার পঞ্চমতলায় অভিযান চালিয়ে পরী মণির বাসার শয়নকক্ষ থেকে নারী র্যাব সদস্যদের সহায়তায় তাকে আটক করা হয়।
এজাহারে আরও বলা হয়, পরী মণির দেখানো মতে শয়নকক্ষের একটি কাঠের ফ্রেমের ভেতর থেকে বিদেশি মদ জব্দ করা হয়। এছাড়া শয়নকক্ষ থেকে একটি সাদা জিপারে রাখা চার গ্রাম আইস বা ক্রিস্টালমেথ জব্দ করা হয়। এক ব্লট এলএসডি মাদকও জব্দ করা হয়। চিত্রনায়িকা পরী মণির বাসা থেকে বিদেশি মদসহ অন্যান্য মাদকের আনুমানিক বাজারমূল্য দুই লাখ সাত হাজার টাকা। পরী মণি এসব মদ কবির নামের এক ব্যক্তির মাধ্যমে সংগ্রহ করে বাসায় রাখতেন।
এজাহার অনুযায়ী, পরী মণিকে জিজ্ঞাসাবাদ করে জানা যায়, তিনি প্রযোজক নজরুল ইসলাম রাজের কাছ থেকে মদ সংগ্রহ করতেন।
গত বছরের ৪ অক্টোবর চিত্রনায়িকা পরী মণিসহ তিন জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন সিআইডির পরিদর্শক এবং মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা কাজী মোস্তফা কামাল। সেই অভিযোগপত্রে তদন্ত কর্মকর্তা উল্লেখ করেছিলেন, পরি মণির বাসা থেকে জব্দ করা মাদকদ্রব্যের বৈধ কোনো কাগজপত্র ছিল না। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে জানা গেছে, ২০১৯-২০ অর্থবছরে পরী মণির নামে মদজাতীয় পানীয় সেবনের লাইসেন্স দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু ২০২০ সালের ৩০ জুন ওই লাইসেন্সের মেয়াদ শেষ হয়। পরী মণি বিভিন্ন স্থান থেকে এই মামলার দুই আসামি আশরাফুল ইসলাম ও কবির হোসেনের মাধ্যমে অবৈধ মাদকদ্রব্য সংগ্রহ করে বাসায় রেখেছিলেন। মাদকদ্রব্য রাখার বিষয়ে তিনি কোনো সন্তোষজনক জবাব দিতে পারেননি। এছাড়া পরী মণি তার ব্যবহৃত গাড়িটি মাদকদ্রব্য বহনের কাজে ব্যবহার করতেন।