কিশোরীর অনিয়মিত মাসিকে কী কী সমস্যা হয়?
মাসিক হচ্ছে নারীদের নিয়মিত শারীরবৃত্তীয় অবস্থা। কিন্তু অনেকেই অনিয়মিত মাসিকের সমস্যায় ভুগছেন। বিশেষ করে কিশোরীরা এই সমস্যায় বেশি ভুগেন। আজ আমরা একজন বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের কাছ থেকে কম বয়সি মেয়েদের অনিয়মিত মাসিকের সমস্যা সম্পর্কে বিস্তারিত জানব।
এনটিভির নিয়মিত স্বাস্থ্যবিষয়ক অনুষ্ঠান স্বাস্থ্য প্রতিদিন অনুষ্ঠানে কিশোরীর অনিয়মিত মাসিক নিয়ে কথা বলেছেন সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজে গাইনি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. কিশোয়ার পারভীন। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেছেন ডা. মুনা তাহসিন।
একজন কিশোরীর অনিয়মিত মাসিক হওয়া, এটি কখন আমরা অনিয়মিত বলব। এক্ষেত্রে কি কি সমস্যা হতে পারে, সঞ্চালকের এমন প্রশ্নের জবাবে ডা. কিশোয়ার পারভীন বলেন, উঠতি বয়সে প্রথম যখন মাসিক হয়, এটাকে এইজ অব ম্যানারকি (age of menarche) বলা হয়। এই সময়টা তার প্রিবায়োটিক শুরু হয়। এই সময় থেকে প্রাপ্তবয়স্ক পর্যন্ত যে সময়টা, এই সময়ের মধ্যে বেশির ভাগ মেয়েদের অনিয়মিত মাসিক হয়। যেমন : প্রথমে মাসিক শুরু হলো। এরপর আর দুই তিন মাস হচ্ছে না। হঠাৎ করে মাসিক শুরু হয়ে তারপর আর বন্ধ হচ্ছে না। সাত দিনের পরিবর্তে ১০ দিন, ১৫ দিন, এক মাস ও দেড় মাসও নিয়মিত হয়। যে কারণে ওই কিশোরী রোগী নিজে ও তার পরিবার এ বিষয়টা নিয়ে বেশি চিন্তিত থাকে। অত্যাধিক দুঃচিন্তায় ভোগেন এবং চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন তারা। এ নিয়ে ভবিষ্যত চিন্তায় উদ্বিগ্ন থাকেন তার পরিবার। এজন্য আমরা তাদের কাউন্সিলিং করি। এটা স্বাভাবিক বিষয় এবং ফিজিওলজিক্যাল সমস্যা। এটা কোনো প্যাথলজি অসুবিধা বা রোগ না। আস্তে আস্তে ওই কিশোরীর বয়স বাড়ার সাথে সাথে এটা ঠিক হয়ে যাবে।
আমরা জানি, মেয়েদের মাসিক নিয়ন্ত্রণ করে ওভুলেশন বা ডিম্বোস্ফোটন। গর্ভ হওয়া নিয়ন্ত্রণ করে হাইপোথ্যালামাস ও পিটুইটারি দুটো গ্রন্থি। আর ডিম্বাশয় থেকে হরমোনগুলো আসে এবং ডিম ফুটে। পুরো বিষয়টা নিয়ন্ত্রণ করে হাইপোথ্যালামাস ও পিটুইটারি গ্রন্থির মাধ্যমে। এটা আনুষাঙ্গিক পরিপক্ক হতে সময় লাগে। যে কারণে ২০-২২ বছর পর্যন্ত অনিয়মিত মাসিক হতে পারে। এটা নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার কোনো কারণ নেই।
কখন চিন্তিত হতে হবে, সঞ্চালকের এমন প্রশ্নের জবাবে ডা. কিশোয়ার পারভীন বলেন, রোগী যদি কয়েকবার চিকিৎসকের শরণাপন্ন হয় এবং তাদের সমস্যা ও অসুবিধা হচ্ছে, তখন তাদের কিছু ইভেস্টিগেশন করতে দেওয়া হয়। তার মধ্যে একটি হলো স্ত্রী প্রজনন তন্ত্রে বা রিপ্রোডাক্টটিভ সিস্টেমে আল্ট্রা সাউন্ড করে দেখা যে, তার ওভারিতে বা জরায়ুতে কেনো সমস্যা আছে কিনা। ওভারিতে কিছু কমন সমস্যা থাকে, যার মধ্যে পলিসিস্টিক ওভারিয়ান সিনড্রোম এই বয়স থেকে অনেকের শুরু হয়ে যায়। ওভারিতে আরো কিছু সমস্যার মধ্যে এন্ডোমেট্রিওসিস বা জরায়ুতে কোনো সমস্যা থাকতে পারে। এজন্য সাথে কিছু হরমোন প্রোফাইল করতে দেওয়া হয়। থাইরয়েডের সমস্যার কারণে কিছু অনিয়মিত মাসিক হতে পারে। প্রোল্যাকটিন লেভেল বেড়ে গেলে অনেক সময় অনিয়মিত মাসিক হতে পারে। এই রিপোর্টের উপর তদন্ত করে দেখার পর আমরা সিদ্ধান্তে আসি তার বা রোগীর এটা কী স্বাভাবিক ফিজিওলজি নাকি কোনো সমস্যা।
কিশোরীদের অনিয়মিত মাসিক সম্পর্কে আরও জানতে উপরের ভিডিওটি সম্পূর্ণ দেখুন। এ ছাড়া স্বাস্থ্য সম্পর্কিত বিভিন্ন বিষয়ে বিস্তারিত জানতে এনটিভি হেলথ ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন এবং জানুন বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ।