মাঝারি সাইজের ইলিশ বেশি পুষ্টিকর
কমবেশি সবারই ইলিশ মাছ পছন্দের। এটা যতটা সুস্বাদু, ততটাই পুষ্টিকর। আজ আমরা একজন পুষ্টিবিদের কাছ থেকে ইলিশের পুষ্টিগুণ সম্পর্কে জানব।
এনটিভির নিয়মিত স্বাস্থ্যবিষয়ক এক আয়োজনে ইলিশের পুষ্টিগুণ সম্পর্কে বলেছেন পুষ্টিবিদ সুরাইয়া নাজনীন তুলি। তিনি বলেন, অনেকের ধারণা, ইলিশে ফ্যাটের পরিমাণ বেশি। হ্যাঁ, আমি বলব ইলিশে ফ্যাটের পরিমাণ বেশি। কিন্তু সেটা ভালো ফ্যাট। অর্থাৎ পলি-আনস্যাচুরেটেড এবং মনো-আনস্যাচুরেটেড ফ্যাটের পরিমাণই বেশি। এটা শরীরের জন্য খুবই উপকারী।
পুষ্টিবিদ সুরাইয়া নাজনীন তুলি বলেন, মাঝারি সাইজের ইলিশ মাছ বেশি পুষ্টিকর। এক কেজির বেশি ইলিশ মাছে ফ্যাটের পরিমাণ বেশি, কিন্তু সেটা স্যাচুরেটেড ফ্যাট। ১০০ গ্রাম ইলিশ মাছে টোয়েন্টি ওয়ান পয়েন্ট প্রোটিন পাওয়া যায়, যা দৈনন্দিন খাবার তালিকার প্রোটিনের চাহিদা অনেক অংশই পূরণ করে থাকে। এ ছাড়া এ থেকে ২৬২ কিলোক্যালোরি পেয়ে থাকি।
তুলি বলেন, ইলিশ মাছে ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড থাকার কারণে এটি হার্টের জন্য বেশি উপকারী। এ ছাড়া এতে প্রয়োজনীয় বিভিন্ন এসেনসিয়ালস নিউট্রিয়েন্টস রয়েছে। যেমন—সেলেনিয়াম, ক্রোমিয়াম, ফসফরাস, ক্যালসিয়াম, ভিটামিন এ, ডি, নায়াসিন, ভিটামিন বি১২... আরও অন্যান্য পুষ্টি উপাদান, যা শরীরের জন্য খুবই উপকারী। ইলিশ মাছে আর্জেনিং নামক একটি উপাদান থাকার কারণে এটি ডিপ্রেশন ও স্ট্রেস থেকে মানুষকে দূরে রাখে।
এ পুষ্টিগুণ বলেন, বাচ্চাদের ক্ষেত্রে ইলিশ মাছ পাওয়ার বুস্ট হিসেবে কাজ করে। এটা বাচ্চাদের মনোযোগ বৃদ্ধিতে সহায়তা করে। এ ছাড়া দেখা যায় এএইচডি বাচ্চাদের ক্ষেত্রে ব্রেইন ডেভেলপমেন্টে সহায়ক ভূমিকা পালন করে থাকে। গর্ভবতী মায়েদের ক্ষেত্রে দেখা যায়, বাচ্চার বৃদ্ধির জন্য, বাচ্চার হাড়ের গঠনের জন্য ক্যালসিয়াম ও ফসফরাস খুবই প্রয়োজনীয়। ইলিশ মাছে যথেষ্ট পরিমাণ ক্যালসিয়াম ও ফসফরাস রয়েছে। এর পরিমাণ প্রায় ১৮০ মিলিগ্রাম। খুব কম খাবারেই ভিটামিন ডি পাওয়া যায়। ইলিশ মাছে ভিটামিন ডি রয়েছে... ইলিশে আয়োডিনের পরিমাণ খুব ভালো থাকায় থাইরয়েড গ্ল্যান্ড ও শ্বাসনালীর বিভিন্ন প্রদাহ থেকে রক্ষা করে। এ ছাড়া এতে যথেষ্ট পরিমাণে জিঙ্ক থাকায় বাড়ন্ত শিশু-কিশোরীদের ক্ষেত্রে অনেক উপকার সাধন করে থাকে। ডায়াবেটিস রোগীদের ক্ষেত্রে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখতে সহায়ক ভূমিকা পালন করে। অতএব এখন থেকে আমরা ইলিশ মাছ খাব এবং এ থেকে অনেক পুষ্টি উপাদান পেয়ে থাকি। এর দ্বারা আমাদের সুস্থ থাকা সম্ভব।