কয়লা দিয়ে দাঁত মাজা কি ভালো?
উজ্জ্বল ঝকঝকে দাঁত সবারই কাম্য। আর তাই দাঁতের যত্নে যুগ যুগ ধরে ব্যবহৃত হয়ে আসছে বিভিন্ন দন্ত সামগ্রী। গাছের পাতা, কচি ডালপালা, কয়লা, তুষের ছাই ইত্যাদি দিয়ে গ্রামের লোকজন অনেক আগে থেকেই দাঁত মেজে আসছে। এক সময় কয়লা ও ছাইয়ের পরিমার্জিত সংস্করণ হিসেবে এলো দাঁতের মাজন।
আধুনিক জীবনে দাঁতের যত্নে টুথপেস্ট ব্যবহার করেন অনেকেই। তারপরও আর্থিক অসঙ্গতির কারণে এ দেশের শতকরা প্রায় ৭০ ভাগ লোকই টুথপেস্ট ব্যবহার করে না বলে জানিয়েছেন অনেক দন্ত বিশেষজ্ঞ।
আগেই বলে রাখি, দাঁত পরিষ্কারের জন্য টুথপেস্টকেই আধুনিক উপকরণ হিসেবে ধরা যায়। এ ছাড়া গাছের পাতা কিংবা কচি ডাল ব্যবহার করা যায়। তবে টুথপেস্ট ও ব্রাশ দিয়ে দাঁত বেশি ভালোভাবে পরিষ্কার করা যায়, ডাল ও পাতা ব্যবহার করে ব্রাশের সুবিধাটুকু পাওয়া যায় না- তাই এতে দাঁত ভালো পরিষ্কার হয় না।
টুথপেস্ট ব্যবহারে সঙ্গতি থাকা সত্ত্বেও অনেকে দাঁতের যত্নে ব্যবহার করেন কয়লা, ছাই কিংবা দাঁতের মাজন। এসব দিয়ে দাঁত মাজলে দাঁত ধবধবে পরিষ্কার হয় ঠিকই, কিন্তু দাঁতের এনামেল (বহিরাবরণ) মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এ ক্ষেত্রে সাময়িকভাবে কিছুদিন দাঁত সাদা ধবধবে থাকে। তবে কয়েক মাস ধরে কয়লা, ছাই, দাঁতের মাজন দিয়ে দাঁত মাজলে দাঁতে বাইরের চকচকে আবরণ পড়ে এবং দাঁতের দেয়ালে গর্তের সৃষ্টি হয়। একপর্যায়ে দাঁত তার উজ্জ্বলতা হারিয়ে হলুদাভ হয়ে পড়ে এবং দাঁতের স্থায়ীভাবে উজ্জ্বলতা হারায়। কাজেই দাঁতের সাময়িক শুভ্রতার জন্য কয়লা, ছাই কিংবা দাঁতের মাজন দিয়ে দাঁত মাজা ঠিক নয়। ইতিমধ্যে যাদের দাঁত হলদেটে হয়ে রয়েছে কিংবা ক্ষয়িষ্ণু অবস্থায় রয়েছে,তারা একটু অতীতকে মনে করলেই খুঁজে পাবেন, অতীতে তারা বেশ কিছু সময় এসব প্রচলিত ক্ষতিকর উপকরণ দিয়ে দাঁত মেজেছেন বা মেজে যাচ্ছেন।
তবে জন্মগত কারণেও দাঁত হলদেটে হতে পারে। সাধারণত ফর্সা লোকের দাঁত হলদেটে বা কম সাদা এবং কালো লোকদের দাঁত বেশি সাদা থাকে। এটি সম্পূর্ণই জন্মগত ব্যাপার। এ ক্ষেত্রে মাজন ব্যবহার করে দাঁত উজ্জ্বল করা যাবে না।
লেখক : সহযোগী অধ্যাপক হলিফ্যামিলি রেড ক্রিসেন্ট মেডিকেল কলেজ