চুলপড়া সমস্যার দিকে যাচ্ছে, বুঝবেন কীভাবে?
একজন মানুষের সাধারণত প্রতিদিন ১০০ থেকে ১৫০টি চুল পড়ে। তাহলে কখন চুলপড়াকে অস্বাভাবিক বলা হয় বা কখন এটি সমস্যার হয়ে দাঁড়ায়?
এ বিষয়ে এনটিভির নিয়মিত আয়োজন স্বাস্থ্য প্রতিদিন অনুষ্ঠানের ২৮৮৩তম পর্বে কথা বলেছেন ডা. জাহেদ পারভেজ। বর্তমানে তিনি শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের চর্ম ও যৌন রোগ বিভাগে পরামর্শক হিসেবে কর্মরত।
প্রশ্ন : চুল পড়ার বিষয়টি কখন সমস্যার?
উত্তর : আসলে আমাদের দৈনন্দিন জীবনে ১০০ থেকে ১৫০ থেকে চুল পড়তেই পারে, খুব স্বাভাবিক নিয়মেই। এরপরও খেয়াল রাখতে হবে যে পুনরায় বৃদ্ধি হচ্ছে কি না। একজন মানুষের চুল পড়ছে দেড়শ, তবে পুনরায় যদি না হয়, এমনিতেই দেখা যাবে তার টাক হওয়ার সমস্যা শুরু হয়ে গেছে। এই কারণে কোনো মানুষের জন্য দেড়শ চুল পড়াটা স্বাভাবিক হলেও পুনরায় হওয়ার বিষয়টি যদি ভালোভাবে না হয়, নতুন করে চুল না গজায়, তাহলে একে আমরা স্বাভাবিক বলতে পারছি না। তখনই একে সমস্যা হিসেবে আমরা চিহ্নিত করি।
প্রশ্ন : একজন মানুষের চুল পড়াটা যে সমস্যার দিকে যাচ্ছে, সেটি বোঝার জন্য কী পরামর্শ?
উত্তর : বোঝার জন্য সবচেয়ে সহজ উপায় রয়েছে। একে আমরা এয়ারপুল টেস্ট বলি। এক গোছা চুল ধরে একটা মৃদু টান দিলে সব চুলই চলে আসে। তাহলে বুঝতে হবে ক্লাইন্ট সমস্যার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। এমনিতেও একজন মানুষ চুল আঁচড়ানোর সময় বা হাত দিয়ে অনুভব করতে পারবেন, আগে যেমন ভারী মনে হতো স্কাল্পে, এখন অনেকটাই পাতলা হয়ে যাচ্ছে। আবার কারো কারো ক্ষেত্রে তাকালেও দেখা যায় স্কাল্পটা দেখা যাচ্ছে। যদি স্কাল্প ধরে বেশি মনে হয়, তখনই তার একটি ভালো পরামর্শ প্রয়োজন। ডাক্তারের কাছে যাওয়া উচিত। এটি নির্ভর করে আসলে বয়স বৃদ্ধির সঙ্গে। পঁয়তাল্লিশের ওপরে বয়স হয়ে গেলে একজন মানুষের চুল বেশি পড়তে পারে। মাথার তালু দেখা যেতে পারে। সেটি অতিরিক্ত না হলে আমার মনে হয় চিকিৎসার প্রয়োজন নেই। তবে তরুণ বয়সের একটি ছেলে বা মেয়ের যখন বুঝবে যে অনেক চুল পড়ে যাচ্ছে, মাথার তালু দেখা যাচ্ছে তখন অবশ্যই সেটি ঝুঁকিপূর্ণ।
এর পিছনে কারণ খুঁজতে গিয়ে আমরা দেখি বেশিরভাগ রোগীর হরমোনাল বা জিনগত প্রভাব থাকে। আজকাল আমরা বেশি পেয়ে যাচ্ছি জীবন যাপনের পরিবর্তন। আমি চুলপড়া রোগীর যত জনকে পরীক্ষা করি, ভিটামিন ‘ডি’এর অভাব , ভিটামিন ‘বি ১২’ -এর অভাব, এটা আমাদের জীবন যাপনের ধরনের জন্য আমরা পাচ্ছি না।
সকালে ঘুম থেকে ওঠে একটু হাঁটতে পারলে ভালো লাগত। ভিটামিন বি ১২ আমরা বেশিরভাগ খাবারে পাচ্ছি না। এই দুটি জিনিস চুল ধরে রাখার জন্য অতি প্রয়োজন। এ ছাড়া ও সিরাম ফেরিটিনের মাত্রাটা আমরা পরীক্ষা করে থাকি। অনেকে স্লিম থাকার জন্য ডায়েট করছে, কসমেটিক এপ্রোচ তারা করে, হেয়ার স্টাইলিং, চুলে জেল লাগানো, তেল লাগানো, স্ট্রেট করা, রিবন্ডিং করা- এগুলো করেন। এগুলো চুলপড়ার জন্য বড় একটি কারণ।