পরোক্ষ ধূমপানের ক্ষতি কী?
ধূমপান না করলেও ধূমপানের সময় ধূমপায়ীর পাশে থাকলে একে পরোক্ষ ধূমপান বলা হয়। এ ধরনের বিষয় থেকেও ক্ষতি হতে পারে।
এ বিষয়ে এনটিভির নিয়মিত আয়োজন স্বাস্থ্য প্রতিদিন অনুষ্ঠানের ২৮৮৪তম পর্বে কথা বলেছেন ডা. ইকবাল হাসান মাহমুদ। বর্তমানে তিনি ইউনাইটেড হাসপাতালের বক্ষব্যাধি বিভাগের জ্যেষ্ঠ পরামর্শক হিসেবে কর্মরত।
প্রশ্ন : পরোক্ষ ধূমপান সম্পর্কে বলুন?
উত্তর : আপনি ধূমপান করছেন না। আমি করছি। তবে আমার অপরাধ আপনাকে পাঁচ গুণ বেশি বইতে হবে। আমি তো ধূমপায়ী। তবে আপনি পরোক্ষ ধূমপায়ী। আমার পাশে বসে থাকার জন্য ধোঁয়াটা কিন্তু যাচ্ছে। একটি গবেষণা নিউইয়র্কে হয়েছে, দেখা যাচ্ছে হার্ট অ্যাটাকের একজন রোগী, নিজে ধূমপান করেনি, তবে ধূমপায়ীর পাশে দীর্ঘক্ষণ বসে ছিল। পাশের যে ডেস্কে বসা সে সব সময় ধূমপান করছে। এর জন্য তার হার্ট অ্যাটাক হয়েছে। তাকে বলা হয়েছে, ‘তুমি কি ধূমপান করেছ?’ সে বলেছে, ‘আমি ধূমপান করিনি। তবে ধূমপায়ীর পাশে বসেছিলাম।’
প্রতিটি এয়ারপোর্টে তো ধূমপায়ীর জন্য আলাদা ঘর থাকে। পাবলিক প্লেসে ধূমপান করা যায় না। হংকংয়ের এয়ারপোর্টে ধূমপানের জন্য যে ঘর করা হয়েছে, একে নাম দেওয়া হয়েছে সুইসাইডাল রুম। ধূমপান বিষয়টিই আসলে আত্মহত্যার শামিল। এয়ারপোর্টে যে ধূমপানের কক্ষ করা হয়েছে, সেখানে যে মানুষ যায়, তার দিকে মানুষ খুব নিচুভাবে তাকায়।
ফুসফুসের ক্যানসারের ক্ষেত্রে ধূমপান হলো একটি বড় কারণ। আরেকটি কারণ হলো পরিবেশদূষণ। পরিবেশকে আমাদের সুন্দর করতে হবে। যেকোনো মূল্যে যানজট কমাতে হবে। গাড়ির ফিটনেসকে আরো শক্তিশালী করতে হবে। কালো ধোঁয়া নিঃসরণ করে এমন গাড়িগুলো সিজ করতে হবে। মিল-কারখানা, ইটের খোলাকে এমনভাবে স্থাপন করতে হবে যে ধোঁয়াগুলো যেন অনেক ওপরে উঠে যায় এবং মানুষকে যেন ক্ষতিগ্রস্ত না করে। মানুষের নাক দিয়ে যেন সেসব ধোঁয়া না যায়।
এমনিতেই ঢাকার বাতাস অত্যন্ত খারাপ। সুতরাং আমাদের নির্মল বাতাসের সন্ধানে সবাইকে কাজে লাগতে হবে। অনেক দেশে মানুষ ভলান্টিয়ারি কাজ করছে নির্মল বাতাস তৈরি করার জন্য। আমরা যদি প্রত্যেকের আঙিনায় গাছ বুনি, গাছ থেকে আমরা অক্সিজেন পাব। গাছ বায়ুদূষণগুলো শুষে নেবে। কার্বন ডাইঅক্সাইডকে শুষে নেবে। প্রচুর অক্সিজেন পাব আমরা। আমাদের প্রচুর গাছ বুনতে হবে। ঢাকা থেকে অফিসগুলোকে বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে দেওয়া উচিত।