বিশ্ব যক্ষ্মা দিবস : যক্ষ্মা রোগের লক্ষণ কী?
আজ বিশ্ব যক্ষ্মা দিবস। একটা সময় বলা হতো, ‘যার হয় যক্ষ্মা, তার নাই রক্ষা’। তবে এখন ধারণাটি অনেক বদলেছে। এরপরও যক্ষ্মা হচ্ছে। কারণ, টিবি বা যক্ষ্মা একটি মারাত্মক সংক্রামক বা ছোঁয়াচে রোগ।
এই রোগ Mycobacterium tuberculosis (Mtb) এর মাধ্যমে প্রাথমিকভাবে ফুসফুসকে আক্রান্ত করে মানব শরীরে ছড়ায়। বর্তমানে বিশ্বে টিবি সংক্রমণে মানুষের মৃত্যুর হার দ্বিতীয় স্থানে। যক্ষ্মা দক্ষিণ – পূর্ব এশিয়ার প্রচলিত রোগ। এর মধ্যে ২২ টি ঝুঁকিপূর্ণ দেশ রয়েছে যক্ষ্মা রোগের জন্য।
যক্ষ্মা বা টিবি রোগের কারণ
যক্ষ্মা এমন একটি রোগ যেটা হাঁচি, কাশি ইত্যাদির মাধ্যমে ছড়ায়। আমাদের দৈনন্দিন জীবনে প্রতিটি পরিবারে অনেক লোক একসঙ্গে বসবাস করে। একজন আক্রান্ত হলে পরিবারের অন্যান্য লোকও আক্রান্ত হতে পারে। ঠিক এই জন্যই প্রতি বছর যক্ষ্মা বা টিবির নতুন নতুন রোগী তৈরি হচ্ছে।
টিবি বা যক্ষ্মা রোগের লক্ষণ
যক্ষ্মা বা টিবি রোগের প্রধান লক্ষণগুলো হলো :
• সাধারণত তিন সপ্তাহের বেশি সময় ধরে কাশি ও জ্বর।
• কাশির সঙ্গে কফ এবং রক্ত আসা।
• বুকেব্যথা অথবা শ্বাস নেয়ার সময় অথবা কাশির সময় ব্যথা হওয়া।
• ওজন কমে যাওয়া।
• শারীরিক দুর্বলতা ক্ষুধামান্দ্য বা খাদ্যে অরুচি, অবসাদ অনুভব করা।
টিবি বা যক্ষ্মার প্রকারভেদ
যক্ষ্মা বা টিবি দুই প্রকার
১) ফুসফুসের যক্ষ্মা ,
২) ফুসফুসবহির্ভূত যক্ষ্মা।
এর মধ্যে ৮৫ শতাংশ হলো ফুসফুসের যক্ষ্মা আর ১৫ শতাংশ অন্যান্য যক্ষ্মা। জ্বর সাধারণত দুপুরের পর আসে। এই জ্বর অল্প জ্বর। সাধারণত ১৫ থেকে ৪০ বয়সের লোকরা বেশি আক্রান্ত হয়ে থাকে। ফুসফুসের যক্ষ্মার সময়ে হাঁচি হবে, কাশি হবে এবং অল্প জ্বর থাকবে। ওজন কমে যাবে, তার সঙ্গে খাওয়ার রুচি কমে যাবে। এই ক্ষেত্রে অনেক সময় কাশির সঙ্গে রক্ত থাকতে পারে, আবার নাও পারে।
যক্ষ্মা রোগের জীবাণু যেভাবে ছড়ায়
যক্ষ্মা রোগীর প্লেট, গ্লাস, বিছানা আলাদা করে দেওয়ার দরকার নেই। কারণ, বাতাসের মাধ্যমে যক্ষ্মা রোগের জীবাণু ছড়ায়। এ রোগে আক্রান্ত ব্যক্তির হাঁচি বা কাশির মাধ্যমে রোগের জীবাণু বাতাসে মিশে যক্ষ্মা রোগের সংক্রমণ ঘটে। এটি যেহেতু হাঁচি বা কাশির মাধ্যমে ছড়ায়, তাই যার এ রোগ রয়েছে তাকে কিছু বিষয়ে সতর্ক হতে হবে। যেমন- হাঁচি বা কাশির সময় মুখে রুমাল দেওয়া, হাত দিয়ে মুখ ঢাকা অথবা একদিকে সরে কাশি দিতে হবে। যেখানে সেখানে থুতু বা কফ ফেলা যাবে না। আক্রান্ত ব্যক্তির মুখের কাছাকাছি গিয়ে কথা বললে এ রোগের জীবাণু ছড়াতে পারে।
লেখক : সভাপতি, বিশুদ্ধ খাদ্য চাই এবং সহকারী অধ্যাপক, গণস্বাস্থ্য সমাজভিত্তিক মেডিকেল কলেজ, সাভার, ঢাকা।