উচ্চ রক্তচাপের ওষুধ খেতে ভীতি?
অনেকে উচ্চ রক্তচাপের ওষুধ খেতে ভয় পান। ভাবেন, একবার খেলে বোধ হয় সারাজীবনই ওষুধ খেতে হবে। ওষুধ সম্পর্কে এই ভীতির বিষয়ে এনটিভির নিয়মিত আয়োজন স্বাস্থ্য প্রতিদিন অনুষ্ঠানের ২৮৯৪তম পর্বে কথা বলেছেন অধ্যাপক ফয়জুল ইসলাম চৌধুরী।
বর্তমানে তিনি ঢাকা মেডিকেল কলেজের মেডিসিন বিভাগে ইউনিট প্রধান ও অধ্যাপক হিসেবে কর্মরত।
প্রশ্ন : অনেকে উচ্চ রক্তচাপের ওষুধ খেতে চায় না। ভয় পায়। ভাবে, উচ্চ রক্তচাপের ওষুধ একবার খেলে সারা জীবন খেতে হবে। এই বিষয়ে আপনার মতামত কী?
উত্তর : রোগীরা কয়েকটি বিষয় বলে। একটি হলো, আমারতো প্রেশার, তবে আমার তো সমস্যা হয় না। আমার তো কোনো কষ্ট হয় না। সাধারণত কষ্টগুলোই রোগীদের চিকিৎসকের কাছে নিয়ে আসে। বাড়ির ভেতরে ধরেন ৮-১০টি কুকুর বসে আছে। কুকুরগুলো কাউকে কামড়াল না। ওখানে যারা আসবে, তাদের কোনো সমস্যা নেই। তবে যদি একটি কুকুরও কামড়ায় তাহলে সমস্যা। এই ধরনের সমস্যা রোগীদের চিকিৎসকের কাছে নিয়ে আসে। ১০০ জন উচ্চ রক্তচাপে ভোগা রোগীর মধ্যে ৫০ জনেরই কোনো সমস্যা থাকে না। বাকি ৫০ জন রোগীর মাথাব্যথা, ঘাড়ব্যথা এগুলো থাকে। কিন্তু সমস্যা থাকুক বা না থাকুক, সেই উচ্চ রক্তচাপ আপনার গায়ে ক্ষতি করবে। আপনাকে না জানিয়ে সে আপনার রক্তনালির ক্ষতি করবে। যখন আপনি বুঝতে পারবেন, তখন অনেক কিছু করার থাকবে না। আমি বলি, ‘কথা না বলিব, নীরবে চলিব, ঘটাইব কত অঘটন, তুমি কি সেই জানা অজানার ঘাতকব্যাধি হাইপারটেনশন’। কুকুরটি হয়তো চুপ করে বসে আছে, এক সময় আপনাকে কামড় দেবে। তাই লক্ষণ থাকুক বা না থাকুক যদি উচ্চ রক্তচাপ হয়, তার চিকিৎসা নিতে হবে। ওষুধ দিয়ে চিকিৎসা নিতে হবে। ওষুধ ছাড়াও চিকিৎসা রয়েছে। সেটি দিয়ে চেষ্টা করবেন যে নিয়ন্ত্রণ করা যায় কি না। তবে সেটি না হলে অবশ্যই ওষুধ খেতে হবে।
অনেকে বলে যে আমি ওষুধ খেলেত সারাজীবন খেতে হবে? আমরা যখন ছোট ছিলাম তখন দেখেছি ওষুধের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়ার কারণে মানুষ রক্তচাপের ওষুধ খেত না। মাথা ঘোরায়, হাঁটতে পারে না- এ ধরনের সমস্যা হতো। কিন্তু এখন সে যে ওষুধ খাচ্ছে সে টেরই পাবে না। এখন ওষুধে তেমন কোনো পার্শ্ব প্রতিক্রিয়াই নেই। ওষুধ খেয়ে রক্তচাপকে নিয়ন্ত্রণ করার মাধ্যমে নিরাপদ থাকা, এটা ভালো? না কি ওষুধ না খেয়ে সব সময় রক্তচাপ নিয়ে ঝুঁকিতে থাকা,সেটা ভালো? প্রথমটিই ভালো। ওষুধ খেয়ে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে আপনি নিরাপদ থাকবেন। ওষুধের বিষয়ে অবশ্যই ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গী হতে হবে।