একপেশে ম্যাচে অনায়াস জয়ে ফাইনালে নিউজিল্যান্ড

নিউজিল্যান্ড রান পাহাড়ে চড়ার পর দক্ষিণ আফ্রিকার পক্ষে বাজি ধরার লোক ছিল না বললেই চলে। প্রোটিয়াদের জিততে হতো রেকর্ড রান তাড়া করে। সেটি তারা পারেনি। চ্যাম্পিয়নস ট্রফির দ্বিতীয় সেমি ফাইনালে বুধবার (৫ মার্চ) মুখোমুখি হয় নিউজিল্যান্ড ও দক্ষিণ আফ্রিকা। প্রোটিয়াদের কোনো সুযোগ না দিয়ে অনায়াসে জয় তুলে নেয় কিউইরা। নিউজিল্যান্ডের জয়ের ব্যবধান ৫০ রানের। আগামী ৯ মার্চ ফাইনালে নিউজিল্যান্ডের প্রতিপক্ষ ভারত।
লাহোরের গাদ্দাফি স্টেডিয়ামে টসে জিতে আগে ব্যাটিং বেছে নেয় নিউজিল্যান্ড। চ্যাম্পিয়নস ট্রফির ইতিহাসে এক ম্যাচে দলীয় সর্বোচ্চ রানের পুঁজি গড়ে তারা। ৫০ ওভারে ৬ উইকেটে করে ৩৬২ রান। জবাবে ৫০ ওভারে ৯ উইকেটে ৩১২ রানে থামে দক্ষিণ আফ্রিকা।
বড় লক্ষ্য তাড়ায় ২০ রানে প্রথম উইকেট হারায় দক্ষিণ আফ্রিকা। ১২ বলে ১৭ রান করে রায়ানি রিকেলটন ফেরেন ম্যাট হেনরির শিকার হয়ে। প্রোটিয়া অধিনায়ক টেম্বা বাভুমা তুলে নেন অর্ধশতক। ৭১ বলে ৫৬ রানের ইনিংসটি অবশ্য মেটায়নি সময়ের চাহিদা। কিউই অধিনায়ক মিচেল স্যান্টনারের বলে আউট হনে বাভুমা। এরপর রান তাড়ার মানসিকতা নিয়ে চেষ্টা করেন রাসি ফন ডার ডুসেন ও এইডেন মার্করাম। ৬৬ বলে ৬৯ করা ডুসেনকে বিদায় করেন স্যান্টনার। ২৯ বলে ৩১ করে রাচিন রবীন্দ্রের বলে ফিরতি ক্যাচ দেন মার্করাম।
প্রোটিয়াদের ভরসা হয়ে ছিলেন দুজন। হেনরিখ ক্লাসেন ও ডেভিড মিলার। ক্লাসেনকে শুরু করতে দেওয়ার আগেই সাজঘরে ফেরান স্যান্টনার। মাত্র ৩ রান আসে ক্লাসেনের ব্যাট থেকে। তবে, মিলার খেলে গেছেন আপন ঢংয়ে। একা একাই লড়ে গেছেন। তার ব্যাট থেকে আসে দুর্দান্ত এক সেঞ্চুরি। ৬৭ বলে ১০টি চার ও ৪টি ছক্কায় ১০০ রানে অপরাজিত থাকেন মিলার।
নিউজিল্যান্ডের পক্ষে স্যান্টনার নেন ৩ উইকেট। ২টি করে উইকেট পান হেনরি ও গ্লেন ফিলিপস।
এদিকে, আগে ব্যাটিং বেছে নেওয়া নিউজিল্যান্ডের শুরুটা হয়েছে দ্রুতগতির। উইল ইয়ং ও রাচিন রবীন্দ্র মিলে যোগ করেন ৪৭ বলে ৪৮ রান। ২৩ বলে ২১ রান করে লুঙি এনগিদির শিকার হন ইয়ং। রাচিন অব্যাহত রেখেছেন আইসিসির ইভেন্টে নিজের সাফল্য। ওয়ানডাউনে নামা কেইন উইলিয়ামসনের সঙ্গে ১৬৪ রানের জুটিতে গড়েন কিউইদের বড় পুঁজির ভিত।
বড় ম্যাচে আবারও নিজেকে প্রমাণ করলেন রাচিন। তুলে নিলেন শতরান। ১০১ বলে ১৩টি চার ও ১ ছক্কায় ১০৮ রান করে কাগিসো রাবাদার বলে বিদায় নেন রাচিন। বড় মঞ্চের তারকা উইলিয়ামসনও পেয়েছেন সেঞ্চুরির দেখা। ৯৪ বলে ১০টি চার ও ২ ছক্কায় ১০২ রান করে উইয়ান মাল্ডারের বলে বিদায় নেন উইলিয়ামসন।
বাকি কাজটা করেন ডেরিল মিচেল ও গ্লেন ফিলিপস। প্রোটিয়া বোলারদের তুলোধুনা করে ন দুজনই। ৩৭ বলে ৪৯ করেন মিচেল। ফিলিপস ছিলেন আরও আগ্রাসী। ২৭ বলে ৬টি চার ও ১ ছক্কায় ৪৯ রানে অপরাজিত থাকেন ফিলিপস। কিউইরা পায় চ্যাম্পিয়নস ট্রফির ইতিহাসের সবচেয়ে বড় দলীয় সংগ্রহের দেখা।
প্রোটিয়াদের পক্ষে লুঙি ৩টি উইকেট নিলেও, ১০ ওভারে দেন ৭২ রান। ৭০ রানে ২ উইকেট পান রাবাদা। মাল্ডার নেন একটি।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
নিউজিল্যান্ড : ৫০ ওভারে ৩৬২/৬ (ইয়ং ২১, রাচিন ১০৮, উইলিয়ামসন ১০২, মিচেল ৪৯, লাথাম ৪, ফিলিপস ৪৯*, ব্রেসওয়েল ১৬, স্যান্টনার ২*; জেনসেন ১০-০-৭৯-০, লঙি ১০-০৭২-৩, রাবাদা ১০-১-৭০-২, মাল্ডার ৬-০-৪৮-১, মহারাজ ১০-০-৬৫-০, মার্করাম ৪-০-২৩-০)
দক্ষিণ আফ্রিকা : ৫০ ওভারে ৩১২/৯ (রিকেলটন ১৭, বাভুমা ৫৬, ডুসেন ৬৯, মার্করাম ৩১, ক্লাসেন ৩, মিলার ১০০*, মাল্ডার ৮, জেনসেন ৩, মহারাজ ১, রাবাদা ১৬, লুঙি ১* ; হেনরি ৭-০-৪৩-২, জেমিসন ৭-১-৫৭-০, ও’রোর্ক ৮-০-৬৯-০, ব্রেসওয়েল ১০-০-৫৩-১, স্যান্টনার ১০-০-৪৩-৩, রাচিন ৫-০-২০-১, ফিলিপস ৩-০-২৭-২)
ফলাফল : নিউজিল্যান্ড ৫০ রানে জয়ী।