আইসিসির সভায় যেসব সিদ্ধান্ত নেওয়া হলো
দুবাইয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিলের (আইসিসি) ত্রৈমাসিক সভার শেষ দিন ছিল গতকাল শুক্রবার (৭ নভেম্বর)। আইসিসি সদর দপ্তরে অনুষ্ঠিত এই বোর্ড সভায় নারী ক্রিকেট ও অলিম্পিক নিয়ে বড় দুটি সিদ্ধান্ত এসেছে। এছাড়া ক্রিকেটের জনপ্রিয়তা বাড়াতে আরও বেশকিছু উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। তবে পিসিবি চেয়ারম্যান মহসিন নাকভি সেখানে উপস্থিত থাকলেও ভারতের কাছে এশিয়া কাপের ট্রফি হস্তান্তরের বিষয়ে কোনো সমাধান আসেনি।
২০২৯ সালের নারী ওয়ানডে বিশ্বকাপে অংশ নেবে ১০ দল। আর ২০৩২ সালের ব্রিসবেন অলিম্পিকে ক্রিকেট অন্তর্ভুক্তি নিয়ে আলোচনা শুরু করেছে আইসিসি।
আইসিসি জানিয়েছে, ২০২৫ সালের নারী বিশ্বকাপের সাফল্যের পর ২০২৯ আসরে দলের সংখ্যা বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ২০০০ সাল থেকে এতদিন পর্যন্ত নারী ওয়ানডে বিশ্বকাপে আটটি দল খেলত। ২০২৯ সালের আসরে খেলবে ১০ দল, হবে মোট ৪৮টি ম্যাচ। ২০২৫ সালে ম্যাচ ছিল ৩১টি।
এছাড়া আগামী বছর নারী টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপেও দল বাড়ছে। আগের আসরে ১০ দল অংশ নিলেও এবার খেলবে ১২টি দল। আইসিসি জানায়, সাম্প্রতিক নারী বিশ্বকাপে প্রায় তিন লাখ দর্শক মাঠে উপস্থিত ছিলেন, যা নারী ক্রিকেট ইতিহাসে রেকর্ড। বিশ্বজুড়ে প্রায় ৫০ কোটি দর্শক টিভি ও অনলাইনে ম্যাচ দেখেছেন।
আইসিসি নারী ক্রিকেট কমিটির নতুন সদস্যদের নিয়োগ অনুমোদন করেছে বোর্ড। নতুন সদস্য হিসেবে নিযুক্ত হয়েছেন অ্যাশলে ডি সিলভা, মিতালি রাজ, আমোল মুজুমদার, বেন সোয়ার, শার্লট এডওয়ার্ডস ও সালা স্টেলা সিয়ালে–ভায়া।
একই সভায় এলএ–২০২৮ অলিম্পিক নিয়েও আলোচনা হয়। আইসিসি জানায়, লস অ্যাঞ্জেলেস অলিম্পিকে মোট ২৮টি খেলা অনুষ্ঠিত হবে, যার মধ্যে থাকবে পুরুষ ও নারী ক্রিকেট—দুই বিভাগেই ছয়টি দল করে অংশ নেবে। এশিয়া, আফ্রিকা, আমেরিকা, ইউরোপ ও ওশেনিয়া থেকে একটি করে দল এবং আয়োজক যুক্তরাষ্ট্র এই প্রতিযোগিতায় থাকবে। বাকি এক দল আসবে বাছাই পর্ব থেকে। খেলা শুরু হবে ১২ জুলাই ২০২৮ সালে, লস অ্যাঞ্জেলেসের বাইরে নতুন নির্মিত ফেয়ারগ্রাউন্ডস স্টেডিয়ামে।
এর আগে ২০২৬ সালের এশিয়ান গেমস (জাপান), ২০২৭ সালের আফ্রিকান গেমস (মিসর) ও প্যান–আম গেমস (পেরু)–এ ক্রিকেট থাকবে। এছাড়া অস্ট্রেলিয়ার ব্রিসবেনে ২০৩২ সালের অলিম্পিকে ক্রিকেট অন্তর্ভুক্তি নিয়েও আলোচনা শুরু হয়েছে। সভায় আইসিসি–র প্রধান নির্বাহী সঞ্জোগ গুপ্ত সদস্যদের জানান যে, তিনি ব্রিসবেন ২০৩২ আয়োজক কমিটির সঙ্গে ক্রিকেটকে তাদের আসরে অন্তর্ভুক্ত করার বিষয়ে আলোচনা করেছেন।
এ সভায় আরও জানানো হয়, আইসিসি তাদের অফিসিয়াল মোবাইল ক্রিকেট গেম তৈরির জন্য আন্তর্জাতিক পর্যায়ে অংশীদার খুঁজছে। শিগগিরই এ বিষয়ে দরপত্র আহ্বান করা হবে। যেটি ক্রিকেটকে আধুনিক ডিজিটাল ও বিনোদন জগতে আরও বেশি ছড়িয়ে দেওয়ার ক্ষেত্রে একটি বড় পদক্ষেপ হিসেবে দেখছে তারা।
২০২৬ সালে সহযোগী সদস্যদের জন্য তহবিলের বণ্টন প্রায় ১০ শতাংশ বাড়ানোর অনুমোদন দিয়েছে আইসিসি, যেন তারা এই অতিরিক্ত তহবিলের স্থানীয় কার্যক্রম, হাই–পারফরম্যান্স (এইচপি) কাঠামো ও উদীয়মান অঞ্চলে ক্রিকেটের উন্নয়নে আরও বিনিয়োগ করতে পারে।
এছাড়া যুক্তরাষ্ট্র ক্রিকেট বোর্ড বারবার আইসিসির নিয়ম ভঙ্গ করায় তাদের সদস্য পদ স্থগিতের সিদ্ধান্ত বহাল রেখেছে আইসিসি। যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল যে, দেশটিতে কার্যকর প্রশাসনিক কাঠামোর অভাব রয়েছে, মার্কিন অলিম্পিক ও প্যারালিম্পিক কমিটির জাতীয় স্বীকৃতি অর্জনের ক্ষেত্রে তেমন কোনো অগ্রগতি হয়নি এবং খেলাটির সুনাম ক্ষতিগ্রস্ত করার মতো কর্মকাণ্ডের পুনরাবৃত্তি করেছে তারা।

স্পোর্টস ডেস্ক