আকাশ থেকেই মহাকাশযান উৎক্ষেপণ
সাধারণত ভূমি থেকে উৎক্ষিপ্ত মহাকাশযানে করেই নভোচারীরা মহাকাশে গমন করেন। ব্যয়বহুল এই প্রজেক্টগুলোর পেছনে খরচ হয় মোটা অঙ্কের টাকা। সেই খরচ কমাতেই কি না, কানাডার একটি প্রতিষ্ঠান ঘোষণা দিল যে তারা এমন এক টাওয়ার তৈরি করবে, যা লিফটের মাধ্যমে নভোযাত্রীকে পৌঁছে দেবে বায়ুমণ্ডলের অনেক ওপরের স্তরে, সেখান থেকে সহজেই মহাকাশযাত্রা করতে পারবেন নভোচারীরা। এরই মধ্যে নতুন এই প্রজেক্টের পেটেন্ট পেয়েছে তারা। ব্রিটেনভিত্তিক তথ্যপ্রযুক্তিবিষয়ক ওয়েবসাইট উইয়ার্ডের এক প্রতিবেদনে উঠে এসেছে এ তথ্য।
‘তথ টেকনোলজি’ নামে কানাডীয় প্রতিষ্ঠানটি ঘোষণা করেছে, প্রায় ২০ কিলোমিটার (সাড়ে ১২ মাইল) উচ্চতার এই টাওয়ার থেকে নভোচারীরা বায়ুমণ্ডলের স্ট্রাটোস্ফিয়ার থেকেই নভোযাত্রা শুরু করতে পারবেন। ফলে শুধু জ্বালানি বাবদই প্রচলিত নভোযাত্রার তুলনায় ৩০ শতাংশের মতো খরচ কম পড়বে এতে।
উদ্যোক্তারা তো রীতিমতো স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণের পরিকল্পনাও জুড়ে দিয়েছেন এই টাওয়ারের মাধ্যমে। প্রজেক্টটির মূল গবেষক ব্রেন্ডান কুইনি বলেন, ‘প্রথমে একটি বৈদ্যুতিক এলিভেটরের মাধ্যমে নভোযাত্রীকে টাওয়ারের শীর্ষে নিয়ে যাওয়া হবে, সেখান থেকে সরাসরি মহাকাশযানের মাধ্যমে তাঁরা কক্ষপথে যাত্রা করবেন। টাওয়ারটি এমনভাবে তৈরি করা হবে যেন তাতে মহাকাশযানগুলো পুনরায় ফিরে এসে পরবর্তী অভিযানের প্রস্তুতি গ্রহণেরও সুযোগ পায়।’ অর্থাৎ পুরো মহাকাশ অভিযানটিই চালানো হবে টাওয়ারের শীর্ষ থেকে।
টাওয়ারটির উচ্চতা সম্পর্কে ধারণা দিতে গিয়ে বলা হয়েছে, বর্তমান বিশ্বের সবচেয়ে উঁচু অট্টালিকা বুর্জ খলিফার উচ্চতার চেয়েও প্রায় ২০ গুণ বেশি। ১০ টন পরিমাণ ওজন বহনে সক্ষম টাওয়ারটির এলিভেটর মালামাল পরিবহনের কাজে ব্যবহৃত হবে।
প্রচলিত রকেট, যেগুলো মহাকাশ অভিযানে ব্যবহৃত হয়, সেগুলো বিপুল পরিমাণে বিষাক্ত ধোঁয়া উদগিরণ করে, পাশাপাশি এতে খরচ হয় প্রচুর অর্থ। অভিনব এই টাওয়ার নির্মিত হলে মহাকাশে যাতায়াত অনেকটাই সহজ হয়ে যাবে বলে আশা প্রকাশ করেন তথ টেকনোলজির কর্ণধার ক্যারোলাইন রবার্টস।

অমর্ত্য গালিব চৌধুরী