বাতাস থেকে তৈরি হবে ডিজেল!
বৈশ্বিক উষ্ণায়ন নিয়ে সবাই কমবেশি চিন্তিত। যানবাহন থেকে নির্গত হওয়া বিষাক্ত গ্যাস এই উষ্ণায়নের জন্য অনেকাংশে দায়ী। বিজ্ঞানীরা প্রতিনিয়ত তাই প্রচলিত জ্বালানির বিকল্প খুঁজে চলেছেন। এরই ধারাবাহিকতায় এবার এলো নতুন ধরনের এক বিকল্প ব্যবস্থার কথা। আমাদের চারপাশের যে বাতাস, সেখান থেকেই তৈরি হবে ডিজেল। বিবিসির এক প্রতিবেদনে উঠে এসেছে এ তথ্য।
সায়েন্স ফিকশনের মতো শোনালেও এটাই সত্যি। জার্মানি আর কানাডার দুটি প্রতিষ্ঠান এরই মধ্যে বাতাস থেকে ডিজেল উৎপাদনের প্রকল্প জোরেশোরে শুরু করে দিয়েছে। বিবিসির প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, জার্মান প্রতিষ্ঠান ‘সানফায়ার’ এরই মধ্যে বাতাস থেকে কার্বন ডাইঅক্সাইড সংগ্রহ করে তা দিয়ে তৈরি করেছে ‘ই-ডিজেল’।
জার্মানির কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রী জোয়ানা ওয়াঙ্কা স্বয়ং এই ডিজেল ব্যবহার করে গাড়ি চালিয়ে দেখেছেন। অন্যদিকে কানাডার প্রতিষ্ঠান কার্বন ইঞ্জিনিয়ারিংও বসে নেই। এরই মধ্যে তারা দুই টন কার্বন ডাইঅক্সাইড সংগ্রহ করে তা থেকে ৫০০ লিটার ডিজেল উৎপাদন করে ফেলেছে।
প্রচলিত ক্ষেত্রে যা হয়, অর্থাৎ জ্বালানি পুড়িয়ে বাড়তি কার্বন ডাইঅক্সাইড তৈরি করা হয়। এ প্রক্রিয়া পরিবেশের উষ্ণায়নে গুরুতর প্রভাব ফেলে। কিন্তু এই নতুন পদ্ধতিতে যে ডিজেল তৈরি হবে, তা পোড়ালে বৈশ্বিক উষ্ণায়নের ক্ষেত্রে কোনো বিরূপ প্রভাব পড়বে না।
কেননা, বাতাস থেকেই এই ডিজেল জোগাড় করা হয়েছে। কাজেই এই ডিজেল পোড়ানোর ফলে উৎপাদিত কার্বন ডাইঅক্সাইড বাড়তি কোনো উষ্ণায়নের জন্ম দেবে না। এ প্রক্রিয়ায় অবশ্য বিদ্যুৎ লাগে। তবে নবায়নযোগ্য উৎস থেকে প্রাপ্ত বিদ্যুৎ ব্যবহার করে দিব্যি কাজ চালানো যাবে বলে বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল ওশেনিক অ্যান্ড অ্যাটোমস্ফোরিক অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের সূত্রমতে, ২০১২-১৩ বছরে বাতাসে কার্বন ডাইঅক্সাইডের পরিমাণ ছিল বিগত যেকোনো বছরের তুলনায় বেশি। ওই একই প্রতিষ্ঠানের দেওয়া তথ্যমতে, ২০১৪-১৫ বছরটি ছিল এযাবৎকালের উষ্ণতম বছর।
এসবই হলো পৃথিবীজুড়ে অতিরিক্ত মাত্রায় কার্বন ডাইঅক্সাইড উৎপাদনের ফল। সে ক্ষেত্রে এই ‘ই-ডিজেল’ বাতাসে কার্বন ডাইঅক্সাইডের পরিমাণ না কমাক, অন্তত বাড়াবে না বলে আশা প্রকাশ করেছেন বিজ্ঞানীরা।