বৈরুত বিস্ফোরণে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ১৫৭
লেবাননের রাজধানী বৈরুতে একটি রাসায়নিক পদার্থের গুদামে ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে ১৫৭ জন হয়েছে। এ ছাড়া আহতের সংখ্যা পাঁচ হাজার।
আলজাজিরা এক প্রতিবেদনে জানায়, ভয়াবহ দুটি বিস্ফোরণের পর লেবাননের শহরটি কেঁপে ওঠে। বিস্ফোরণের শব্দে বাসিন্দারা আতঙ্কিত হয়ে পড়েন।
শহরের প্রাণকেন্দ্র থেকে ঘন ধোঁয়ার কুণ্ডলী উঠতে দেখা গেছে। ১৫০ মাইল দূরের এলাকায়ও কম্পন অনুভূত হয়।
এদিকে, মঙ্গলবারের ওই বিস্ফোরণের ঘটনায় বন্দর কর্তৃপক্ষের ১৬ কর্মকর্তাকে গৃহবন্দি করে রাখা হয়েছে। বিস্ফোরণের ঘটনা তদন্তের স্বার্থে ওই কর্মকর্তাদের গৃহবন্দি করা হয়েছে বলে জানিয়েছে দেশটির সরকার।
লেবাননের তথ্যমন্ত্রী মানাল আবদেল সামাদ জানিয়েছেন, ২০১৪ সালের জুন থেকে বৈরুতের ওই ওয়্যারহাউসে অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট মজুদ করা থেকে শুরু করে সেগুলোর তত্ত্বাবধান করা, পাহারা দেওয়াসহ এ-সংক্রান্ত যাবতীয় কার্যাবলির সঙ্গে বন্দর কর্তৃপক্ষের যেসব কর্মকর্তা-কর্মচারী সংশ্লিষ্ট ছিল, তাঁদের সবাইকে গৃহবন্দি করা হয়েছে।
লেবাননের প্রেসিডেন্ট মিশেল আউন জানান, বৈরুত বন্দর এলাকার একটি ওয়্যারহাউসে দুই হাজার ৭৫০ টন অ্যামোনিয়াম নাইট্রেটের মতো বিস্ফোরক পদার্থ অনিরাপদভাবে মজুদ করে রাখা হয়েছিল।
লেবাননের কাস্টমসপ্রধান বাদ্রি দাহের জানান, তাঁর সংস্থার পক্ষ থেকে ওয়্যারহাউসের রাসায়নিক পদার্থ সরিয়ে নিতে বলার পরও তা সরানো হয়নি।
বলার পরও কেন সরানো হলো না, সে বিষয়ে বাদ্রি দাহের বলেন, ‘এর কারণ জানার দায়িত্ব আমরা বিশেষজ্ঞদের হাতেই ছেড়ে দিয়েছি।’
অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট সাধারণত সার ও বোমা তৈরিতে ব্যবহৃত হয়।
যুক্তরাজ্যের শেফিল্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, বৈরুতের বিস্ফোরণের মাত্রা ছিল দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় জাপানের হিরোশিমা শহরে আণবিক বোমা বিস্ফোরণের ১০ ভাগের এক ভাগ। তবে পারমাণবিক বোমা বিস্ফোরণের হিসাব বাদ দিলে বৈরুতের বিস্ফোরণকে ‘মানব ইতিহাসের অন্যতম বৃহৎ বিস্ফোরণকাণ্ড’ বলছেন শেফিল্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশেষজ্ঞরা।
বার্তা সংস্থা রয়টার্স এক প্রতিবেদনে জানায়, গত মঙ্গলবার সন্ধ্যায় বৈরুত বন্দরে একটি বিস্ফোরক দ্রব্যের গুদামে ভয়াবহ বিস্ফোরণ ঘটে।
বৈরুতের গভর্নর মারওয়ান অবুদ জানিয়েছেন, ‘বিস্ফোরণে প্রায় তিন লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে অসংখ্য ঘরবাড়ি। কর্তৃপক্ষ তাদের আশ্রয়, খাদ্য এবং পানি সরবরাহে কাজ করছে। ফায়ার সার্ভিসের ১০ সদস্য নিহত হয়েছেন। ক্ষয়ক্ষতি ৩০০ থেকে ৫০০ কোটি মার্কিন ডলার বা তার বেশিও হতে পারে।’

এনটিভি অনলাইন ডেস্ক