মণিপুরে সহিংসতায় নিহত ৬০, গৃহহীন ৩০ হাজার

ভারতের মণিপুর রাজ্যে সংঘাতে অন্তত ৬০ জন নিহত হয়েছেন। এছাড়া এক হাজার ৭০০ ঘরে আগুন জ্বলেছে এবং গৃহহীন হয়েছেন প্রায় ৩০ হাজার মানুষ। গত বুধবার (৩ মে) সংঘাত শুরুর পর অবশেষে মুখ খুলেছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী বীরেন সিং। গতকাল সোমবার (৮ মে) সংবাদ সম্মেলনে হতাহতের হিসাব দেওয়ার পাশাপাশি তিনি রাজ্যের মানুষের কাছে শান্তি বজায় রাখার অনুরোধ করেছেন।
মুখ্যমন্ত্রী বীরেন সিং বলেন, সহিংসতার ঘটনার সঙ্গে যারা জড়িত, তাদের ছাড় দেওয়া হবে না। সবার বিরুদ্ধে কঠোরতম ব্যবস্থা নেওয়া হবে। পাশাপাশি ঘরছাড়াদের দ্রুত ফেরানো হবে বলেও জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে ধন্যবাদ জানিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বীরেন বলেন, সহিংসতা থামাতে কেন্দ্র সাহায্য করেছে।
এদিকে মণিপুরের প্রতিবেশী রাজ্যগুলোতে এখনও উদ্বাস্তু শিবিরে বহু মানুষ বসবাস করছেন। আসামের কাছাড় জেলায় ক্যাম্প করে আছেন উদ্বাস্তুরা। আসাম সরকার জানিয়েছে, তাদের সুরক্ষার ব্যবস্থা করা হবে।
গত বুধবার ভয়াবহ সংঘাত শুরু হয় মণিপুরে। ওই দিন রাজ্যের চূড়াচাঁদপুরে ছাত্র সংগঠন অল ট্রাইবাল স্টুডেন্টস ইউনিয়ন অব মণিপুর মিছিল বের করে। রাজ্যের সংখ্যাগরিষ্ঠ মেইতেই গোষ্ঠী নিজেদের তফসিলি জনজাতির অন্তর্ভুক্ত করার দাবিতে দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন করে আসছে। তার বিরোধিতা করে ছাত্র সংগঠন মিছিল বের করে। আর সেই মিছিল ঘিরেই তীব্র সংঘাত শুরু হয়। হত্যা ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে রাজ্যের একাধিক জায়গায় কারফিউ জারি করা হয়। সহিংসতা ‘দেখামাত্র গুলি’র নির্দেশ দেওয়া হয়। পরিস্থিতি এখন অনেকটাই স্বাভাবিক। তবে ১৪৪ ধারা এখনও জারি আছে।
মুখ্যমন্ত্রী বীরেন সিং জানান, কয়েকদিনের মধ্যেই ঘরছাড়াদের রাজ্যে ফিরিয়ে আনা হবে। তাদের থাকার ব্যবস্থা করে দেওয়া হবে। অনেকেরই বাড়ি সম্পূর্ণ জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে। প্রাণ হাতে করে তারা পার্শ্ববর্তী রাজ্যে আশ্রয় নিয়েছেন।
এর আগেও মণিপুরে জনজাতিভুক্ত জনগোষ্ঠীর সঙ্গে অজনজাতি গোষ্ঠীর সংঘর্ষ হয়েছে। মেইতেই সম্প্রদায় বহুদিন ধরেই নিজেদের তফসিলি জনজাতির অন্তর্ভুক্ত করার আন্দোলন চালাচ্ছে। এ সংক্রান্ত রাজনৈতিক প্রশ্ন নিয়ে অবশ্য সংবাদ সম্মেলনে কোনো মন্তব্য করেননি মুখ্যমন্ত্রী বীরেন সিং।