সুয়েজ খালে জাহাজের দীর্ঘ সারি, পণ্য পরিবহণে স্থবিরতা
মিসরের সুয়েজ খালে একটি বড়সড় পণ্যবাহী জাহাজ আটকে যাওয়ায় খালটি বন্ধ হয়ে দীর্ঘ জট সৃষ্টি হয়েছে। ২৩০টির বেশি জাহাজের লাইন পড়ে গেছে বলে জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
গত মঙ্গলবার দমকা হাওয়া ও ধুলি ঝড়ের কবলে পড়ে তাইওয়ানের বিশ্বখ্যাত কোম্পানি এভারগ্রিন ম্যারিন-এর জাহাজ ‘এভার গিভেন’ নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সুয়েজ পাড়ে ধাক্কা খায়। ১৩০০ ফুট দৈর্ঘের জাহাজটি যে পাড়ে ধাক্কা খেয়েছে, সেখানকার বালু সরানোর কাজ চলছে। কিন্তু এই পন্থায় সমাধান হবে বলে বিশেষজ্ঞেরা মনে করছেন না।
মিসরের প্রেসিডেন্টের এক উপদেষ্টা অবশ্য গতকাল বলেছেন, দুই থেকে তিনদিনের মধ্যে স্বাভাবিক অবস্থা ফিরে আসবে।
অন্যদিকে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দুই লাখ ২০ হাজার টনের বেশি ওজনের জাহাজটিতে থাকা কার্গো অন্য জাহাজে নামিয়ে অথবা খালপাড়ে রেখে জাহাজটিকে হালকা করে নিতে হবে। এই পদ্ধতির ব্যবহার হলে কয়েক সপ্তাহ লেগে যেতে পারে।
কোম্পানি কর্তৃপক্ষ এরই মধ্যে জাহাজ খালি করার প্রস্তুতি নিয়েছে। কিন্তু এটি ব্যাপক সময়সাধ্য ব্যাপার। খাল বন্ধের ঘটনায় ক্ষমাও চেয়েছে এভারগ্রিন কর্তৃপক্ষ।
এদিকে, সুয়েজ খাল বন্ধের ফলে বিশ্বব্যাপী পণ্য পরিবহণে প্রভাব পড়ছে। ফলে সরবরাহ ঘাটতির কারণে যুক্তরাষ্ট্রের পণ্যবাজারে মূল্যবৃদ্ধি ঘটতে পারে বলে সিএনএনের খবরে বলা হয়েছে। পশ্চিমা বিশ্বের সঙ্গে পূর্ব প্রান্তের দেশগুলোর ব্যবসা ব্যাপকভাবে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। প্রতিদিন ৯ দশমিক ৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের পণ্য পারাপার আটকে যাচ্ছে, যার পরিমাণ ঘণ্টায় প্রায় ৪০০ মিলিয়ন ডলার। বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রতিদিন ৮১ হাজার ৫৪৭ কোটি টাকারও বেশি পরিমাণ পণ্য আটকে থাকছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জাহাজটিকে ঘুরিয়ে খালের স্বাভাবিক পরিস্থিতি ফিরিয়ে আনতে কয়েক সপ্তাহ লেগে যেতে পারে। সুয়েজ খালে একদিন আটকে থাকলে জট সারাতে দুদিন লেগে যায়। সেখানে চার দিন পার হয়েছে। ফলে এরই মধ্যে আট দিনের জট লেগে গেছে।
নৌপথে পণ্য পরিবহণে বিশেষজ্ঞ প্রতিষ্ঠান লয়েড জানিয়েছে, সুয়েজ খালে প্রতিদিন পশ্চিমমুখী প্রায় পাঁচ দশমিক এক বিলিয়ন ডলারের এবং পূর্বমূখী প্রায় সাড়ে চার বিলিয়ন ডলারের পণ্য পার হয়। এখান দিয়ে মূলত বেশির ভাগ তেল ও পোশাক, আসবাবপত্র ও গাড়ির যন্ত্রাংশ আনা নেওয়া করা হয়।