‘হিটলারের কুমির’ এবার মস্কোর ডারউইন মিউজিয়ামে
সময়টা ছিল ১৯৪৩ সাল। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের কারণে তখন পুরো দুনিয়া টালমাটাল। সে সময় জার্মানির বার্লিনে ঘন ঘন বোমা পড়ছে, আর তখন চিড়িয়াখানা থেকে বেরিয়ে গিয়েছিল কুমিরটি। মনে করা হয়, এটিই ছিল জার্মানির শাসক অ্যাডলফ হিটলারের পোষা কুমির। নাম স্যাটার্ন।
পরে ১৯৪৬ সালে ব্রিটিশ সেনাবাহিনী খুঁজে পায় স্যাটার্নকে। তারপর তার ঠাঁই হয় মস্কোর চিড়িয়াখানায়। ৮৪ বছর বয়সে গত মে মাসে মারা যায় কুমিরটি।
স্যাটার্নের জন্ম অবশ্য যুক্তরাষ্ট্রে। ১৯৩৬ সালে। তারপর তাকে নিয়ে আসা হয় বার্লিনে। তখন রটে যায়, হিটলার এই কুমির পুষছেন। বার্লিন চিড়িয়াখানার কর্তৃপক্ষ অবশ্য এটাকে নিছক গল্পকথা বলে উড়িয়ে দিয়েছে।
কিন্তু সেই কুমির মৃত্যুর পরও থেকে যাচ্ছে মস্কোর ডারউইন মিউজিয়ামে। মিউজিয়ামের তরফ থেকে জানানো হয়েছে, উত্তর আমেরিকার বন্য প্রাণীদের সেকশনে রাখা হয়েছে স্যাটার্নকে। খবর ডয়েচে ভেলের।
হিটলারের কুমির হোক বা না হোক, স্যাটার্নের কাহিনিও চমকপ্রদ। তার জন্ম মিসিসিপতে। যখন সে সাড়ে তিন মিটার লম্বা এবং দুইশ কেজি ওজন, তখন তাকে নিয়ে আসা হয় বার্লিনে। কবে সে চিড়িয়াখানায় আসে তা জানা যায়নি। তবে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় সে চিড়িয়াখানায় ছিল। বার্লিনে যখন মিত্রশক্তি বোমা ফেলছে, তখনো সে চিড়িয়াখানায়। অনেক জন্তু সে সময় মারা যায়। কয়েকটি জন্তুকে উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছিল। চিড়িয়াখানার চার হাজার জন্তুর মধ্যে মাত্র ৯০টি বেঁচে যায়।
১৯৪৩ সালের ২৩ নভেম্বর যখন চিড়িয়াখানায় বোমা পড়ে, তখন কিছু জন্তু পালিয়ে যায়। তার মধ্যে স্যাটার্ন ছিল। কিন্তু সে কোথায় ছিল তা জানা যায়নি। পরে ব্রিটিশ সেনারা যখন স্যাটার্নের খোঁজ পেয়ে তাকে সোভিয়েত বাহিনীর কাছে দেয়, তখন কিছুদিন তার ঠাঁই হয় পূর্ব জার্মানিতে। তারপর তাকে মস্কো নিয়ে যাওয়া হয়। সাধারণত এই ধরনের কুমির গড়ে ৩০ থেকে ৫০ বছর বাঁচে। কিন্তু স্যাটার্ন বেঁচে ছিল ৮৪ বছর।