প্রতি ৮৪ ঘণ্টায় বিশ্বের কোথাও না কোথাও হামলা চালাচ্ছে মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক জঙ্গি সংগঠন ইসলামিক স্টেট (আইএস)। সন্ত্রাসবাদ পর্যবেক্ষণকারী সংস্থা ইনটেল সেন্টারের বরাত দিয়ে সিএনএনের এক প্রতিবেদনে এ কথা বলা হয়েছে।

ইরাক, সিরিয়া, মিসর ও লিবিয়ার যুদ্ধক্ষেত্র ছাড়াও বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে এসব হামলা চালিয়েছে আইএস। ইউরোপ থেকে শুরু করে বাংলাদেশ পর্যন্ত বিস্তৃত হয়েছে তাদের হামলার পরিধি। সেই সঙ্গে নতুন নতুন হামলার ধরনও দেখা গেছে।

ইনটেল সেন্টার জানিয়েছে, এসব হামলার অর্ধেকের বেশিই চালানো হয়েছে বড় বড় শহরের এমন সব স্থানে যেখানে কোনো সন্ত্রাসী হামলার হুমকি ছিল না। এসব নিম্ন প্রযুক্তিসম্পন্ন ভয়াবহ হামলা জনমনে আতঙ্ক তৈরি করেছে। সেই সঙ্গে সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর সরকারের পক্ষে হামলা মোকাবিলার সক্ষমতা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে।

এ ছাড়া চারপাশে বিপজ্জনক মানুষের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় সাধারণ মানুষের মধ্যে বিচারব্যবস্থা নিয়েও শঙ্কা তৈরি হয়েছে। ফ্রান্সের একটি গির্জায় ঢুকে যাজককে হত্যা করা ১৯ বছর বয়সী আদেল কেরমেচি দুবার সিরিয়া যাওয়ার চেষ্টা করেছিলেন বলে জানা গেছে। কারাগার থেকে ছাড়া পাওয়ার পর প্রতিদিন মাত্র চার ঘণ্টার জন্য বাড়ির বাইরে যাওয়ার অনুমতি পেতেন তিনি। এরই মধ্যে গির্জায় যাজকসহ অন্যদের জিম্মি করে হত্যা চালান তিনি।

এ ছাড়া ফ্রান্সের নিসে হামলার পর সেখানকার মানুষও ভীষণ আতঙ্কে আছেন। জার্মানিতে শপিংমলে হামলার ঘটনার পর স্থানীয় কোনো শপিং সেন্টারে যেতে আতঙ্কে ভুগছেন দেশটির সাধারণ মানুষ।

নিসে হামলার পর ফ্রান্সের দুই-তৃতীয়াংশ নাগরিক বলেছেন, তাঁরা সরকারের সন্ত্রাসবিরোধী কর্মকাণ্ডের ওপর আস্থা রাখতে পারছেন না।

সিএনএনের ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এসব হামলা বেশকিছু মৌলিক সামাজিক প্রশ্নও উত্থাপন করেছে। উদার মনমানসিকতার প্রতি সম্মান, গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ এসব কিছুই চরমপন্থার কাছে হার মানছে বলে মনে করা হচ্ছে।

সাম্প্রতিক হামলাগুলো খতিয়ে দেখে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, গত বছর ধরে আইএস একটি বার্তা দেওয়ার চেষ্টা করছে। আর সেটি হলো, ‘সিরিয়ায় এসো না, নিজের দেশের মাটিতে বাস করা অবিশ্বাসীদের হত্যা করো।’