আরও এক মামলায় খালাস পেলেন নোবেলজয়ী সাংবাদিক মারিয়া রেসা
ফিলিপাইনে শান্তিতে নোবেলজয়ী সাংবাদিক ও গণমাধ্যম র্যাপলারের সহপ্রতিষ্ঠাতা মারিয়া রেসাকে কর ফাঁকির মামলা থেকে অব্যাহতি দিয়েছেন দেশটির আদালত। এর মাধ্যমে এই নোবেলজয়ী আরও একটি আইনি বিজয় হাসিল করলেন, যেগুলো দেশটির সাবেক প্রেসিডেন্ট রদ্রিগো দুতার্তের আমলে করা। আজ মঙ্গলবার (১২ সেপ্টেম্বর) এ তথ্য জানিয়েছে আল-জাজিরা।
রায় শোনার সময় হাসছিলেন দুর্তাতের সমালোচক মারিয়া রেসা। রায়ের পর আদালত প্রাঙ্গণে ৫৯ বছল বয়সী এই নোবেলজয়ী বলেন, ‘আপনাকে নিজের প্রতি আত্মবিশ্বাস রাখতে হবে।’
২০১২ সালে র্যাপলার প্রতিষ্ঠা করেন মারিয়া রেসা। কর ফাঁকির পাঁচটি মামলা করা হয়। দুতার্তের নেতৃত্বাধীন সাবেক সরকার কর ফাঁকির মামলাগুলো করেছিল। অভিযোগ করা হয়েছিল, বিদেশি বিনিয়োগকারীদের সঙ্গে অংশীদারত্বের ভিত্তিতে র্যাপলার মূলধন জোগাড় করছে। আর এর জন্য তাঁরা কোনো কর পরিশোধ করছে না।
গত জানুয়ারিতে চারটি অভিযোগ থেকে মারিয়া রেসা ও র্যাপলারকে অব্যাহতি দিয়েছিল দেশটির একটি আদালত। আর আজ ভিন্ন একটি আদালত নোবেলজয়ী ও তার প্রতিষ্ঠান আরও একটি অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দিয়েছে। এ ছাড়াও মারিয়া রোস ও র্যাপলারের বিরুদ্ধে আদালতে আরও দুটি মামলা চলমান রয়েছে।
ফিলিপাইনের সংবিধান অনুযায়ী, দেশটির গণমাধ্যমে কোনো বিদেশি নাগরিক বা সংস্থা বিনিয়োগ করতে পারবে না। শুধুমাত্র ফিলিপাইনের নাগরিক বা তাদের নিয়ন্ত্রিত কোনো সংস্থায় গণমাধ্যমে বিনিয়োগ করতে পারবে।
এদিকে, র্যাপলারের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা লঙ্ঘনের অভিযোগে বন্ধ করার জন্য ফিলিপাইন সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের আদেশকে চ্যালেঞ্জ করছে গণমাধ্যমটি।
মারিয়া রেসা ও র্যাপলার আজ যে মামলায় খালাস পেয়েছে সেটি মূলত যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক ওমিদায়ের নেটওয়ার্কের বিনিয়োগ সম্পর্কিত। র্যাপলারে বিনিয়োগ করেছিল মার্কিন প্রতিষ্ঠানটি। তবে, দুর্তাতে যখন র্যাপলার বন্ধ করতে মরিয়া হয়ে ওঠে তখন মার্কিন প্রতিষ্ঠানটি বিনিয়োগের অর্থ ফিলিপাইনের স্থানীয় ম্যানেজারের অ্যাকাউন্টে হস্তান্তর করে। আর এতে করে র্যাপলার বন্ধের চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয় দুর্তাতে প্রশাসন।
২০২১ সালে যৌথভাবে শান্তিতে নোবেল পুরস্কার পান মারিয়া রেসা। তার পাশাপাশি একই খেতাব পান রাশিয়ার সাংবাদিক দিমিত্রি মুরাতোভ। বাকস্বাধীনতা রক্ষা করার প্রচেষ্টার জন্যই এই দুই সাংবাদিক নোবেল পান।
সংবাদমাধ্যমের বৈশ্বিক স্বাধীনতার সূচক মতে, ফিলিপাইন ১৮০টি দেশের মধ্যে ১৩২তম অবস্থানে রয়েছে। দেশটিতে সরকারের সমালোচনাকারী সাংবাদিকদের লক্ষ্যবস্তু করা হয়। পাশাপাশি তাদের ক্রমাগত হয়রানিও করা হয়।