নেভানো যাচ্ছে না চিলির দাবানল, মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৫১
দক্ষিণ আমেরিকার দেশ চিলির দক্ষিণ ও মধ্যাঞ্চলে ছড়িয়ে পড়া দাবানল এখনো নিয়ন্ত্রণে আসেনি। আগুনে পুড়ে নিহত লোকজনের মরদেহ পড়ে থাকতে দেখা গেছে রাস্তায়। বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে এখনো পুড়ছে বাড়িঘর। দাবানলের শিকার হয়ে এখন পর্যন্ত ৫১ জনের মৃত্যুর খবর দিয়েছে দেশটির সরকার। খবর এএফপির।
ইতোমধ্যে দেশের দক্ষিণ ও মধ্যাঞ্চলে হঠাৎ তৈরি হওয়া দুর্যোগের কারণে জরুরি অবস্থা জারি করেছেন চিলির প্রেসিডেন্ট গ্যাব্রিয়েল বোরিক। দাবানলের কারণে তীব্র শুষ্ক অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে এবং দুর্যোগপূর্ণ এলাকার তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের ওপরে ওঠে গেছে।
গতকাল শনিবার দাবানলে আক্রান্ত এলাকা হেলিকপ্টারের মাধ্যমে পরিদর্শন শেষে প্রেসিডেন্ট বোরিক বলেন, ‘সরাসরি আগুনে পুড়ে ৪০ জন মারা গেছে আর পোড়া ক্ষত নিয়ে মারা গেছে আরও ১১ জন। তবে আমরা মনে করছি এই সংখ্যা আরও বাড়বে।’ তিনি প্রতিশ্রুতি দিয়ে বলেন, ‘আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত লোকজনকে নিজের পায়ে দাঁড়াতে আমরা পাশে থাকব।’
চিলির ভিনা দেল মার ও ভালপারাইসো পর্যটন এলাকা থেকে এখনও কালো ধোঁয়া উড়ছে। পাশাপাশি দেশটির মধ্যাঞ্চলীয় উপকূলবর্তী এলাকা থেকেও এখন মানুষ নিরাপদ আশ্রয়ের সন্ধানে ছুটছে।
এর আগে শনিবার চিলির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ক্যারোলিনা তোহা জানিয়েছিলেন, ৯২টি আগুনের ঘটনা ঘটেছে। এতে প্রায় ৪৩ হাজার হেক্টর এলাকা পুড়ে গেছে। ইতোমধ্যে ৪০টি আগুন নিয়ন্ত্রণে এসেছে এবং ২৯টি আগুন নেভাতে কাজ চলছে।
আগুন সম্পর্কে নিজের অভিজ্ঞতা জানাতে গিয়ে ৬৩ বছর বয়স্ক ইয়োভানে গাজম্যান বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেন, ‘আমি আমার জীবনে এমন ঘটনা দেখিনি। এটা খুবই কষ্টকর। আমরা বাড়িঘর ছেড়ে বের হয়ে গিয়েছিলাম কিন্তু সামনে এগিয়ে যেতে পারছিলাম না। আমাদের মতো আরও লোকজন আশেপাশে ছিল যারা সামনে যেতে পারছিল না।’
ভিনা দেল মারের মেয়র মাসেরানা রিপামন্টি বলেন, ‘আমরা একটি অভূতপূর্ব দুর্যোগের মুখোমুখি হয়েছি। ভালপোরাইসো এলাকায় এমন ঘটনা আর ঘটেনি।’
চিলির জাতীয় বন কর্তৃপক্ষ বলেছে দোবানলে কয়েক হাজার হেক্টর জমির ফসল, গাছপালা, বাড়িঘর সব পুড়ে গেছে।
খরা আর গ্রীষ্মকালীন দাবদাহের কারণেই এই দাবানলের উৎপত্তি যার প্রভাব পড়েছে দক্ষিণ আমেরিকা মহাদেশের দক্ষিণ অংশে। বিজ্ঞানীরা বলছেন এটা এল নিনো আবহাওয়ার লক্ষণ। শুধু চিলিই নয় কলম্বিয়াও প্রচণ্ড দাবদাহে জর্জরিত হয়ে পড়েছে। আশঙ্কা করা হচ্ছে এই দাবদাহ ছড়িয়ে পড়বে প্যারাগুয়ে ও ব্রাজিলে। ইতোমধ্যে আর্জেন্টিনায়ও আগুনে পুড়ে গেছে ন্যাশনাল পার্কের তিন হাজার হেক্টর জমি।