ফ্লোরিডায় আঘাত হানছে ভয়াবহ ঘূর্ণিঝড় ‘মিল্টন’
ঝড়-ঝাপটায় বিপর্যস্ত যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডা অঙ্গরাজ্যে আঘাত হানতে যাচ্ছে মারাত্মক ঘূর্ণিঝড় ‘মিল্টন’। মঙ্গলবার (৮ অক্টোবর) এই ঘূর্ণিঝড়টি শক্তি বাড়িয়ে ৫ মাত্রার ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয়। গত এক শতাব্দীর মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ প্রাকৃতিক দুর্যোগ হিসেবে দেখা দেওয়া এই ঘূর্ণিঝড় থেকে রক্ষা পেতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন স্থানীয় বাসিন্দাদের সরে গিয়ে নিরাপদ আশ্রয়ে যেতে আবেদন জানিয়েছেন। খবর এএফপির।
গত কয়েক সপ্তাহের মধ্যে ফ্লোরিডায় আঘাত হানতে যাওয়া এটি দ্বিতীয় ঘূর্ণিঝড়। এতে মারাত্মক বিপর্যয়ের শঙ্কা থেকে লোকজন এখন বাড়িঘর ছেড়ে নিরাপদ আশ্রয়ের জন্য পালাচ্ছে। হোয়াইট হাউস থেকে প্রচারিত বার্তায় প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেন, ‘আমি বাড়িয়ে বলছি না, ঘূর্ণিঝড়টি এখন জীবন-মৃত্যুর বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।’ তিনি এই মুহূর্তে সবাইকে এলাকা ছেড়ে যাওয়ার আবেদন জানান।
যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল হারিকেন সেন্টার (এনএইচসি) জানিয়েছে, মঙ্গলবার নাগাদ ‘মিল্টন’ ক্যাটাগরি-৫ ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিয়েছে। ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রে বাতাসের গতিবেগ ঘণ্টায় ১৬৫ মাইল বা ২৭০ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে।
এনএইচসি আরও জানিয়েছে, পূর্ব মেক্সিকো উপসাগর দিয়ে অতিক্রম করার সময় মিল্টনের তীব্রতা ওঠা-নামা করতে পারে। তবে যুক্তরাষ্ট্রের স্থানীয় সময় বুধবার (৯ অক্টোবর) মধ্যরাতে এটি যখন ফ্লোরিডার মধ্য-পশ্চিম উপকূলে আঘাত হানবে, তখন তা একটি বিপজ্জনক হারিকেনে পরিণত হবে।
এক সংবাদ সম্মেলনে ফ্লোরিডার গভর্নর রন ডিস্যান্টিস রাজ্যটির একের পর এক শহর ও কাউন্টি বিপদের মুখে রয়েছে বলে উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, ‘ফ্লোরিডার উপদ্বীপ অংশের পুরোটাই এই সতর্কতার আওতার মধ্যে রয়েছে।’
ফ্লোরিডা থেকে মানুষ দলে দলে সরে পড়তে থাকায় মহাসড়কগুলোতে বেড়েছে যানবাহনের চাপ এবং তৈরি হয়েছে প্রচণ্ড যানজটের। পাশাপাশি গ্যাস স্টেশনগুলোতে শেষ হয়ে গেছে জ্বালানি তেলের মজুত। রাজ্যটির টাম্পা, অরলান্ডো, ফোর্ট মায়ার্স ও সারাসোটা নগর থেকে লোকজনকে সরিয়ে নিতে ব্যবস্থা করা হয়েছে অতিরিক্ত ফ্লাইটের।
মিল্টন আঘাত হানার সময় মারাত্মক জলোচ্ছ্বাসের আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা। এর আগে আঘাত হানা ঘূর্ণিঝড় হেলেনের কারণে যে জলোচ্ছ্বাস ও বন্যা হয়েছিল এবার তার দ্বিগুণ মাত্রায় বন্যা হতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন হারিকেন বিশেষজ্ঞ মাইকেল লোরি।
এদিকে আগামী ৫ নভেম্বর যুক্তরাষ্ট্রে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনকে সামনে রেখে কেন্দ্রীয়ভাবে ঘূর্ণিঝড়ে প্রস্তুতি ও সাড়া প্রদানের কাজ তদারকির জন্য প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন তার নির্ধারিত জার্মানি ও এঙ্গোলা সফর বাতিল করেছেন।