গাজায় মানবিক করিডোর খুলছে ইসরায়েলি বাহিনী

গাজায় চলমান যুদ্ধের মধ্যে সাধারণ নাগরিকদের জন্য একটি নতুন পথ খুলে দিয়েছে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী। আজ বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) ইসরায়েলি সেনাবাহিনী জানায়, গাজা সিটি থেকে লোকজনকে সরে যাওয়ার জন্য এই অস্থায়ী করিডোর চালু করা হয়েছে। খবর বার্তা সংস্থা এএফপির।
এর আগে গতকাল মঙ্গলবার ভোর থেকেই গাজা সিটিতে ব্যাপক বোমা হামলা শুরু করে ইসরায়েল। তাদের দাবি, হামাসকে লক্ষ্য করে গাজা উপত্যকার এই বৃহত্তম নগর কেন্দ্রে অভিযান জোরদার করা হয়েছে।
এই অভিযান এমন এক সময়ে শুরু হয়েছে যখন ইসরায়েলের বিরুদ্ধে ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে ‘গণহত্যা’ চালানোর অভিযোগ এনেছে জাতিসংঘ। সংস্থাটির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুসহ অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এই অপরাধে উসকানি দিয়েছেন।
ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর আরবি ভাষার মুখপাত্র কর্নেল আভিচাই আদরাই বলেন, আগামীকাল বৃহস্পতিবার দুপুর থেকে সালাহ আল-দিন স্ট্রিট দিয়ে খোলা এই করিডরটি মাত্র ৪৮ ঘণ্টার জন্য খোলা থাকবে। এর আগে বাসিন্দাদের উপকূলীয় রাস্তা ব্যবহার করে দক্ষিণ দিকের ‘মানবিক অঞ্চলগুলোতে’ যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছিল সেনাবাহিনী।
জাতিসংঘের হিসাব অনুযায়ী, আগস্টের শেষে গাজা সিটি ও এর আশেপাশে প্রায় ১০ লাখ মানুষ বসবাস করত। তবে এএফপির সাংবাদিকরা গত কয়েক দিনে পর্যবেক্ষণ করেছেন, অনেক লোক এই এলাকা ছেড়ে চলে গেছেন। ইসরায়েলি সেনাবাহিনী জানিয়েছে, এখন পর্যন্ত ৩ লাখ ৫০ হাজারের বেশি মানুষ দক্ষিণে পালিয়ে গেছে।
তবে গাজায় অনেক ফিলিস্তিনি এএফপিকে জানিয়েছেন, এই ভূখণ্ডে কোনো নিরাপদ জায়গা নেই। তারা আবারও বাস্তুচ্যুত হওয়ার চেয়ে বরং নিজেদের বাড়িতেই মারা যেতে প্রস্তুত।
মঙ্গলবার গাজা শহরে বোমা হামলার পর লোকজন নিরলস ধ্বংসযজ্ঞের কথা বলেছে। সেখানকার একটি আবাসিক ব্লক ইসরায়েলি বোমা হামলায় সম্পূর্ণ ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। আবু আবদ জাকুত নামে একজন বলেন, ‘নিরাপদে ঘুমন্ত শিশুদের কেন এভাবে হত্যা করা হচ্ছে? তাদের শরীরের অঙ্গপ্রত্যঙ্গ টুকরো টুকরো হয়ে গেছে।
২০২৩ সালের অক্টোবরে হামাসের হামলার ১ হাজার ২১৯ ইসরায়েলি মারা যায়। এর পাল্টা জবাবে ইসরায়েলের অভিযানে এখন পর্যন্ত অন্তত ৬৪ হাজার ৯৬৪ জন নিহত হয়েছেন, যাদের বেশিরভাগই বেসামরিক নাগরিক।