ফিলিস্তিনি বন্দীকে নির্যাতনের ভিডিও ফাঁস, ইসরায়েলি সাবেক সেনা আইনজীবী গ্রেপ্তার
ফিলিস্তিনি এক বন্দীর ওপর সেনাদের নির্যাতনের ভিডিও ফাঁসের ঘটনায় সাবেক সেনা প্রসিকিউটর মেজর জেনারেল ইফাত টোমার-ইরুশালমিকে গ্রেপ্তার করেছে ইসরায়েলি পুলিশ।
জাতীয় নিরাপত্তামন্ত্রী ইতামার বেন-গভির জানিয়েছেন, সোমবার (৩ নভেম্বর) ভোরে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ ঘটনায় দেশজুড়ে আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে, কারণ টোমার-ইরুশালমি ভিডিওটি ফাঁসের পর পদত্যাগ করেন এবং হঠাৎ নিখোঁজ হয়ে যান। খবর আল জাজিরার
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ভিডিও ফাঁসের ঘটনাকে দেশের ইতিহাসে ‘সবচেয়ে গুরুতর জনসংযোগ আঘাত’ বলে উল্লেখ করেছেন।
রোববার (২ নভেম্বর) টোমার-ইরুশালমি নিখোঁজ হয়ে যাওয়ায় তার আত্মহত্যার আশঙ্কা দেখা দেয়। পরে তাকে পুলিশ খুঁজে বের করে হেফাজতে নেয়।
ইসরায়েলি গণমাধ্যমে প্রকাশিত পদত্যাগপত্রে তিনি স্বীকার করেন, গত বছর তার দপ্তর থেকেই ওই ভিডিও মিডিয়াতে পাঠানো হয়েছিল।
পরবর্তীতে ওই ঘটনার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট পাঁচজন রিজার্ভ সেনাকে বন্দীদের প্রতি অমানবিক আচরণের অভিযোগে অভিযুক্ত করা হয়।
ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, তেল আবিবের এক আদালত তাকে বুধবার দুপুর পর্যন্ত রিমান্ডে পাঠিয়েছে।
রাষ্ট্রীয় সম্প্রচার মাধ্যম কান জানিয়েছে, তার বিরুদ্ধে প্রতারণা, দায়িত্বের অপব্যবহার, বিচারপ্রক্রিয়া বাধাগ্রস্ত করা ও গোপন তথ্য ফাঁসের অভিযোগ আনা হয়েছে।
অন্যদিকে সাবেক সামরিক প্রসিকিউটর কর্নেল মাতান সোলোমেশকেও এই ঘটনার সঙ্গে যুক্ত থাকার অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
২০২৪ সালের আগস্টে ইসরায়েলের চ্যানেল ১২ দক্ষিণাঞ্চলের সদে টেইমান সামরিক ঘাঁটির একটি ভিডিও সম্প্রচার করে। ঘাঁটিটি গাজা যুদ্ধের সময় আটক ফিলিস্তিনিদের রাখার জন্য ব্যবহৃত হচ্ছিল।
ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, সেনারা এক বন্দীর ওপর নির্মম আচরণ ও শারীরিক নির্যাতন করছে, যদিও মূল দৃশ্যটি সৈন্যদের ঢাল তোলার কারণে আংশিকভাবে আড়াল হয়ে ছিল।
ভিডিওটি প্রচারের পর আন্তর্জাতিক মহলে তীব্র প্রতিক্রিয়া ও প্রতিবাদ শুরু হয়, ইসরায়েলের ভেতরেও ক্ষোভ দেখা দেয়।
এ বছরের ফেব্রুয়ারিতে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী জানায়, ওই ঘটনার সঙ্গে জড়িত পাঁচজন রিজার্ভ সেনার বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়েছে।
অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে, তারা বন্দীর ওপর ‘নির্মম সহিংসতা চালিয়েছে, ধারালো বস্তু দিয়ে পায়ুপথের কাছে আঘাত করেছে’, যার ফলে বন্দীর পাঁজরের হাড় ভেঙে যায়, ফুসফুসে ছিদ্র হয় এবং অভ্যন্তরীণ ক্ষত সৃষ্টি হয়।
এই নির্যাতন ঘটে ২০২৪ সালের ৫ জুলাই, বন্দীর দেহ তল্লাশির সময়।
রোববার মন্ত্রিসভার বৈঠকের পর নেতানিয়াহু আবারও বলেন, ‘এই ভিডিও ফাঁস ইসরায়েলের বিরুদ্ধে সবচেয়ে গুরুতর প্রচারণা আঘাত, যা দেশের ভাবমূর্তিকে গভীরভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে।’

এনটিভি অনলাইন ডেস্ক