প্রথমবারের মতো বিদেশ সফরে যাচ্ছেন পোপ লিও চতুর্দশ
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম পোপ লিও চতুর্দশ পোপ হিসেবে তাঁর প্রথম বিদেশ সফরের জন্য তুরস্ক ও লেবাননকে বেছে নিয়েছেন। ভ্যাটিকান মঙ্গলবার (৭ অক্টোবর) জানিয়েছে, লিও ২৭ থেকে ৩০ নভেম্বর তুরস্কে ও এরপর ৩০ নভেম্বর থেকে ২ ডিসেম্বর লেবাননে সফর করবেন। খবর আলজাজিরার।
দুটি মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশ বেছে নেওয়াকে খ্রিস্টান ও মুসলিম উভয় সম্প্রদায়ের জন্য প্রতীকী এবং অর্থপূর্ণ হিসেবে দেখা হচ্ছে। এই দুটি দেশেই প্রাচীন খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের বাস ও প্রয়াত পোপ ফ্রান্সিসও তাঁর মৃত্যুর আগে দেশ দুটি পরিদর্শন করার আশা করেছিলেন।
তুরস্কে লিওর এই সফরটি প্রথম একুমেনিক্যাল কাউন্সিল, অর্থাৎ নাইসিয়া কাউন্সিলের ১৭০০তম বার্ষিকীতে অনুষ্ঠিত হবে। এই কাউন্সিলটি বর্তমানে তুরস্কের ইজনিক শহরে হয়েছিল ও খ্রিস্টান ধর্মের মূলনীতি প্রতিষ্ঠা করেছিল। এই অনুষ্ঠানে পোপ লিও বিশ্বের ২৬ কোটি অর্থোডক্স খ্রিস্টানদের আধ্যাত্মিক নেতা প্যাট্রিয়ার্ক বার্থোলোমিউয়ের সঙ্গে দেখা করবেন বলে আশা করা হচ্ছে।
বার্থোলোমিউর উপদেষ্টা রেভারেন্ড জন ক্রিসাভগিস এই সফরকে ‘গভীরভাবে প্রতীকী’ অভিহিত করে রয়টার্সকে বলেছেন, পোপ লিও বিভিন্ন ধর্মের বিশ্বে একজন খ্রিস্টান হিসেবে নিজের পরিচয় প্রকাশ ও নিশ্চিত করতে চাইছেন, যেখানে ধর্ম ও বর্ণ নির্বিশেষে সব মানুষকে পারস্পরিক বোঝাপড়ার মাধ্যমে একসঙ্গে বসবাস করার আহ্বান জানানো হয়।
অন্যদিকে লেবাননে লিও ২০২০ সালের বৈরুত বন্দর বিস্ফোরণের স্মরণে আয়োজিত অনুষ্ঠানে অংশ নেবেন, যেখানে ২০০ জন নিহত হয়েছিলেন। এই ষাট লক্ষ জনসংখ্যার দেশটি মধ্যপ্রাচ্যে খ্রিস্টানদের সংখ্যায় সবচেয়ে বেশি ও এটিই একমাত্র আরব দেশ, যেখানে একজন খ্রিস্টান রাষ্ট্রপ্রধান (রাষ্ট্রপতি জোসেফ আউন) রয়েছেন।
শান্তি ও সংঘাত নিরসনে আহ্বান
গত ৮ মে দ্য হলি সি-এর প্রধান নির্বাচিত হওয়া পোপ লিও -এর এই সফর তাঁকে মধ্যপ্রাচ্যে শান্তির জন্য আবেদন করার ও এই অঞ্চলের খ্রিস্টানদের দুর্দশার সমাধানের জন্য একটি প্ল্যাটফর্ম দেবে।
পোপ তাঁর পূর্বসূরির মতো এই অঞ্চলে শান্তি ও সংলাপের আহ্বান জানিয়েছেন এবং গাজায় ‘সন্ত্রাস, ধ্বংস ও মৃত্যু’ বন্ধ করার জন্য যুদ্ধবিরতির আহ্বান করেছেন। রোববার (৫ অক্টোবর) তিনি গাজায় চলমান আলোচনা নিয়ে আশাবাদী বক্তব্য রেখে বলেন, উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে ও দায়িত্বশীল পদে থাকা সবাইকে এই পথে নিজেদের নিবেদিত করার আহ্বান জানান।
আধুনিক পোপতন্ত্রের একটি প্রধান অংশ হলো বিদেশ ভ্রমণ, যার মাধ্যমে পোপরা স্থানীয় ক্যাথলিকদের সঙ্গে দেখা করেন, বিশ্বাস ছড়িয়ে দেন ও আন্তর্জাতিক কূটনীতি পরিচালনা করেন।

এনটিভি অনলাইন ডেস্ক