অবশিষ্ট সব ইসরায়েলি জিম্মিকে মুক্তি দিল হামাস

গাজায় দুই বছরেরও বেশি সময় ধরে বন্দি থাকার পর অবশেষে বাকি ২০ জন জীবিত ইসরায়েলি জিম্মিকে মুক্তি দিয়েছে হামাস। মুক্তির আগেই স্থানীয় সময় সোমবার (১৩ অক্টোবর) হামাস কিছু জিম্মিকে বাড়িতে ভিডিও কল করার অনুমতি দিয়েছিল। খবর দ্য গার্ডিয়ানের।
এর আগে সোমবার সকালে হামাস প্রথমে সাতজন জীবিত জিম্মিকে রেড ক্রসের কাছে হস্তান্তর করে। পরে বাকি আরও ১৩ জনকে মুক্তি দেওয়া হয়।
জিম্মিদের মুক্তি নিয়ে তেল আবিবের ‘হোস্টেজ স্কোয়ার’-এ জড়ো হওয়া প্রায় ৬৫ হাজার জনতা ও বাড়িতে কভারেজ দেখা লাখ লাখ মানুষের কাছে আবেগঘন মুহূর্তের ফুটেজ শেয়ার করেছে ইসরায়েলি সম্প্রচারমাধ্যমগুলো।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের হামলার সময় অপহৃত হওয়া ৪৮ বছর বয়সী ওমরি মিরানের পরিবার জানিয়েছে, দীর্ঘ বেদনাদায়ক ৭০০ এরও বেশি দিনের পর ওমরির প্রত্যাবর্তন। একটি সমগ্র জনগণের জন্য একটি বিজয়।
তারা ইসরায়েলের জনগণের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেছে, ওমরির প্রত্যাবর্তন এই পুনরুদ্ধার ও আমাদের জনগণের ঐক্যের সূচনা হোক।
আটক হওয়া ইসরায়েল প্রতিরক্ষা বাহিনীর সৈনিক মাতান অ্যাংরেস্টের (২২) পরিবার প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সমালোচনা করলেও, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ভূয়সী প্রশংসা করেছে। তারা বলেছে, আমাদের মাতান ঘরে ফিরে এসেছে... মার্কিন প্রেসিডেন্ট ও তার দলের প্রতি এক বিশাল, ঐতিহাসিক, চিরন্তন ধন্যবাদ।

বন্দি মুক্তি ও শান্তি আলোচনা
ইসরায়েলি মন্ত্রীরা রাতেই মুক্তি পাওয়ার জন্য নির্ধারিতি এক হাজার ৭১৮ জন ফিলিস্তিনি বন্দির তালিকা অনুমোদন করেছেন। ২৮ জন মৃত ইসরায়েলি জিম্মিকে হস্তান্তরের পর এই মুক্তি কার্যকর হওয়ার কথা রয়েছে।
সোমবার সকালে হামাস যখন প্রথম সাতজন জীবিত জিম্মিকে রেড ক্রসের কাছে ছেড়ে দেয়, তখন তেল আবিবের ‘জিম্মিকেন্দ্র স্কয়ার’-এর জনতা উচ্ছ্বসিত হয়ে ওঠে।
জিম্মি মুক্তির জন্য ব্যাপকভাবে প্রশংসিত ডোনাল্ড ট্রাম্প যখন নেসেটে (ইসরায়েলি সংসদ) ভাষণ দেওয়ার জন্য এয়ার ফোর্স ওয়ানে করে স্কোয়ারের ওপর দিয়ে যাচ্ছিলেন, তখনও জনতা উল্লাস করে ওঠে।
নেসেটে পৌঁছানোর পর ট্রাম্প বলেন, ‘আমি উদ্বিগ্ন ছিলাম, তবে এখন যুদ্ধ শেষ।’
ট্রাম্প নেসেট থেকে মিশরেও যাবেন, যেখানে তিনি আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক নেতাদের সঙ্গে একটি শান্তি শীর্ষ সম্মেলন-এর সহ-সভাপতিত্ব করবেন।

যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার ও ইইউ-এর পররাষ্ট্র বিষয়ক প্রধান কাজা ক্যালাস জিম্মি মুক্তিকে স্বাগত জানিয়েছেন। তারা যুদ্ধবিরতির জন্য ট্রাম্পের ভূমিকার প্রশংসা করেছেন।
এটি ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর সীমিত প্রত্যাহারের বিনিময়ে যুদ্ধবিরতি এবং জিম্মি ও বন্দিদের মুক্তির ২০ দফা শান্তি পরিকল্পনার প্রথম ধাপ মাত্র। হামাস ও গাজার ভবিষ্যৎ এবং গোষ্ঠীটি নিরস্ত্রীকরণ করবে কিনা, তা এখনও চূড়ান্তভাবে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি।