গোল উৎসবে শিরোপার আরও কাছে বার্সা
লা লিগায় শিরোপা জয়ের দৌড়ে রিয়াল মাদ্রিদ থেকে ঢের এগিয়ে ছিল স্প্যানিশ জায়ান্ট বার্সেলোনা। তবে শেষ ৫ ম্যাচে ২ জয়ে কিছুটা শঙ্কা উঁকি দিলেও তা উড়িয়ে বেতিসের বিপক্ষে বড় জয় তুলে নিয়েছে কাতালান ক্লাবটি। যার সুবাদে লিগ শিরোপা জয়ের পথে আরও এগিয়ে গেল জাভি হার্নান্দেজের দল।
গতকাল শনিবার (২৯ এপ্রিল) দিনগত রাতে ঘরের মাঠ ন্যু ক্যাম্পে বার্সার জয় ৪-০ গোলে।। বার্সার হয়ে রবার্তো লেভান্দোভস্কি, রাফিনিয়া ও আন্দ্রেস ক্রিস্তেনসেন করেন একটি করে গোল। অন্যটি আত্মঘাতী।
ম্যাচের শুরু থেকেই আক্রমণাত্মক ফুটবলের পসরা সাজিয়ে বেতিসকে চেপে ধরে বার্সেলোনা। ডান দিক থেকে দারুণ সব ক্রসে প্রতিপক্ষ রক্ষণে ভীতি ছড়ান রাফিনিয়া। ব্রাজিলিয়ান এই উইঙ্গারের দুর্দান্ত এক ক্রসেই ম্যাচের ১৪তম মিনিটে এগিয়ে যায় স্বাগতিকরা। দারুণ হেডে বল জালে জড়ান আন্দ্রেস ক্রিস্তেনসেন। বার্সেলোনার জার্সিতে ডেনিশ এই ডিফেন্ডারের এটাই প্রথম গোল।
শুরুতে পিছিয়ে পড়লেও জবাব দিতে ভুল করেনি বেতিস। একের পর এক আক্রমণে ব্যাতিব্যস্ত রাখে বার্সার রক্ষণভাগকে। যদিও পাচ্ছিল না কাঙ্খিত সেই গোলের দেখা। তবে ম্যাচের ৩৩তম মিনিটে বড়সড় ধাক্কা খায় বেতিস। বদলী হিসেবে নামা গনঞ্জালেস লার্ল কার্ড পেয়ে মাঠ ছাড়লে ১০ জনের দলে পরিণত হয় বেতিস।
এর আগে ম্যাচের ১২তম মিনিটে সেন্টারব্যাক লুইস ফেলিপে চোট পেয়ে মাঠ ছাড়ায় তাঁর বদলি হিসেবে নামেন গনঞ্জালেস। পরের ২১ মিনিটের মধ্যে দুটি হলুদ কার্ড দেখে মাঠ ছাড়তে হয় বেতিসের এই ডিফেন্ডারকে। অবশ্য লাল কার্ড পেয়ে মাঠ ছাড়লেও অনাকাঙ্খিত এক রেকর্ডে নাম লিখিয়েছেন গঞ্জালেস।
১৯৭২ সালে আন্তনিও হিদালগো ও ২০০৩ সালে দেপোর্তিভোর হয়ে আর্জেন্টিনার বর্তমান কোচ লিওনেল স্কালোনির পর তৃতীয় খেলোয়াড় হিসেবে লা লিগার ইতিহাসে বদলি হয়ে নেমে প্রথমার্ধেই দুটি হলুদ কার্ড দেখে মাঠ ছাড়া তৃতীয় খেলোয়াড় তিনি।
১০ জনের দলে পরিণত হওয়া বেতিসকে চেপে ধরতে ভুল করেনি বার্সা। ম্যাচের ৩৬তম মিনিটে জুলস কুন্দের ক্রসে অনায়াসে জাল গোল করেন লেভান্দোভস্কি। চলতি আসরে এটি তার ১৯তম গোল। তার এই গোলে ব্যবধান ২-০ করে বার্সা। তবে প্রথমার্ধের আগে ব্যবধান ৩-০ করার সুযোগ হাতছাড়া করেননি রাফিনিয়া।
৩৯তম মিনিটে মাঝমাঠ থেকে বল বাড়ান সার্জিও বুসকেটস । ছুটে গিয়ে বল নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আড়াআড়ি শটে জাল খুঁজে নেন রাফিনিয়া। শুরুতে অফসাইডের বাঁশি বাজান রেফারি। পরে ভিএআরের সাহায্য নিয়ে বদলান সিদ্ধান্ত। এরপর আর তেমন কোনো জোরালো আক্রমণ করতে না পারায় ৩-০ গোলের লিড নিয়েই বিরতিতে যায় বার্সা।
বিরতি থেকে ফিরেই ব্যবধান ৪-০ করার সুযোগ পান লেভান্দোভস্কি। যদিও তা কাজে লাগাতে পারেনি। ম্যাচের ৫১তম মিনিটে বেতিসের জোরালো শট সহজেই প্রতিহত করেন টার স্টেগেন। এরপর ৫৭তম মিনিটে ফের এগিয়ে যেতে পারত, তবে এবারও লেভান্দোভস্কির শট বারে লেগে ফিরে আসলে গোলের সুযোগ হাতছাড়া হয় বার্সার।
এরপর ম্যাচের ৮২তম মিনিটে ব্যবধান ৪-০ করে বার্সা। তবে এবারের গোলটি আত্নঘাতী। আনসু ফাতির বুলেট গতির শট গিদো রদ্রিগেজের পায়ে লেগে দিক পাল্টে জালে জড়ায়। কিছুই করার ছিল না বেতিস গোলরক্ষকের। নিজেদের সর্বশেষ পাঁচ ম্যাচে মাত্র ২ গোল করেছিল বার্সা। এই ম্যাচে ৪ গোলের জয়ে জাভির তাই স্বস্তি পাওয়ার কথা।
৩২ ম্যাচে ২৬ জয় ও চার ড্রয়ে ৭৯ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে বার্সেলোনা। দিনের অন্য ম্যাচে আলমেরিয়াকে ৪-২ গোলে হারানো রিয়াল মাদ্রিদ ৬৮ পয়েন্ট নিয়ে আছে দুই নম্বরে।