ইসরায়েল-গাজা পাল্টাপাল্টি রকেট হামলা অব্যাহত, ২৬ ফিলিস্তিনি ‘নিহত’
ইসরায়েল ও গাজা উপত্যকার কথিত ফিলিস্তিনি ইসলামিক জিহাদ জঙ্গিগোষ্ঠীর মধ্যে পাল্টাপাল্টি রকেট হামলা অব্যাহত রয়েছে। ফিলিস্তিনি ইসলামিক জিহাদের অন্যতম শীর্ষ কমান্ডার বাহা আবু আল-আতা গত মঙ্গলবার ইসরায়েলি হামলায় নিহত হওয়ার জবাবে অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকা থেকে ইসরায়েলের ওপর ব্যাপক রকেট হামলা শুরু হয়। পাল্টা জবাবে বিমান থেকে রকেট হামলা চালাচ্ছে ইসরায়েলও।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি জানিয়েছে, গতকাল বুধবার কিছু সময়ের জন্য বন্ধ থাকার পর আবারও পাল্টাপাল্টি রকেট হামলা শুরু হয়।
গাজা উপত্যকার হামাস পরিচালিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, বুধবার সন্ধ্যা পর্যন্ত ইসরায়েলি হামলায় তিন শিশুসহ ২৬ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে।
অন্যদিকে, গাজা থেকে রকেট হামলায় ইসরায়েলে আহত হয়েছেন ৬৩ জন। তাঁদের চিকিৎসাসেবা দেওয়া হয়েছে।
পরে বুধবার দিবাগত রাতে একাধিক দাবিসহ ইসরায়েলকে যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব দেয় ফিলিস্তিনি ইসলামিক জিহাদ। এসব দাবির মধ্যে রয়েছে, ফিলিস্তিনি ইসলামিক জিহাদের সদস্য ও গাজা সীমান্ত নিয়ে প্রতিবাদরত ফিলিস্তিনিদের হত্যা বন্ধ করা এবং গাজা উপত্যকার ওপর আরোপিত ইসরায়েলি অবরোধ শিথিল করা। তবে এখন পর্যন্ত এই যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব বিষয়ে মুখ খোলেনি ইসরায়েল।
গতকাল বুধবার ছয় ঘণ্টার জন্য হামলা বন্ধ রাখার পর স্থানীয় সময় সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে রকেট হামলা শুরু করে কথিত ফিলিস্তিনি ইসলামিক জিহাদ জঙ্গিগোষ্ঠী। ইসরায়েল সেনাবাহিনীর দাবি, গত মঙ্গলবার থেকে কমপক্ষে ৩৬০টি রকেট গাজা উপত্যকা থেকে ছোড়া হয়েছে।
ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী আইডিএফ জানিয়েছে, পাল্টা জবাবে কথিত ফিলিস্তিনি ইসলামিক জিহাদ জঙ্গিগোষ্ঠীর ওপর রকেট হামলা চালানো হয়েছে। এসব হামলার লক্ষ্যবস্তুর মধ্যে ছিল খান ইউনিসের একটি সামরিক দপ্তর ও উপত্যকার দক্ষিণে অবস্থিত একটি অস্ত্র তৈরির কারখানা।
এসব হামলায় ‘২০ জন জঙ্গি’ নিহত হয়েছে বলে দাবি করে আইডিএফ। নিহতদের বেশিরভাগই ইসলামিক জিহাদের সদস্য বলে আইডিএফের দাবি।
গতকাল মঙ্গলবার ইসরায়েল গাজা উপত্যকায় বাহা আবু আল-আতার বাড়িতে বিমান হামলা চালিয়ে তাঁকে সস্ত্রীক হত্যা করে। ওই হামলায় বাহা আবু আল-আতার দুই সন্তানসহ তিনজন আহত হয়। ইরানি সংবাদমাধ্যম পার্স টুডে ও ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়া টুডে এ খবর জানিয়েছে।
ফিলিস্তিনি ইসলামিক জিহাদের এই কমান্ডার নিহত হওয়ার পর গাজা উপত্যকা থেকে ইসরায়েলের ওপর ব্যাপকভাবে রকেট হামলা চালানো হয়।
গাজা থেকে ছোড়া এসব রকেট ইসরায়েলের বিভিন্ন ভবনে আঘাত হানে এবং কয়েকটি মহাসড়কের ওপর বিস্ফোরিত হয়। এতে যান চলাচলে বিঘ্ন সৃষ্টি হয়। এ ছাড়া রকেট হামলায় কোনো কোনো ভবনে আগুন ধরে যায়।
গত মঙ্গলবার ইসরায়েলের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম টুইটারে একটি ভিডিও ক্লিপ পোস্ট করে ক্যাপশনে লেখা হয়েছে, ‘গাজা থেকে ইসলামিক জিহাদ জঙ্গিরা সকাল থেকেই ব্যাপক হারে রকেট হামলা চালিয়েছে। এই হামলার কারণে ১০ লাখেরও বেশি ইসরায়েলিকে আশ্রয়কেন্দ্রে পাঠানো হচ্ছে। প্রচুর মানুষ আহত হয়েছেন। অনেক স্থাপনা ধ্বংস হয়ে গেছে। গাজা থেকে হওয়া এমন সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড মেনে নেওয়ার মতো নয়। ইসরায়েল তার জনগণকে সুরক্ষা দিয়ে যাবে।’