বিচার বিভাগ সংস্কারের বিরুদ্ধে ইসরায়েলের সুপ্রিম কোর্টের রায়
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্র বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু সরকারের বিচার বিভাগকে ঢেলে সাজানোর বিলটি দেশটির পার্লামেন্টে গত জুলাইয়ে পাস। এ নিয়ে দীর্ঘ সময় ধরে বিক্ষোভ করেছে দেশটির জনগণ। এবার সেই বিতর্কিত বিলের প্রধান ধারার বিরুদ্ধে রায় দিয়েছে ইসরায়েলের শীর্ষ আদালত। দেশটির স্থানীয় সময় গতকাল সোমবার (১ জানুয়ারি) সুপ্রিম কোর্ট থেকে এই রায় দেওয়া হয়। খবর এএফপির।
এক বিবৃতিতে ইসরায়েলের সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছে, ১৫ বিচারকের মধ্যে আটজনই ওই ধারার বিরুদ্ধে মত দিয়েছেন। বিচারকরা বলেছেন, ওই ধারাটি ইসরায়েলের গণতন্ত্রকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে। এএফপি বলছে, আদালতের সিদ্ধান্ত পার্লামেন্টের পাল্টে দেওয়ার ক্ষমতাকে অসাংবিধানিক বলছে বিচারকরা।
নতুন করে ক্ষমতায় এসেই বিচারব্যবস্থায় সংস্কারের উদ্যোগে নিয়েছিলেন নেতানিয়াহু সরকার। রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব ও বিচারকদের ক্ষমতার সমতা আনতেই এমনটি করা হচ্ছে বলে জানিয়েছিল নেতানিয়াহু। তবে, বিরোধীদের দাবি, বিচার বিভাগের এই পরিবর্তনের ফলে ক্ষমতাসীন সরকারের কোনো সিদ্ধান্ত বা পদক্ষেপকে বাতিল করতে পারবে না আদালত। এমনকি, প্রধানমন্ত্রীর কোনো বিষয়ে হস্তক্ষেপ করতে পারবে না। বিচারকদের সিদ্ধান্তপার্লামেন্টে পরিবর্তন করা যাবে। এতে করে আরও কর্তৃত্ববাদী সরকারের পথ খুলে যাবে।
দুর্নীতি, ঘুষ নেওয়াসহ বিভিন্ন অভিযোগ রয়েছে নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে। সেসব অভিযোগের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা চলছে। বিচার বিভাগ সংস্কার করা হলে নেতানিয়াহু পার পেয়ে যাবেন বলে ধারণা বিরোধীদের।
ইসরায়েলের কোনো লিখিত সংবিধান নেই। দেশটি পরিচালিত হয় মৌলিক আইনে। এমনকি, দেশটির পার্লামেন্ট এক কক্ষবিশিষ্ট। ইসরায়েলের কোনো সরকার মৌলিক আইনের সর্বোচ্চ সীমা অতিক্রম করে কি না তা নির্ধারণ করে বিচারকরা।
সুপ্রিম কোর্টের রায়ের নিন্দা জানিয়েছেন বিচার বিভাগ সংস্কারের মূল হোতা বিচারমন্ত্রী ইয়ারিভ লেভিন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম টেলিগ্রামে এক পোস্টে তিনি লেখেন, ‘এই রায়ের মাধ্যমে লাখ লাখ নাগরিকের কণ্ঠস্বর কেড়ে নেওয়া হলো। সব ক্ষমতা বিচারকদের হাতেই রয়ে গেল। এতে গণতান্ত্রিক শাসনের ভারসম্য থাকল না।’
এই রায়কে স্বাগত জানিয়েছেন ইসরায়েলের বিরোধী দলীয় নেতা ইয়ার লাপিদ। এক্সে (সাবেক টুইটার) এক পোস্টে তিনি লেখেন, ‘সুপ্রিম কোর্ট বিশ্বস্ততার সঙ্গে ইসরায়েলের নাগরিকদের সুরক্ষায় তার ভূমিকা পালন করেছে।’