ইরানের ওপর নতুন করে নিষেধাজ্ঞা দিতে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র, ইইউ
এ সপ্তাহে ইসরায়েলে ইরানের নজিরবিহীন ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলার পর যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) বলেছে, তারা ইরানের ওপর নতুন করে নিষেধাজ্ঞা আরোপের বিষয়টি নিয়ে চিন্তাভাবনা করছে। এ বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থমন্ত্রী জানেট ইয়েলেন বলেছেন, সামনের দিনগুলোতে ইরানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে তিনি আশা করছেন। অন্যদিকে, ইইউয়ের পররাষ্ট্রনীতি বিষয়ক প্রধান জোসেপ বোরেল বলেছেন, তাদের জোট নিষেধাজ্ঞা আরোপের বিষয়ে কাজ করছে। খবর বিবিসির।
গত অক্টোবরে ইরানের ওপর জাতিসংঘের আরোপ করা নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ পার হয়ে যাওয়ায় ইসরায়েল তার মিত্রদের প্রতি নতুন করে নিষেধাজ্ঞা আরোপের আহ্বান জানায়। ইরানের বিরুদ্ধে আরোপ করা নিষেধাজ্ঞা দেশটির পারমাণবিক কর্মসূচিকে নিয়ন্ত্রণ ও সীমিত করার জন্য দেওয়া হয়েছিল। তাছাড়া যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য এবং ইইউ আলাদাভাবে নিষেধাজ্ঞা বজায় রেখেছিল।
এদিকে, ইসরায়েলি সশস্ত্র বাহিনীর প্রধান লেফটেনেন্ট জেনারেল হারজি হালেভি সোমবার বলেন, ইরানের হামলার পাল্টা জবাব দেওয়া হবে।
গত শনিবার ইরান প্রথমবারের মতো সরাসরি ইসরায়েলে হামলা চালায়। হামলায় ইরান, ইরাক, সিরিয়া ও ইয়েমেন থেকে ৩০০টির বেশি ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন ব্যবহার করা হয়। তবে এগুলোর বেশিরভাগই প্রতিহতের দাবি করে ইসরায়েল। ইরান জানায়, গত ১ এপ্রিল সিরিয়ায় ইরানি দূতাবাসে ইসরায়েলের হামলার জবাবে এই আক্রমণ চালায় তারা। ইসরায়েলের হামলায় ইরানের দুজন জেনারেলসহ মোট ১৩ জন কর্মকর্তা নিহত হয়।
তবে ইসরায়েল পাল্টা সামরিক হামলা না চালিয়ে কূটনৈতিক তৎপরতার মাধ্যমে ইরানের ওপর চাপ প্রয়োগের নীতি গ্রহণ করেছে। এর অংশ হিসেবে ইসরায়েলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ৩০টিরও বেশি দেশকে ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচির ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের আহ্বান জানিয়েছে। ইসরায়েল ইরানের বিপ্লবি গার্ড বাহিনীকে ‘সন্ত্রাসী সংগঠন’ হিসেবে তালিকাভুক্ত করার জন্যও আবেদন জানায় মিত্র দেশগুলোর প্রতি। যুক্তরাষ্ট্র ইতোমধ্যে তা করলেও যুক্তরাজ্য এখনও সেটি করেনি।
যুক্তরাষ্ট্রের অর্থমন্ত্রী মিজ জানেট ইয়েলেন এ বিষয়ে বলেন, ‘সামনের দিনগুলোতে ইরানের বিরুদ্ধে আরও কিছু নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হবে বলে আমার পূর্ণ বিশ্বাস রয়েছে। নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে আমার আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছি। এতে ইরানের সন্ত্রাসী অর্থায়নের বিষয়টি কীভাবে বিঘ্নিত করা যায়, তা নিয়ে আলোচনা হচ্ছে।’
যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জ্যাক সুলিভান বলেন, নতুন করে নিষেজ্ঞা আরোপ করা হবে ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন কর্মসূচিকে লক্ষ্য করে। পাশাপাশি ইরানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় ও বিপ্লবী গার্ড বাহিনীও থাকবে এর আওতায়। এ ছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের মিত্র ও সহযোগী দেশগুলো আলাদাভাবে তাদের নিষেধাজ্ঞা বজায় রাখবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
অন্যদিকে, ইইউয়ের শীর্ষ কূটনীতিক জোসেপ বোরেল বলেন, কিছু সদস্য রাষ্ট্রের আহ্বানের পরিপ্রেক্ষিতে নিষেধাজ্ঞা আরোপের আওতা আরও সম্প্রসারিত হতে যাচ্ছে। তিনি জানান, ইরানের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের বিষয়ে কূটনৈতিক পর্যায়ে কাজ শুরু হয়ে গেছে।