রাফার অস্থায়ী আশ্রয় শিবিরগুলোতে ইসরায়েলি হামলা চলছেই
যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজা উপত্যকার দক্ষিণে রাফাহ শহরের কাছে আল-মাওয়াসি এলাকায় সাধারণ ফিলিস্তিনিদের ওপর ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় ২১ জন নিহত হয়েছে। তবে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী এই হামলার কথা অস্বীকার করেছে। খবর আলজাজিরার।
গাজার স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, গতকাল মঙ্গলবারের এই হামলায় নিহতদের মধ্যে ১২ জনই নারী। এ ছাড়া এই হামলায় আরও ৬৪ জন আহত হয়েছে এবং এদের মধ্যে ১০ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। ইসরায়েল এর আগে রাফার পশ্চিমে অবস্থিত আল-মাওয়াসি অঞ্চলকে মানবিক এলাকা হিসেবে চিহ্নিত করে বলেছিল, এখানকার অধিবাসীদের নিরাপত্তার স্বার্থে সরে যাওয়া উচিত।
ইসরায়েলি বাহিনী পরে এক বিবৃতিতে জানায়, আল-মাওয়াসি অঞ্চলে দেশটির সেনাবাহিনী কোনো হামলা চালায়নি।
রাফা শহরের আল আস-সুলতান এলাকার তাঁবু দিয়ে তৈরি শরণার্থী শিবিরে ইসরায়েলি হামলায় ৪৫ জন নিহত হওয়ার দুদিন পরে আল-মাওয়াসি এলাকায় এই হামলা চালানো হলো।
এদিকে, জাবালিয়া শরণার্থী শিবিরের পশ্চিমে আল-ফালুজা এলাকা থেকে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী সরিয়ে নেওয়ার খবর পাওয়া গেলেও যেসব শরণার্থী এলাকায় ফিরে আসছেন তাদের ওপর হামলার অভিযোগ পাওয়া গেছে। ইসরায়েলি বাহিনী শরণার্থীদের ওপর স্থলপথে কামানের গোলার আঘাত হানছে। পাশাপাশি আকাশপথে চলছে অবিরাম বোমাবর্ষণ।
গাজার উত্তরাঞ্চলেও গত ১৭ দিন ধরে ব্যাপক বোমা হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েলি বাহিনী। এতে ধ্বংসস্তূপের নিচ থেকে মরদেহ উদ্ধারে মেডিকেল কর্মী ও স্বেচ্ছাসেবীদের সীমাহীন কষ্ট করতে হচ্ছে। এই ধ্বংসযজ্ঞ অপরিমেয়, বিশেষ করে ইসরায়েলের স্থল বাহিনী মাঠে নামার পর তা চরম আকার ধারণ করেছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, সাধারণ ফিলিস্তিনি ও উদ্ধাকর্মীদের ওপর চলতে থাকা এই আক্রমণ লোকজনকে নিরাপদে সরিয়ে নেওয়া ও ধ্বংসলীলার সাক্ষ্যপ্রমাণ রাখার কাজটিকে অসাধ্য করে তুলছে।
ওদিকে, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মহাপরিচালক তেদরোস আধানম গেব্রেয়াসুস জানিয়েছেন, সংস্থাটি ইতোমধ্যে গাজা শহরের আল-আহলি আরব হাসপাতালে ১৫ হাজার লিটার জ্বালানি তেল, ১৪টি হাসপাতালের বিছানা, ওষুধ ও জরুরি অন্যান্য মেডিকেল সাহায্যপণ্য পাঠিয়েছে। সামজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে দেওয়া এক পোস্টে তিনি জানান, এসব সামগ্রী আপাতত দেড় হাজার মানুষের প্রয়োজন মেটাতে পারবে।
অন্যদিকে, স্পেন, আয়ারল্যান্ড ও নরওয়ে ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেওয়ার পর রাফায় ইসরায়েলি বাহিনীর স্থল হামলার পরিপ্রেক্ষিতে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের একটি জরুরি বৈঠক ডাকা হয়েছে।