নতুন রহস্যজনক রোগ ‘ডিঙ্গা ডিঙ্গা’
উগান্ডার বান্দিবুগ্যোয় সম্প্রতি নতুন এবং রহস্যজনক রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে। বিশেষত নারীদের এবং শিশুদের মধ্যে এর প্রকোপ বেশি দেখা যাচ্ছে। এরইমধ্যে তা ‘ডিঙ্গা ডিঙ্গা’ নামে পরিচিতি পেয়েছে। এই রোগটি স্থানীয়দের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি করেছে।
‘ডিঙ্গা ডিঙ্গা’ নামটি স্থানীয় ভাষা থেকে এসেছে, যার মানে ‘নাচের মতো ঝাঁকুনি’। এই রোগে আক্রান্তরা তীব্র শারীরিক কম্পন, জ্বর এবং দুর্বলতার শিকার হন। দুর্বলতা এমন থাকে যে অনেক ক্ষেত্রে হাঁটা তো দূরের কথা, স্বাভাবিক চলাফেরা করাও প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়ে।
বর্তমানে রোগটির কারণ সম্পর্কে কোনো সঠিক তথ্য পাওয়া যায়নি, তবে উগান্ডার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় উদ্ভূত রোগটি নিয়ে তদন্ত শুরু করেছে। প্রাথমিকভাবে এই রোগটি কী কারণে হচ্ছে তা পরিষ্কার না হলেও শরীরের অবশ এবং অনিয়ন্ত্রিত ঝাঁকুনির মতো লক্ষণগুলো দেখা যাচ্ছে, যা অনেকটাই ‘নাচের রোগ’-এর সঙ্গে তুলনীয় যা ১৫১৮ সালে ফ্রান্সের স্ট্রাসবুর্গ শহরে দেখা দিয়েছিল।
লক্ষণ
ডিঙ্গা ডিঙ্গা রোগের লক্ষণগুলো বেশ অস্বাভাবিক এবং উদ্বেগজনক। এতে আক্রান্তরা তীব্র শারীরিক কম্পন অনুভব করেন, যা নাচের মতো দেখায়। এ ছাড়া জ্বর এবং দুর্বলতার অনুভূতি সৃষ্টি হয় এবং অনেকেই কোমল পক্ষাঘাতের মতো অবস্থা অনুভব করেন, যার ফলে চলাফেরা করতে খুবই কষ্টকর হয়ে পড়ে। এখন পর্যন্ত বান্দিবুগ্যোতে প্রায় ৩০০টি আক্রান্তের ঘটনা নথিভুক্ত হয়েছে, তবে আশার কথা হলো, এখন পর্যন্ত কোনো মৃত্যুর খবর পাওয়া যায়নি। অধিকাংশ রোগী সঠিক চিকিৎসা পেলে এক সপ্তাহের মধ্যে সুস্থ হয়ে উঠছেন।
সংক্রমণের উৎস
ডিঙ্গা ডিঙ্গা রোগের কারণ সম্পর্কে ধারণা করা হচ্ছে যে এটি একটি ভাইরাল সংক্রমণ হতে পারে, তবে এর উৎপত্তি সম্পর্কে এখনও কোনো নিশ্চিত তথ্য পাওয়া যায়নি। বিশেষজ্ঞরা বিষয়টি নিয়ে গভীর তদন্ত চালাচ্ছেন এবং রোগী থেকে সংগ্রহ করা নমুনাগুলো স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে।
বর্তমানে যেভাবে বিস্তার রোধ
এখন পর্যন্ত ডিঙ্গা ডিঙ্গা রোগের কোনো নির্দিষ্ট প্রতিকার পাওয়া যায়নি, তবে চিকিৎসা শুরু হলে বেশিরভাগ রোগী দ্রুত সেরে উঠছেন। এই রোগের রহস্য উন্মোচন হতে কিছুটা সময় লাগবে, তবে জনগণ এবং স্বাস্থ্যকর্মীরা একসাথে কাজ করে এর প্রাদুর্ভাব নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।
এই রোগের দ্রুত বিস্তার রোধ করতে স্থানীয় স্বাস্থ্যকর্মীরা জনগণকে সচেতন করতে কাজ করছেন। বিশেষ করে, তীব্র জ্বর এবং শরীরের কম্পন দেখা দিলে দ্রুত চিকিৎসা নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। যদিও এখন পর্যন্ত রোগটি মারাত্মক হয়ে ওঠেনি, তবে সতর্কতার সাথে এর মোকাবিলা করতে হবে বলে মনে করছেন স্বাস্থ্যসেবা সংশ্লিষ্টরা।