দিল্লিতে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় মনমোহন সিংয়ের শেষকৃত্য আজ
ভারতের রাজধানী দিল্লির নিগমবোধ ঘাট শশ্মানে আজ শনিবার (২৮ ডিসেম্বর) পূর্ণ রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংয়ের শেষকৃত্য অনুষ্ঠিত হবে। দেশটির রাষ্ট্রপতি মুর্মু ও প্রধানমন্ত্রী মোদীসহ বেশ কয়েকজন রাজনীতিবিদ এ শেষকৃত্য অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন। খবর এনডিটিভির।
আজ শনিবার বেলা ১১টা ৪৫ মিনিটে ড. মনমোহন সিংয়ের শেষকৃত্য সম্পন্ন হবে। সাবেক প্রধানমন্ত্রীর মরদেহ রাজধানীর কংগ্রেস সদর দপ্তরে নেওয়া হয়েছে।
ভারত সরকার ড. মনমোহন সিংয়ের মৃত্যুতে সারা দেশে সাত দিনের রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা করেছে। এ সময়কালে ভারতজুড়ে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত থাকবে। মনমোহন সিংয়ের দল কংগ্রেসও প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপনের সব কর্মসূচি আগামী সাত দিনের জন্য বাতিল করেছে, ৩ জানুয়ারি থেকে আবারও শুরু হবে।
এদিকে, ড. মনমোহন সিংয়ের স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণের জন্য জায়গা বরাদ্দ নিয়ে কেন্দ্রীয় বিজেপি সরকার ও কংগ্রেসের মধ্যে দ্বন্দ্ব শুরু হয়েছে। কংগ্রেস তার সম্মানে একটি স্মারক তৈরি করা যেতে পারে এমন স্থানের পরিবর্তে শেষকৃত্যের জন্য নিগমবোধ ঘাট শ্মশান বরাদ্দের নিন্দা জানিয়েছে।
মনমোহন সিংয়ের শেষকৃত্য অনুষ্ঠান যেখানে হবে, সেখানে তাঁর সম্মানে একটি স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণের উপায় খুঁজে দেখার জন্য কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খারগে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির উদ্দেশে চিঠি লিখেছেন। যাইহোক, বিজেপির মুখপাত্র সি আর কেশভান কংগ্রেসের সমালোচনা করেছেন। তিনি দলটির আচরণকে ‘অস্বাভাবিক’ বলে অভিহিত করেছেন।
মোদি সরকার আরও স্পষ্ট করেছে, তারা ড. মনমোহন সিংয়ের স্মৃতিস্তম্ভের জন্য জায়গা বরাদ্দ করবে, যা তাঁর পরিবার ও মল্লিকার্জুন খারগেকে ইতোমধ্যে জানানো হয়েছে। তবে সরকার বলেছে, এখন মরদেহ সৎকার ও অন্যান্য আনুষ্ঠানিকতা শ্মশানে হতে পারে, কারণ স্মৃতিস্তম্ভের জন্য একটি ট্রাস্ট গঠন ও স্থান বরাদ্দ করতে হবে।
মনমোহন সিং গত বৃহস্পতিবার রাতে ৯২ বছর বয়সে বার্ধক্যজনিত বিভিন্ন শারীরিক জটিলতায় মারা যান। গত কয়েক মাস ধরে তার শারীরিক অবস্থা খারাপ ছিল। ‘ভারতের অর্থনৈতিক সংস্কারের স্থপতি’ হিসেবে পরিচিত ড. মনমোহন সিং ২০০৪ থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন ইউনাইটেড প্রগ্রেসিভ অ্যালায়েন্স সরকারের দুই মেয়াদে প্রধানমন্ত্রী ছিলেন।
১৯৩২ সালে জন্মগ্রহণ করেন ড. মনমোহন সিং। তিনি যুক্তরাজ্যের ক্যামব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়ন করেন। সেখানে তিনি ১৯৫৭ সালে অর্থনীতিতে প্রথম শ্রেণিতে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন। এ ছাড়া অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটির নাফিল্ড কলেজ থেকে অর্থনীতিতে ডিগ্রি লাভ করেন তিনি।
ড. মনমোহন সিং ১৯৯১ সালে রাজ্যসভার সদস্য হন। ১৯৯৮ থেকে ২০০৪ সাল পর্যন্ত বিরোধী দলীয় নেতা ছিলেন। তিনি ১৯৮৭ সালে ভারতের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মান পদ্মভূষণ লাভ করেন।
ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ, কানাডার সাবেক প্রধানমন্ত্রী স্টিফেন হারপার, মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন ও মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিমসহ কয়েকজন বিশ্ব নেতা ড. মনমোহন সিংয়ের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন।