ট্রাম্পের শান্তি প্রস্তাবে ‘শিগগিরই’ জবাব দেবে হামাস

ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকমী সংগঠন হামাস গাজায় প্রায় দুই বছর ধরে চলা যুদ্ধ বন্ধের লক্ষ্যে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রস্তাবের বিষয়ে ‘শিগগিরই’ তাদের অবস্থান ঘোষণা করবে। এই প্রস্তাব মেনে নিতে হামাসকে রাজি করানোর জন্য মিশর, কাতার ও তুরস্ক মধ্যস্থতা চালিয়ে যাচ্ছে। খবর আলজাজিরার।
হামাসের রাজনৈতিক ব্যুরোর সদস্য মোহাম্মদ নাজ্জাল বৃহস্পতিবার (২ অক্টোবর) আলজাজিরা বলেন, তারা ট্রাম্পের পরিকল্পনা নিয়ে অভ্যন্তরীণভাবে আলোচনা করছেন ও জনগণের স্বার্থ রক্ষাকারী উপায়ে শিগগিরই মতামত দেবেন।
হামাসের রাজনৈতিক ব্যুরোর সদস্য মোহাম্মদ নাজ্জাল বলেছেন, তারা তাড়াহুড়ো করে কোনো সিদ্ধান্ত নিতে রাজি নন। ট্রাম্প যদিও এই শান্তি প্রস্তাবে সম্মতি জানানোর জন্য হামাসকে মাত্র তিন থেকে চার দিন সময় দিয়েছেন, তবুও নাজ্জাল স্পষ্ট করেছেন যে, তারা এমনভাবে কাজ করছেন না যেন সময় তাদের জন্য একটি বড় চাপ বা ‘গাড়ে ঠেকে থাকা তরবারি’। অর্থাৎ, তারা সময়সীমার চাপে নয়, বরং নিজেদের বিবেচনা অনুযায়ীই সিদ্ধান্ত নেবেন।
এই পরিকল্পনায় তাৎক্ষণিক যুদ্ধবিরতি, ইসরায়েলের হাতে আটক ফিলিস্তিনি রাজনৈতিক বন্দিদের বিনিময়, গাজা থেকে ইসরায়েলিদের পর্যায়ক্রমে প্রত্যাহার, হামাসের নিরস্ত্রীকরণ ও একটি আন্তর্জাতিক সংস্থার নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের আহ্বান জানানো হয়েছে। হামাস এর আগে স্থায়ী যুদ্ধবিরতি ও গাজার উত্তরাঞ্চলে বাস্তুচ্যুত পরিবারগুলোর ঘরে ফেরার জন্য সম্পূর্ণ ইসরায়েলি প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছিল।
মিশরের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বদর আবদেলাত্তি জানিয়েছেন, কায়রো কাতার ও তুরস্কের সঙ্গে কাজ করছে যাতে হামাসকে ট্রাম্পের প্রস্তাব মেনে নিতে রাজি করানো যায়।
আবদেলাত্তি বলেন, হামাসকে নিরস্ত্র হতে হবে ও ইসরায়েলকে গাজায় আক্রমণ চালিয়ে যাওয়ার জন্য আর কোনো অজুহাত দেওয়া উচিত নয়। তিনি ইসরায়েলের এই অভিযানকে ‘প্রতিশোধের বাইরে... জাতিগত নির্মূল ও গণহত্যা’ বলে নিন্দা করেন।
তবে মিশর ও কাতার উভয়েই বলেছে, ট্রাম্পের পরিকল্পনায় শাসন ও নিরাপত্তা ব্যবস্থার মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে আরও আলোচনার প্রয়োজন। আবদেলাত্তি স্পষ্ট করে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, মিশর ফিলিস্তিনিদের জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুতি কোনো পরিস্থিতিতেই মেনে নেবে না।
হোয়াইট হাউস আশা করছে হামাস প্রস্তাবটি গ্রহণ করবে, অন্যথায় মার্কিন প্রেসিডেন্ট তাদের ওপর পরিণতি চাপিয়ে দিতে পারেন। ইইউর পররাষ্ট্র নীতি প্রধান কাজা কালাস হামাসকে প্রস্তাব অনুসরণ করার, বাকি সমস্ত জিম্মিকে মুক্তি দেওয়ার ও অস্ত্র সমর্পণ করার আহ্বান জানিয়েছেন।

অন্যদিকে, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বলেছেন, এই পরিকল্পনাটি কেবল তখনই সমর্থন করা হবে, যদি তা দ্বি-রাষ্ট্রীয় সমাধানের দিকে পরিচালিত করে।
উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবরের পর থেকে গাজায় ইসরায়েলি আক্রমণে এখন পর্যন্ত ৬৬ হাজারেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন।