রুশ ক্ষেপণাস্ত্র-ড্রোনে পশ্চিমা যন্ত্রাংশ ব্যবহারের অভিযোগ জেলেনস্কির

রাশিয়া ইউক্রেনে যেসব ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করছে সেগুলোর ভেতরে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, জার্মানি, সুইজারল্যান্ড, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, নেদারল্যান্ডস, তাইওয়ান ও চীনের তৈরি অংশ ব্যবহার করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি।
স্থানীয় সময় সোমবার (৬ অক্টােবর) এক সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম পোস্টে জেলেনস্কি বলেন, গত দুই রাতের রুশ হামলায় ব্যবহৃত শত শত অস্ত্রে “দশ হাজারেরও বেশি বিদেশি তৈরি অংশ” পাওয়া গেছে। খবর আল জাজিরার।
জেলেনস্কি জানান, “মাত্র একটি হামলায় ব্যবহৃত ড্রোনে প্রায় এক লাখ ৬৮৮টি বিদেশি যন্ত্রাংশ পাওয়া গেছে, ইস্কান্দার ক্ষেপণাস্ত্রে এক হাজার ৫০০টি, কিনজাল ক্ষেপণাস্ত্রে ১৯২টি এবং কালিবার মিসাইলে ৪০৫টি অংশ ছিল।”
জেলেনস্কির এই মন্তব্য এমন সময়ে এসেছে যখন ইউক্রেন ও তার ইউরোপীয় অংশীদাররা রাশিয়ার বিরুদ্ধে আর্থিক ও প্রযুক্তিগত নিষেধাজ্ঞা আরও কঠোর করার আহ্বান জানাচ্ছে।
ইউক্রেনীয় প্রেসিডেন্ট বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের কিছু কোম্পানি রুশ ক্ষেপণাস্ত্রের জন্য কনভার্টার ও মাইক্রোইলেকট্রনিক্স, আর যুক্তরাজ্যের কোম্পানিগুলো ড্রোন ফ্লাইট কন্ট্রোলের জন্য মাইক্রোকম্পিউটার তৈরি করছে।
তিনি জানান, “যেসব প্রতিষ্ঠান রাশিয়াকে সাহায্য করছে, তাদের বিরুদ্ধে নতুন নিষেধাজ্ঞা প্রস্তুত করছে ইউক্রেন।” ইতোমধ্যে প্রতিটি কোম্পানি ও পণ্যের বিস্তারিত তথ্য ইউক্রেনের আন্তর্জাতিক সহযোগীদের কাছে পাঠানো হয়েছে বলে জানান তিনি।
জেলেনস্কি জি-৭ দেশের নিষেধাজ্ঞা সমন্বয় কমিটির বৈঠকের আগে আরও শক্ত পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানান।
ইউক্রেনীয় গোয়েন্দা কর্মকর্তা ওলেহ আলেকসান্দ্রভ বলেন, কিয়েভের কাছে প্রমাণ আছে যে চীন রাশিয়াকে স্যাটেলাইট রিকনাইসেন্স বা গুপ্তচর স্যাটেলাইটের মাধ্যমে লক্ষ্য নির্ধারণে সহায়তা দিচ্ছে।
তবে ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ এই অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে বলেন, “রাশিয়ার নিজস্ব মহাকাশ সক্ষমতা রয়েছে— বিশেষ সামরিক অভিযানে প্রয়োজনীয় সব তথ্য আমরা নিজেরাই সংগ্রহ করতে পারি।”

অন্যদিকে, ইউরোপের বেশ কয়েকটি দেশে সাম্প্রতিক সপ্তাহে সন্দেহজনক ড্রোন দেখা গেছে, যা সামরিক ঘাঁটি ও বিমান চলাচলে বিঘ্ন সৃষ্টি করেছে।
কিছু ইউরোপীয় সরকার এর জন্য রাশিয়াকে দায়ী করে বলছে, মস্কো ন্যাটোর আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা পরীক্ষা করছে। তবে রাশিয়া এ অভিযোগও অস্বীকার করেছে, আর প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এই অভিযোগকে “হাস্যকর” বলে উড়িয়ে দিয়েছেন।
সোমবার (৬ অক্টােবর) নরওয়ের অসলো বিমানবন্দরে একটি ড্রোন শনাক্ত হওয়ার পর সাময়িকভাবে অবতরণ বন্ধ রাখা হয় বলে জানিয়েছে বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ আভিনর।